শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:০২ পূর্বাহ্ন

কীভাবে ‘যৌনতার রাজধানী’ হয়ে উঠলো থাইল্যান্ডের পাতায়া

  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ৯ মার্চ, ২০২৩
Bangkok, Thailand - February 12, 2016: Young women in Soi Cowboy red light district in Bangkok Thailand. This small street in Sukhumvit is full of gogo bars and nightclubs. Beautiful girls stand on the street and try to convince clients to enter the bars they work for. Inside girls dance in bikini or nude. They get a commission for every drink they get invited. Most of them will agree to a short sexual relation for a fee.

যৌনতার জন্য বিশ্বজুড়েই পরিচিতি আছে থাইল্যান্ডের পাতায়া শহর। উদ্দামতার লীলাভূমি যেন পাতায়ার সমুদ্র সৈকত! চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে এই শহরটি নিয়ে একটি প্রতিবেদন করেছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য মিরর। সেই প্রতিবেদনে ‘বিশ্বের যৌনতার রাজধানী’ হিসেবে আখ্যা দেয়া হয়েছে পাতায়া শহরকে। এই সংবাদে ক্ষেপেছেন থাই প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুথ চান-ওচা। ব্রিটিশ পত্রিকার তথ্যকে বানোয়াট বলে মন্তব্য করেছে থাইল্যান্ডের পুলিশ।

কিন্তু তার ঠিক উল্টো কথা বলছেন স্থানীয় মানবাধিকার কর্মীরা। তারা জানিয়েছেন, পাতায়ায় যৌনকর্মীর প্রকৃত সংখ্যা ২৭ হাজারের চেয়ে অনেক বেশি। চোখ বন্ধ রেখে বাস্তবকে অস্বীকার এবং যৌনকর্মীদের দমনপীড়নের মাধ্যমে এর কোনো সমাধান হবে না বলেও মনে করেন মানবাধিকার কর্মীরা। তাদের মতে, যৌনকর্মীদের স্বীকৃতি ও অধিকার দেয়ার কথা ভাবতে হবে।

স্রেফ একটি জেলেপল্লি থেকে পাতায়া কীভাবে বিশ্রাম, বিনোদন এবং ‘বিশ্বের যৌনতার রাজধানী’ হয়ে উঠল- এ নিয়ে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি থাইল্যান্ডের গণমাধ্যম ব্যাংকক পোস্ট একটি নিবন্ধ প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়, একসময় পাতায়া নামের জায়গাটি ছিল থাইল্যান্ড উপসাগরের একটি জেলেপল্লি। সাগরে অল্প কয়েকটি নৌকা এবং তীরে গ্রামবাসীর থাকার জন্য কিছু কুঁড়েঘর বাদে সেখানে আর কিছুই ছিল না।

১৯৫৯ সালের ২৯ জুন নাখন রাচাসিমার সামরিক ঘাঁটিতে থাকা ৫০০ সদস্যের একটি মার্কিন সেনাদল এক সপ্তাহের বিশ্রাম ও বিনোদনের জন্য পাতায়ায় যায়। ওই সেনারা সৈকতের দক্ষিণাঞ্চলের প্রান্তে স্থানীয় লোকদের কাছ থেকে কয়েকটি বাড়ি ভাড়া নেয়। তখন থেকেই ঘুমন্ত জেলেপল্লির জন্য প্যান্ডোরার বাক্স খুলে যায়। মার্কিন সেনাদের মধ্যে পাতায়ার সৌন্দর্যের খবর ছড়িয়ে পড়ে এবং এটি কংক্রিটের নগর ব্যাংককের পরিবর্তে জনপ্রিয় গন্তব্যে পরিণত হয়। ভূতাত্ত্বিক তথ্যব্যবস্থায় (জিআইএস) বিনোদনের জন্য সেরা সৈকত হিসেবে মানচিত্রে স্থান পায় পাতায়া।

