একই স্থানে দাঁড়িয়ে সূর্যোদয়-সূর্যাস্তসহ বঙ্গোপসাগরের বিভিন্ন রুপ দেখা যায় পটুয়াখালীর সমুদ্র সৈকত কুয়াকাটায়। তিনবছর আগেও বর্ষা মৌসুমে এ সমুদ্র সৈকতে পর্যটকের দেখা মিলতো না। এ সময়টাতে অলস সময় পার করতো পর্যটন খাত নির্ভর ব্যবসায়ীরা। ঋণ করে ব্যবসা টিকিয়ে রাখত তারা।
তবে সময়রে সাথে সাথে সেই প্রেক্ষাপট পরিবর্তন হয়েছে। পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের পর থেকে প্রতিদিনই নাগরিক কোলাহল থেকে মুক্তি পেতে প্রকৃতির কাছে ভিড় করছে দেশ-বিদেশের হাজার হাজার পর্যটক।
পদ্মা সেতু চালু হবার পর কুয়াকাটার পর্যটন কেন্দ্র ঘিরে গত এক বছরে কয়েক হাজার কোটি টাকার ওপর আয় করেছেন ব্যবসায়ীরা। রিসোর্ট-হোটেল, মোটেল, বিভিন্ন প্রজাতির শুটকি, পরিবহন এবং স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত পণ্যের কেনাকাটাসহ বিভিন্ন খাতে এই লেনদেন হয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এতে বিপুল পরিমাণে রাজস্ব আয় করেছে সরকার।
আগে পর্যটন মৌসুমের জন্য অপেক্ষা করতে হতো ব্যবসায়ীদের। এখন আর সেই দিন নাই। প্রতিদিনই ভিড় করছেন পর্যটকরা।
কুয়াকাটার অন্যতম হোটেল সিকদার রিসোর্টের সহকারী জেনারেল ম্যানেজার মো. আল আমিন জুমবাংলাকে জানান, ‘পদ্মা সেতু চালুর পর কুয়াকাটায় পর্যটকের সংখ্যা দিনদিন বেড়েই চলেছে। তাই আমরাও সেই অনুযায়ী সেবার মান বৃদ্ধিসহ অবকাঠামোর উন্নয়ন করেছি। আমাদের এখানে আগে ১২টি ভিলা ও ৬৮টি রুম ছিল। বর্তমানে আরও ২০টি ভিলা ও আরও ৩৪টি রুম তৈরি করা হয়েছে। এছাড়াও ১৩ তলা বিশিষ্ট সিকদার টাওয়ার থেকে সরাসরি সমুদ্র, সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত উপভোগের জন্য টাওয়ারে অত্যাধুনিক মানের সেবা নিশ্চিত করা হয়েছে।’
মা শুঁটকি হাউজের কর্ণধার হাসান মাহমুদ বলেন, ‘পদ্মা সেতু চালু হবার পর থেকে প্রতি বৃহস্পতি, শুক্র ও শনিবার কুয়াকাটায় পর্যটকদের ভিড় লেগেই থাকে। এসময় কুয়াকাটায় ৫০টি শুঁটকির দোকান থেকে অনেক পর্যটকরা পরিবারের জন্য শুঁটকি মাছ ক্রয় করে থাকেন। সিজনে দেশের বিভিন্ন এলাকায় টনকে টন শুঁটকি এখান থেকে যায়। এতে সব মিলিয়ে হাজার কোটি টাকা ব্যবসা হয়।’
কুয়াকাটা শুঁটকি ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. আলম খান জুমবাংলাকে জানান, ‘পদ্মা সেতু দক্ষিণ অঞ্চলের মানুষের বিশেষ করে পর্যটনকেন্দ্রীক ব্যবসায়ীদের জন্য আশীর্বাদ। স্থানীয়ভাবে সবকিছুর ব্যবসা বেড়েছে। পরিবহন থেকে শুরু করে অনেক ধরনের ব্যবসা আছে, যা একটার সঙ্গে আরেকটা সম্পর্কিত। পদ্মা সেতু চালু হবার পর থেকে প্রতি মাসে ৩০০ কোটি টাকার আয় করেছে ব্যবসায়ীরা।’
দেশি-বিদেশি পর্যটকদের ধরে রাখতে বিশ্বের পর্যটন সমৃদ্ধ দেশের মতো নানাবিধ সুযোগ তৈরি করবে সরকার এমটাই দাবি কুয়াকাটার ব্যবসায়ীদের।