শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:১৯ অপরাহ্ন

কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে হঠাৎ এত জেলিফিশ ভেসে আসা কীসের ইঙ্গিত

  • আপডেট সময় শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সৈকতে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে অসংখ্য জেলিফিশ ভেসে আসছে। এসব জেলিফিশ শরীরে লাগলেই একদিকে যেমন চুলকানি হচ্ছে, তেমনি পচে গিয়ে সৈকত এলাকায় দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।

অন্যদিকে, সমুদ্রেও অস্বাভাবিক সংখ্যায় জেলিফিশ ভেসে ওঠায় মাছ ধরার জাল ফেলতে পারছেন না বলে অভিযোগ করছেন স্থানীয় জেলেরা।

“লাখ লাখ জেলিফিশ। এত জেলিফিশ আমরা আগে কখনো দেখিনি”, বিবিসি বাংলাকে বলেন স্থানীয় জেলে রহমত মিয়া।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তারাও অস্বাভাবিক হারে জেলিফিশ ভেসে আসার কথা স্বীকার করছেন।

কিন্তু কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে হঠাৎ এত জেলিফিশ ভেসে আসার কারণ কী? পরিবেশগত দিকে থেকে এটি কি খারাপ কিছুর ইঙ্গিত বহন করছে?

জেলিফিশ

ছবির উৎস,আসাদুজ্জামান

ছবির ক্যাপশান,একটি জেলিফিশের ওজন আট থেকে ১০ কেজি পর্যন্ত হতে পারে

কবে থেকে ভেসে আসছে?

গত ফেব্রুয়ারি মাসের শেষের দিকে থেকে সমুদ্র সৈকতে ঝাঁকে ঝাঁকে জেলিফিশ ভেসে আসছে বলে বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন কুয়াকাটার স্থানীয় বাসিন্দারা।

“এর আগেও কমবেশি ভেসে আসতো। তবে গত কয়েক সপ্তাহে এর সংখ্যা মাত্রাতিরিক্ত বেড়ে গেছে”, বিবিসি বাংলাকে বলেন স্থানীয় বাসিন্দা কেএম বাচ্চু।

সৈকতের বালিতে আটকে থাকা এসব জেলিফিশ মরে-পচে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।

“পচা গন্ধে সৈকতে হাঁটাচলা পর্যন্ত করা যাচ্ছে না। তাছাড়া এটি পায়ের নিচে পড়লে বা কেউ এটি হাত দিয়ে ধরলে চুলকানি হচ্ছে”, বিবিসি বাংলাকে বলেন মি. বাচ্চু।

সে কারণে স্থানীয়দের কেউ কেউ স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে মৃত জেলিফিশ গুলোকে বালির নিচে পুঁতে দিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

সৈকতে ভেসে আসা জেলিফিশ গুলোর আকার বেশ বড় এবং একেকটির ওজন কয়েক কেজি বলে জানা যাচ্ছে।

“হাফ কেজি থেকে শুরু করে তিন-চার কেজি ওজনেরও জেলিফিশ ভেসে আসছে”, বলছিলেন মি. বাচ্চু।

জেলিফিশ

ছবির উৎস,GETTY IMAGES

ছবির ক্যাপশান,বিজ্ঞানীদের ধারণা, ৫০০ কোটি বছর আগে জেলিফিশের জন্ম হয়েছিল

কুয়াকাটার আন্ধারমানিক নদের মোহনা ও এর আশপাশের প্রায় ১৮ কিলোমিটার উপকূলীয় এলাকাজুড়ে জেলিফিশ বেশি ভেসে আসছে বলে জানা যাচ্ছে।

এছাড়া সমুদ্রেও এটি ঝাঁকে ঝাঁকে ভেসে উঠছে বলে জানাচ্ছেন স্থানীয় জেলেরা।

“জাল ফেললেই দেখা যাচ্ছে তাতে শত শত জেলিফিশ আটকাচ্ছে। এগুলো জাল নষ্ট করে দিচ্ছে”, বিবিসি বাংলাকে বলেন জেলে রহমত মিয়া।