বর্তমান ইউ-তাপাও বিমানবন্দর নামে পরিচিত পাতায়ার পাশের বান সাত্তাহি বিমানঘাঁটিতে যখন বিপুল পরিমাণে সেনারা আসতে শুরু করে, তখন থেকেই বাড়তে থাকে পাতায়ার জাঁকজমক। এর প্রায় অর্ধশতাব্দী পর ভিয়েতনাম যুদ্ধ থেকে নিষ্কৃতি পাওয়া সেনা থেকে শুরু করে যৌন পর্যটক এবং থাইল্যান্ডের রেড লাইট অঞ্চলের বাসিন্দাদের গন্তব্যে পরিণত হয় পাতায়া।

ভিয়েতনাম যুদ্ধ চলাকালে থাইল্যান্ডে বিশ্রাম ও বিনোদনের সুবিধা সৃষ্টি করতে থাইল্যান্ড ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ১৯৬৪ সালে পাতায়া সৈকতের অদূরে প্রথম মার্কিন ঘাঁটি ইউ-তাপাওয়ে পৌঁছায় জিআইএস। তখন থেকে ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত প্রতিবছর প্রায় সাত লাখ আন্তর্জাতিক সেনাকে এক সপ্তাহের বিশ্রাম ও বিনোদনের জন্য থাইল্যান্ডে পাঠানো হয়।

থাইল্যান্ডের সমাজে জীবিকার জন্য দেহব্যবসা নতুন কিছু নয়। ১৬৮০ সালে আয়ুথাইয়া যুগ থেকেই সেখানে পতিতাবৃত্তি বৈধ। এমনকি সেখানে সরকার পরিচালিত যৌনপল্লি ছিল। তবে এই দেহব্যবসা কেবল ব্যাংকক অঞ্চলেই সীমাবদ্ধ ছিল। তবে যখন থেকে আন্তর্জাতিক সেনারা আসতে শুরু করেন, তখন থেকেই যৌনকর্মীদের নতুন গন্তব্যে পরিণত হয় পাতায়া। যৌনকর্মীরা নতুন খদ্দেরদের সঙ্গে মানিয়ে নিতে শুরু করেন এবং তারা মুদ্রার বিনিময় হার সম্পর্কে জানতে পারেন। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের রক অ্যান্ড রোল ধারার সংগীত ও অশ্লীল শব্দের সঙ্গে পরিচিত হন। যুদ্ধে যাওয়ার সপ্তাহ খানেক আগে বিনোদনের জন্য ছুটে আসা তরুণ সেনাদের মনোরঞ্জন করতে থাকেন যৌনকর্মীরা।
১৯৭৫ সালে উত্তর ভিয়েতনামিরা যখন যুদ্ধে জিতে যায়, তখন পাতায়াতে সাময়িক মন্দাভাব চলে আসে। সব সেনা সেখান থেকে চলে যায়। অনেক বার ও ক্লাব বন্ধ হয়ে যায়। অনেক যৌনকর্মী আগাম অবসরে যেতে বাধ্য হন। তবে ধীরে ধীরে কাছের এবং দূরের দর্শনার্থীদের স্রোত আসা শুরু হলে আবার উজ্জীবিত হয় থাইল্যান্ড। ১৯৭৮ সালে পাতায়া শহরের নামকরণ করা হয়। বৃহত্তর পরিসরে শহরটিতে পর্যটকদের জন্য বাজার তৈরি হতে থাকে।
ভিয়েতনাম যুদ্ধের পর অনেক সেনা কর্মকর্তা পাতায়াতেই থেকে যান। তারা থাই নারীদের বিয়ে করেন এবং বার ও রেস্টুরেন্টের ব্যবসা চালু করেন। আজকের দিনেও প্রতিবছর কয়েক লাখ সেনা কর্মকর্তা কোবরা গোল্ড নামে পরিচিত থাই-মার্কিন সামরিক মহড়ায় অংশ নিতে পাতায়া আসেন।

