শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:২২ পূর্বাহ্ন

থার্ড টার্মিনাল, গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং

  • আপডেট সময় বুধবার, ১৬ আগস্ট, ২০২৩

বাংলাদেশের স্বপ্নের মেগা প্রজেক্টের মধ্যে হযরত শাহ্ জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল নিঃসন্দেহে ইউনিক। চলতি বছর তা উদ্বোধন হতে পারে। থার্ড টার্মিনাল পরিচালনা ও গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং নিয়ে ইতোমধ্যে বেশ আলোচনা সমালোচনা চলছে। ঠুনকো অজুহাতে গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং জাতীয় এয়ারলাইনস বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস হতে কুক্ষিগত করার ষড়যন্ত্র দীর্ঘদিনের। তার ইতিহাস ও অপতৎপরতা অবগতির জন্য উপস্থাপন করলাম।

আমি বিমানে চাকুরিতে যোগদানের কিছুদিন পর ১৯৯৬ খৃঃ এক সহকর্মীর আহবানে বিমান শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃত্বে কেএলএম বিরোধী মিছিলে যাই, জনাব মোতাহার সাহেব ও সোলায়মান ভাইয়ের সাহসী পদক্ষেপে কেএলএম তাদের সিদ্ধান্ত পরিবর্তনে বাধ্য হয়। কথিত আছে ঐ সময়কার পররাষ্ট্র মন্ত্রী মহোদয়ের ছোটভাই এর জিএসএ এর দাপটে এয়ারলাইনস রুলস বিরোধী কেএলএম এর সিদ্ধান্তে বিমান লোকসানের মুখোমুখি হতে হয়।

সম্ভবত ২০০৬ সালে চট্টগ্রাম বিমান বন্দরের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং থাই এয়ারের কব্জায় নেয়ার অপতৎপরতা শুরু করে। আমরা এর বিরুদ্ধে চট্টলবীর মহিউদ্দিন চৌধুরীর শরণাপন্ন হলাম। ঢাকার সকল ট্রেড ইউনিয়নের সমন্বয়ে গঠিত স্টিয়ারিং কমিটি চট্টগ্রামে আসেন। থাই এয়ার ও তাদের দোসর ব্যর্থ হয়। এর কিছুদিন পূর্বে ফুকেট এয়ারের ষড়যন্ত্র রুখে দেয়া হয়।

রাশেদ খান মেনন বিমান মন্ত্রী থাকাকালীন সিলেট বিমানবন্দরে রিজেন্ট এয়ারের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং নিয়ে মেকিং গেম সিবিএ সভাপতি মশিকুর রহমান এবং সাধারণ সম্পাদক মোন্তাছার রহমান প্রতিরোধ করেন।

হজ্জ অপারেশন ‘২০২৩ সফলভাবে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস পরিচালনা করে। প্রায় এক লক্ষ বাইশ হাজার সম্মানিত হাজী সাহেবদের হ্যান্ডলিং বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস সু সম্পন্ন করেছে এ বছর দক্ষতার সাথে। যার অর্ধেক হাজী পরিবহন করেছে বিমান এবং সৌদি এয়ারলাইনস ও নাস এয়ারলাইনস বাকী অর্ধেক হাজী পরিবহন করে। হাজী পরিবহন ব্যবস্থাপনা বেশ প্রশংসিত হয়েছে। ডঃ আসিফ নজরুল তাঁর হজ্জ অভিজ্ঞতায় সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ আমাদের জন্য অবশ্যই বড় প্রাপ্তি।

বিমানের গ্রাউন্ড হ্যান্ডিলিং বিষয়ে অভিজ্ঞতা অর্ধ শতাব্দীর। বিমানের সকল কর্মী দক্ষ, প্রশিক্ষিত। থার্ড টার্মিনালের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং পরিচালনার সক্ষমতা বিমানের রয়েছে। চটকদার বিজ্ঞাপন ও বিভিন্ন প্রলোভনে দেশীয় এয়ারপোর্টের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং অন্য কাউকে প্রদান আত্মঘাতী হতে পারে।

সম্প্রতি শ্রীলঙ্কা বহিঃশক্তির ঋণের ফাঁদে পড়ে হাম্বানটোটা বন্দরের অধিকার হারিয়েছে তা আমলে নেয়া বাঞ্ছনীয়। দেশীয় ইন্দনে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা ইতোমধ্যে জনগণের বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছে।

ইতিহাস কিছু মিরাকল ঘটনার জন্ম দেয়। গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং বিরোধী ষড়যন্ত্র প্রতিরোধে চট্টগ্রামের কৃতি সন্তান সোলায়মান ভাই ( শ্রমিক নেতা) মহিউদ্দিন চৌধুরী চট্টগ্রাম ষ্টেশনের নেতা, কর্মী সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছিল। নিঃসন্দেহে সর্বস্তরের বিমান কর্মীর সমর্থন, সাহস,সহযোগিতা গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং বিরোধী আন্দোলন বেগবান এবং সফল হয়েছিল।

আশার আলো হল আজ বিমান পরিচালনা বোর্ডের সম্মানিত চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক চট্টগ্রামেরই কৃতি সন্তান। ইতোমধ্যে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মহোদয় সু স্পষ্ট ভাবে বিমানের বক্তব্য তুলে ধরেছেন। উল্লেখ্য , অতীতে গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং এর ষড়যন্ত্রকারী কেএলএম, থাই এয়ার,ফুকেট এয়ার,রিজেন্ট এয়ার বাংলাদেশের এয়ারলাইনস ব্যবসা হতে হারিয়ে গেছে।

সবার পরামর্শ, সহযোগিতা এবং মাননীয় চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মহোদয়ের নেতৃত্বে বিমান ডানা মেলবে নতুন গন্তব্যে, টিকে থাকবে প্রতিযোগিতায়, পরিচালনা করবে গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং এবং জাতীয় পতাকা উড়াবে পূর্ব হতে পশ্চিমে, উত্তর হতে দক্ষিণে।

মোঃ ইয়াসিন

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com