মূলত: জেলিফিশ আটকে জালের ওজন বেড়ে যাওয়ায় অনেক সময় সেটি টেনে নৌকায় তুলতে পারেন না জেলেরা।

ফলে তারা জাল কেটে ফেলতে বাধ্য হন।

এই সমস্যার কারণে জেলেদের অনেকেই সমুদ্রে জাল ফেলা বন্ধ করে দিয়েছেন বলে জানা যাচ্ছে।

“হাজার হাজার টাকার জাল যদি এর কারণে নষ্ট হয়, তাহলে চলবো কী করে? এর একটা সমাধান আমরা চাই”, বিবিসি বাংলাকে বলেন রহমত মিয়া।

জেলিফিশ

ছবির উৎস,আসাদুজ্জামান

ছবির ক্যাপশান,জেলিফিশের শরীরের প্রায় ৯৮ শতাংশই পানি দিয়ে গঠিত

জেলিফিস আসলে কী?

জেলিফিশ এক ধরনের বহুকোষী জলজ প্রাণি।

নামের সঙ্গে ‘ফিশ’ যুক্ত থাকলেও শরীরে মেরুদণ্ড বা হাড় না থাকায় একে ঠিক মাছ হিসাবে গণ্য করেন না বিজ্ঞানীরা।

বিজ্ঞানীদের ধারণা, ৫০০ কোটি বছর আগে জেলিফিশের জন্ম হয়েছিল, যা ডাইনোসর যুগেরও আগের ঘটনা।

জেলিফিশের মস্তিষ্ক, এমনকি হৃদপিণ্ডও নেই। তবে এদের শরীর জুড়ে অসংখ্য স্নায়ু ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে।

সেগুলো ব্যবহার করেই এটা বিশেষ প্রক্রিয়ায় শ্বাস নিয়ে থাকে।

জেলিফিশের শরীরের প্রায় ৯৮ শতাংশই পানি দিয়ে গঠিত। মাছের মতো আঁশ, ফুলকা বা পাখনাও থাকে না।

এর পরিবর্তে এদের শরীরে প্রায় সম্পূর্ণরূপে স্বচ্ছ ছাতার মতো দেখতে গোলাকৃতির একটি অংশ থাকে। এটি ব্যবহার করেই জেলিফিশ পানিতে ভেসে বেড়ায়।

এরা মূলত: লবণাক্ত পানিতে বাস করে। সমুদ্রের ১২০০০ ফুট গভীরেও এদের খুঁজে পাওয়া যায় বলে জানাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।

আকৃতিতে সাত ফুট থেকে শুরু করে ১২০ ফুট পর্যন্ত বড় হতে পারে। এক্ষেত্রে একেকটা জেলিফিশের ওজন আট থেকে ১০ কেজি পর্যন্ত হতে পারে।

জেলিফিশ সাধারণত মাছের ডিম, রেণুপোনা, প্লাঙ্কটন এবং অন্যান্য ক্ষুদ্র জলজ প্রাণি খেয়ে বেঁচে থাকে।

জেলিফিশ

ছবির উৎস,GETTY IMAGES

ছবির ক্যাপশান,জেলিফিশের মস্তিষ্ক এবং হৃদপিণ্ড নেই

যৌন এবং অযৌন উভয় পদ্ধতিতেই এরা বংশবিস্তার করতে পারে।

“প্রজনন ছাড়াও একটি জেলিফিশের শরীরের অঙ্গ থেকে নতুন জেলিফিশ জন্ম নিতে পারে”, বিবিসি বাংলাকে বলেন পটুয়াখালীর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম।

গবেষকরা বলছেন, পৃথিবীতে প্রায় দুই হাজার প্রজাতির জেলিফিশ রয়েছে। তবে বাংলাদেশের সমুদ্রে তিন থেকে চার প্রজাতির জেলিফিশ দেখা যায়।

এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায় ‘সাদা জেলি ফিশ’।

কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে মূলত: এই প্রজাতির জেলিফিশ ভেসে আসছে বলেই বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন মি. ইসলাম।

কক্সবাজার সমুদ্র উপকূলেও জেলিফিশ দেখা যায়। স্থানীয়ভাবে একে ডাকা হয় ‘নুইন্না’। কারণ এর শরীরের বেশিরভাগ অংশ লবণাক্ত পানি দিয়ে তৈরি।

জেলিফিশ বেশি পাওয়া যায় বলে কক্সবাজারের একটি এলাকার নামই দেওয়া হয়েছে ‘নুইন্নাছড়া’।

প্রজাতিভেদে জেলিফিশ কয়েক মাস থেকে কয়েক বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে।

চীন, জাপান, কোরিয়াসহ বেশ কিছু দেশে জেলিফিশের কয়েকটি প্রজাতি খাওয়া হয়। তবে বাংলাদেশি সাধারণত কাউকে এটি খেতে দেখা যায় না।

তবে এটি বিদেশে রপ্তানি করা যায় কী-না, সেটি নিয়ে সম্প্রতি গবেষকরা শুরু করেছেন বাংলাদেশের বিজ্ঞানীরা।

মাছ

ছবির উৎস,GETTY IMAGES

ছবির ক্যাপশান,সমুদ্রের অনেক মাছ জেলিফিশ খেয়ে থাকে

হঠাৎ এত আসার কারণ কী?

গবেষকরা বলছেন, শীতের শেষে তাপমাত্রা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে সমুদ্রের পানিতে অক্সিজেনের পরিমাণ খানিকটা বেড়ে যায়।

বিশেষ করে ফেব্রুয়ারি থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত পানিতে অক্সিজেনের পরিমাণ খুব ভালো থাকে, যা জেলিফিশের বংশবিস্তারের জন্য উপযুক্ত সময়।

“এটিই মূলত: জেলিফিশের প্রজনন মৌসুম”, বিবিসি বাংলাকে বলেন পটুয়াখালীর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম।

সমুদ্রের তাপমাত্রা ও লবণাক্ততা অনুকূলে থাকায় এই সময়ে জেলিফিশের বংশবিস্তার বেড়ে যায়।

মাছের ডিম, প্লাঙ্কটন ও অন্যান্য ক্ষুদ্র জলজ প্রাণি খেয়ে এরা দ্রুতই বেড়ে ওঠে।

“যেহেতু এরা স্রোতের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করতে পারেনা, তাই স্রোত বা জোয়ারের পানিতে ভেসে প্রায়ই তীরে চলে আসে এবং বালিতে আটকে যায়”, বিবিবি বাংলাকে বলেন মি. ইসলাম।

তিনি আরও বলেন, প্রজনন মৌসুম হওয়ায় প্রতিবছর ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময় থেকে উপকূলীয় এলাকায় জেলিফিশের আধিক্য বেশ বেড়ে যায়।

জেলেরা

ছবির উৎস,GETTY IMAGES

ছবির ক্যাপশান,জেলিফিশ বেড়ে যাওয়ায় সমুদ্রে জাল ফেলা বন্ধ রেখেছেন জেলেদের অনেকে

তবে এবার যে হারে জেলিফিশ ভেসে আসছে বা জেলেদের জালে আটকাচ্ছে, সেটি বেশ চিন্তায় ফেলে দিয়েছে গবেষকদের।

“এবারের ঘটনাটি কিছুটা অস্বাভাবিক বলেই মনে হচ্ছে”, বিবিসি বাংলাকে বলেন মৎস্য কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম।

তিনি আরও বলেন, “অবস্থা দেখে আমরা ধারণা করছি যে, সামুদ্রিক ইকোসিস্টেমে ভারসাম্যহীনতা দেখা দিয়েছে।”

কচ্ছপ এবং সামুদ্রিক অনেক মাছ ও প্রাণী জেলিফিশকে খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে থাকে। গবেষকদের ধারণা এগুলোর সংখ্যা কমে যাওয়ায় সমুদ্রে বাস্তুসংস্থানে এই ভারসাম্যহীনতা দেখা দিয়েছে।