নিঃসঙ্গ বয়স্ক মার্কিন নাগরিক ম্যাট। ক্যালিফোর্নিয়ায় বাড়ি ফিরে গিয়ে বিয়ে করার জন্য সুন্দরী কোনো তরুণীকে খুঁজে নেয়া তার পক্ষে অসম্ভব। তবে ৬০ বছর বয়সী ম্যাট তার সঙ্গী খুঁজে পাওয়ার আশা ছেড়ে দেননি। পশ্চিমা নারী বিয়ে করার প্রচেষ্টা তিন দফায় ব্যর্থ হওয়ার পর তিনি শ্বেতাঙ্গ মেয়ে খোঁজা বন্ধ করে দেন। কারণ তিনি মনে করেন, তারা ভালোবাসার যোগ্য নন। তিনি এশীয় মেয়ে খোঁজা শুরু করেন। ম্যাট বুঝতে পারেন, তার স্বপ্নপূরণের জন্য পাতায়াই একমাত্র জায়গা।

১০ বছর আগে ম্যাট পাতায়ায় আসেন। ম্যাট বলেন, ‘এখানে প্রতিদিনই ভালোবাসা পাওয়া যায়। আমি সাধারণত বছরে তিন মাসের জন্য এখানে আসি। আমি আমার কেনা সস্তা অ্যাপার্টমেন্টে থাকি। আমি আমার ভালোবাসার নীড়ে কতজনকে এনেছি, তা আপনাকে বলতে পারব না।’ তিনি আরো বলেন, ‘ভালো লোকেরা স্বর্গে যায়, আর খারাপ লোকেরা পাতায়ায়।’ ম্যাটের এ অভিব্যক্তি পাতায়া শহরের স্লোগান বলেই প্রতীয়মান হয়। এই স্লোগানের মধ্যে বিদ্রূপের গন্ধ থাকলেও পাতায়ায় আসা অনেক পর্যটকের মানসিকতা যে এটাই, তা নিশ্চিতভাবেই বলা যায়।

২৮ বছর বয়সী যৌনকর্মী সুপিন। বয়স যখন ২১, তখন এক বন্ধুর পরামর্শে তিনি এখানে আসেন উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সুরিন প্রদেশ থেকে। বাচ্চাদের স্কুলে পাঠানোর অর্থ জোগাড় করতে সুপিন বাড়ি ত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নেন। পাতায়া আসার এক বছর আগে রেস্টুরেন্টে খাবার পরিবেশকের কাজ করতে তিনি প্রথম ব্যাংককে গিয়েছিলেন। সেখানে তিনি দৈনিক ২৮০ বাথ (থাই মুদ্রা) পেতেন। এর সঙ্গে টিপস থাকত। ওই অর্থ পুরো পরিবারের ভরণপোষণের জন্য যথেষ্ট ছিল না। কেননা, দুই সন্তান রেখে তার স্বামী চলে যাওয়ার পর সব দায়দায়িত্ব তার ঘাড়েই এসে পড়ে। সুপিনকে তার এক বন্ধু পরামর্শ দিয়ে বলেন, পাতায়াতে রোজগারপাতি বেশি। সেখানে কী কাজ করে বাড়তি আয় হবে, সে ব্যাপারে সুপিন সচেতন ছিলেন। তিনি প্রয়োজনীয় অর্থ পেতে যেকোনো কিছুই করতে প্রস্তুত ছিলেন।

৪৮ বছর বয়সী মানবাধিকারকর্মী ও জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব থানাদ্দা নিং সোয়াংনেতর যৌনকর্মী হিসেবে কাজ করার অভিজ্ঞতা নিয়ে বই লিখে পুরস্কার পেয়েছেন। আর্থিক সংকটে পড়ে তিনি কীভাবে এই পেশা বেছে নিতে বাধ্য হন, বইটিতে তার বর্ণনা দিয়েছেন।

নিং বলেন, ‘কম বয়সে অরক্ষিত শারীরিক সম্পর্কের কারণে আমি একটি বাচ্চার জন্ম দিই। বাচ্চাটিকে গড়ে তুলতে আমার অনেক টাকার দরকার হয়ে পড়ে।…এক বন্ধুর পরামর্শে পাতায়ায় এসে বারে কাজ শুরু করি। সেখানে পানীয় পরিবেশন করে মাসে আমি পাঁচ হাজার বাথ পেতাম। পরে আমি যৌনকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করি।’ এই যৌনকর্মী আরো বলেন, এটা এমন এক পেশা, যা কারও কাছে গর্ব করে বলা যায় না। তাই তিনি বহুবার এই কাজ ছেড়ে দেয়ার চিন্তা করেছেন। তবে দিনের শেষে এ পেশাই তার পরিবারের জন্য অর্থ এনে দিয়েছে। তিনি মাঝেমধ্যে অন্য কাজ করেছেন। তবে যৌনকর্মী হিসেবে তিনি যা আয় করতেন, অন্য কাজে তার থেকে অনেক কম আয় হতো।