“ওভার ফিশিং (অতিমাত্রায় মাছ ধরা) এর একটি কারণ হতে পারে। এছাড়া কচ্ছপের মতো যেসব প্রাণি জেলিফিশ খায়, সেগুলোও হয়তো কমে গেছে”, বিবিসি বাংলাকে বলেন ওয়ার্ল্ডফিশের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ইকোফিশের গবেষক সাগরিকা স্মৃতি।

কচ্ছপ

ছবির উৎস,URIEL SINAI

ছবির ক্যাপশান,সমুদ্রের কচ্ছপ বালিতে ডিম পাড়ে

সমুদ্রে কচ্ছপ কমছে

গবেষকরা বলছেন, সমুদ্রে জেলিফিশের প্রধান খাদক হচ্ছে কচ্ছপ।

সমুদ্রে জেলিফিশের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে এরাই এতদিন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে বলেও জানাচ্ছেন তারা।

“কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে সামুদ্রিক কচ্ছপের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে কমে গেছে”, বিবিসি বাংলাকে বলেন ইকোফিশের গবেষক সাগরিকা স্মৃতি।

যদিও বাংলাদেশের সমুদ্রে কচ্ছপের সংখ্যার বিষয়ে নির্দিষ্ট কোনো তথ্য গবেষকদের কাছে নেই। তারপরও কচ্ছপের সহজলভ্যতা, আবাসভূমিসহ বেশ কয়েকটি বিষয়ের ওপর চালানো পর্যবেক্ষণ থেকেই তারা বুঝতে পারছেন যে কচ্ছপের সংখ্যা কমছে।

“জেলিফিশের সংখ্যা এভাবে বেড়ে যাওয়াও একই ইঙ্গিত দিচ্ছে”, বলেন মিজ স্মৃতি।

কচ্ছপ শিকার, এর ডিম সংগ্রহ, প্লাস্টিক দূষণ, জেলেদের অসচেতনতাসহ নানান কারণে সমুদ্রে কচ্ছপের সংখ্যা কমে যাচ্ছে বলে জানাচ্ছেন গবেষকরা।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক পরিবেশবাদী সংগঠন ক্লিন ওয়াটার বলছে, প্লাস্টিক দূষণের কারণে কমপক্ষে আড়াইশ প্রজাতির মাছ ও অন্যান্য সামুদ্রিক প্রাণি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

এর মধ্যে রয়েছে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সামুদ্রিক কচ্ছপ।

“শুধুমাত্র কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতেই প্রতিবছর গড়ে অন্তত: ২০টি সামুদ্রিক কচ্ছপের মরদেহ ভেসে আসছে”, বিবিসি বাংলাকে বলেন মিজ স্মৃতি।

মূলত: প্লাস্টিকের কণা খাওয়া এবং শরীরে আটকে যাওয়ার কারণে অনেক কচ্ছপ মারা যাচ্ছে।

জেলিফিশ

ছবির উৎস,GETTY IMAGES

ছবির ক্যাপশান,সামুদ্রিক কচ্ছপের প্রধান খাদ্য এসব জেলিফিশ

এছাড়া জেলেদের জালে বেঁধেও অনেক সময় কচ্ছপের মৃত্যু হচ্ছে বলে জানান গবেষকরা।

এর বাইরে কেউ কেউ কচ্ছপ শিকার করে খাচ্ছেন, এমনকি হত্যা করে মাংস ও খোলস বিক্রি করছেন। আবার কচ্ছপের ডিমও সংগ্রহ করে খাচ্ছেন অনেকে।

সব মিলিয়ে প্রাণিটি দিন দিন অস্তিত্বের সংকটে পড়ে যাচ্ছে বলে জানাচ্ছেন গবেষকরা।

“এগুলো অস্বীকার করার উপায় নেই। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাথে মিলে আমরা সেগুলো বন্ধ করা এবং মানুষকে সচেতন করার চেষ্টা করছি”, বিবিসি বাংলাকে বলেন পটুয়াখালী জেলার মৎস্য কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম।

জেলিফিস কী বিষাক্ত?

গবেষকরা বলছেন, হাজারো প্রজাতির জেলিফিশের মধ্যে কয়েকটি প্রজাতি রয়েছে, যেগুলো কিছুটা বিষাক্ত।

“তবে সেই বিষ মৃত্য ঘটানোর মতো নয়”, বিবিসি বাংলাকে বলেন পটুয়াখালী জেলার মৎস্য কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম।

“বিষাক্ত জেলিফিশের সংস্পর্শে আসলে বড়জোর চুলকানি, লাল বার্ন হয়ে যাওয়া বা চোখে লাগলে ক্ষতি হতে পারে”, বলেন মি. ইসলাম।

তিনি বলছেন, বাংলাদেশে বিষাক্ত জেলিফিশ খুব একটা দেখা যায় না।

কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে যে সাদা জেলিফিশ দেখা যাচ্ছে, সেটিও নির্বিষ।

“তারপরও এটি শরীরে লাগলে কিছুটা চুলকানির মতো সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে”, বলেন মি. ইসলাম।

এতে ঘাবড়ানোর কিছু না থাকলেও জেলিফিশের সংস্পর্শে না যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

জেলিফিশ

ছবির উৎস,আসাদুজ্জামান

ছবির ক্যাপশান,বড় ঢেউ বা জোয়ারে ভেসে এসে সৈকতের বালিতে আটকে গেছে এসব জেলিফিশ

এই অবস্থা কতদিন থাকবে?

কুয়াকাটার সমুদ্র উপকূলে জেলিফিশকে কেন্দ্র করে যে সমস্যা তৈরি হয়েছে, সেটি বেশিদিন স্থায়ী হবে না বলে জানিয়েছেন গবেষকরা।

“এটি একটি সাময়িক সমস্যা। সমুদ্রের পানিতে তাপমাত্রা কমে গেলেই এটি চলে যাবে”, বিবিসি বাংলাকে বলেন মৎস্য কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম।

বৃষ্টিপাত হলেই সমুদ্রের তাপমাত্রা কমে আসবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

তবে প্রাকৃতিক ভারসাম্য নিশ্চিত করতে না পারলে দীর্ঘমেয়াদে এটি বড় ধরনের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে বলেও মনে করছেন গবেষকদের কেউ কেউ।

“সমুদ্রে এভাবে জেলিফিশ বাড়তে থাকলে তারা মাছের ডিম ও পোনা খেয়ে শেষ করে ফেলবে, যা জেলেসহ আমাদের সবার উপরে ভয়ঙ্কর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে”, বিবিসি বাংলাকে বলেন ইকোফিশের গবেষক সাগরিকা স্মৃতি।

কচ্ছপ ও সামুদ্রিক প্রাণির মধ্যে যেগুলো, জেলিফিশ খায়, সেগুলো সংরক্ষণ করা জরুরি বলে মনে করেন তিনি।

“এগুলো রক্ষায় নজরদারি বাড়ানোর পাশাপাশি জেলেসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে এগুলোর বিষয়ে সচেতন করা উচিৎ”, বলেন মিজ স্মৃতি।

অতিরিক্ত মাছ ধরা ঠেকাতে প্রজনন মৌসুমে বাংলাদেশের নদী ও সাগরে একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য মাছ ধরা নিষেধ করে থাকে সরকার।

সেই ধারাবাহিকতায়, আগামী ২০শে মে থেকে ২৩শে জুলাই পর্যন্ত সাগরে মাছ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।

“এই ধরনের কর্মসূচি অব্যাহত থাকলে সাগরের জীব বৈচিত্র্য বৃদ্ধি পাবে এবং প্রাকৃতিক ভারসাম্য ফিরে আসবে”, বিবিসি বাংলাকে বলেন মৎস্য কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম।

বিবিসি বাংলা

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com