মিররের নিবন্ধে পাতায়াকে ‘বিশ্বের যৌনতার রাজধানী’ বলে বর্ণনার পর থাইল্যান্ডের সরকারি কর্মকর্তারা, বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুথ খুবই ক্ষিপ্ত হয়েছেন। তিনি পাতায়ায় পতিতাবৃত্তি ও অবৈধ ব্যবসা বন্ধের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন। এসব কর্মকাণ্ড থাইল্যান্ডের জন্য বিব্রতকর বলে মনে করছেন তিনি।

ওই প্রতিবেদন প্রকাশের পর গত ২১ ফেব্রুয়ারি পাতায়ার পৌর কর্মকর্তারা, পুলিশের স্থানীয় ইউনিট এবং চন বুরির প্রশাসনিক ইউনিট ‘পাতায়া হ্যাপি জোন’ নামের নতুন একটি নীতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন। পাতায়ার জনপ্রিয় এলাকাগুলোকে নিয়ন্ত্রিত এবং অপরাধমুক্ত রাখার উদ্দেশ্যে ওই নীতি শিগগিরই বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

পাতায়া পুলিশের সুপারিনটেনডেন্ট আপিচাই ক্রোবপেচ স্পেকট্রামকে বলেন, পাতায়া যৌন ব্যবসার কেন্দ্রবিন্দু নয়। ব্রিটিশ দৈনিকের প্রতিবেদনকে তিনি বানোয়াট বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘পাতায়ায় যৌনপল্লির মতো কিছু নেই। পাতায়ায় ২৭ হাজার যৌনকর্মী রয়েছে, এমন তথ্য তারা কোথায় পেলেন? এই ইস্যুটি নিয়ন্ত্রণে রাখতে আমরা কঠোর পরিশ্রম করছি। রাস্তায় যাতে কোনো যৌনকর্মী না দাঁড়ায়, সেটা নিশ্চিত করতে আমরা প্রতি রাতে টহল দিচ্ছি। সব বার যাতে আইন অনুযায়ী চলে, তা নিশ্চিত করেছি এবং বিয়ার বারসহ বিনোদনের প্রতিটি জায়গায় আমরা নজর রাখছি।’

ওই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘থাই মেয়েরা যদি কোনো বিদেশির সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন, তবে সেটা তাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার। পরস্পরকে পছন্দ করে বন্ধ কক্ষে তারা কিছু করলে তাতে আমি ভুল কিছু দেখি না। এই এলাকায় দায়িত্বে থাকা পুলিশপ্রধান হিসেবে আমি নিশ্চয়তা দিতে পারি যে পাতায়া এখনো পরিদর্শনের জন্য নিরাপদ ও সুন্দর জায়গা।’

সার্ভিস ওয়ার্কার্স আইএন গ্রুপ ফাউন্ডেশনের পরিচালক ও সমাজকর্মী সুরাং জানিয়াম মত প্রকাশ করে বলেছেন, ‘থাইল্যান্ডে যৌনপল্লির অস্তিত্ব নেই, এমন কথা বলে আমাদের নিজেদের বোকা বানানো উচিত নয়। বরং যৌনকর্মীদের সমাজের অংশ হিসেবে চিন্তা করতে হবে। মানুষ হিসেবে তাদের সম্মানের জায়গা নিশ্চিত করতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা চোখ বন্ধ করে রাখতে পারি না এবং বলতে পারি না যে থাইল্যান্ডে যৌনকর্মী নেই। ডেইলি মিররে ২৭ হাজার যৌনকর্মীর যে সংখ্যা প্রকাশ করা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ ভুল। এখানে যৌনকর্মীর সংখ্যা এত কম নয়। এর চেয়ে অনেক বেশি।’

সুরাং জানিয়াম বলেন, ‘যৌনকর্মীদের প্রকৃত সংখ্যা কত, এটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়। তাদের জীবনমানের উন্নয়নের কথা আমাদের চিন্তা করতে হবে। যৌনপল্লিতে অভিযান চালিয়ে এবং যৌনকর্মীদের গ্রেপ্তার করে সমস্যার সমাধান হবে না। এতে যৌনকর্মীরা কাজ হারাবেন এবং তাদের উপার্জন বন্ধ হয়ে যাবে। যৌনকর্মীরা টাকার জন্য নিজেদের বিক্রি করেন, এটা প্রকৃত ইস্যু নয়। প্রকৃত ইস্যু হলো ভয়ানক অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নয়নে সরকার কিছু করতে পারছে না; যে অর্থনৈতিক অবস্থার কারণে অনেক মানুষ এই জীর্ণ ব্যবসায় নামতে বাধ্য হচ্ছেন।’

এমপাওয়ার ফাউন্ডেশনের পরিচালক চান্তাউইপা আপিসুক মনে করেন, যৌনকর্মীদের দমনপীড়ন এবং যৌন ব্যবসা নিষিদ্ধ করার পরিবর্তে সরকারের উচিত যৌনকর্মীদের কাছে যাওয়া এবং তারা কী চায় তা শোনা। যদিও থাইল্যান্ডে পতিতাবৃত্তি কখনোই শেষ না হওয়ার মতো একটি ইস্যু।

আপিসুক উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, পতিতাবৃত্তিকে বৈধতা দেয়ার ঘটনা তার জীবদ্দশায় না-ও ঘটতে পারে। কেননা এর পেছনে আরও বড় কারণ আছে। তিনি বলেন, ‘থাইল্যান্ডে পতিতাবৃত্তির সঙ্গে ঘুষের সম্পর্ক রয়েছে। প্রত্যেক যৌনপল্লির মালিক তাদের ব্যবসা চালানোর জন্য পুলিশকে ঘুষ দিয়ে থাকেন। পতিতাবৃত্তি বৈধ হলে পুলিশ কীভাবে অর্থ কামাবে? ভুলে গেলে চলবে না যে এই ধরনের ব্যবসা আমাদের আয়ের একটি বড় উৎস।’

পতিতাবৃত্তিকে বৈধতা দেয়ার বিষয়ে একমত পোষণ করেন থানাদ্দা নিং সোয়াংনেতর। তবে এ ব্যাপারে তার প্রধান উদ্বেগ হলো, বৈধতা দেয়া হলে যৌনকর্মীরা চিহ্নিত হয়ে যাবেন, সেটি তাদের আবার লজ্জাজনক পরিস্থিতিতে ফেলে দেবে। তিনি আরো বলেন, আইনগতভাবে যৌনকর্মীদের নিবন্ধিত করার মানে হলো জীবিকার জন্য তাদের দেহ বিক্রি করাটাকে স্বীকার করে নেয়া। থাইল্যান্ডের অনেকেই এই কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকলেও একে খারাপ চোখে দেখা হয়। তিনি বলেন, ‘এই যৌন ব্যবসায় আমার অনেক বন্ধু রয়েছে। তারা নির্যাতিত হন, আহত হন। নির্যাতনে অনেকে মারাও যান। আমরা এতটাই ভীত যে পুলিশের কাছে অভিযোগ দিতে পারি না। কেননা আমরা যা করি তা বৈধ নয়। একই আইন দিয়ে আমাদের সুরক্ষা দেয়া উচিত, আমরা কাজ করি সেটা বিষয় নয়।’

যৌনকর্মী এবং স্থানীয়রা মনে করেন, সবচেয়ে ভালো সমাধান পতিতাবৃত্তিতে জড়িতদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা। কারণ তারা কেউ ইচ্ছে করে এই কাজে আসেন না। বিভিন্ন সংকটের বেড়াজালে পড়ে বাধ্য হয়েই দেহ ব্যবসায় নামেন। তাদের এই পেশা থেকে অন্য কোনো পেশায় স্থানান্তরিত করতে পারলেই বরং সবচেয়ে ভালো সমাধানটা আসবে।

গো নিউজ২৪

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com