আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে বিয়ের হলগুলোয় গান-বাজনার ওপর নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করতে যাচ্ছে তালেবান সরকার। তাদের বক্তব্য, এ ধরনের উদ্যাপন ইসলামি বিধিবিধান বিরোধী।
গত রোববার আফগানিস্তানের পাপ-পুণ্য মন্ত্রণালয়ের এক অনলাইন বিবৃতিতে বলা হয়, বিয়ের অনুষ্ঠানে আর গান-বাজনা করা যাবে না। অনুষ্ঠানস্থল মালিকদেরকে ইতিমধ্যে সরকারের এই নির্দেশ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। জার্মান বার্তা সংস্থা ডিপিএ খবরটি জানিয়েছে।
গত বছর গণজমায়েতে গান-বাজনা এড়িয়ে চলতে অনুষ্ঠানস্থল মালিকদের পরামর্শ দিয়েছিল তালেবান সরকার। তবে এটি তখন খুব জোরালোভাবে কার্যকর করা হয়নি।
কাবুলে বিয়ে বা অন্যান্য সামাজিক অনুষ্ঠান আয়োজনে ভাড়া দেওয়া হয় এমন একটি অনুষ্ঠানস্থলের ব্যবস্থাপক ডিপিএকে বলেন, বিয়ের অনুষ্ঠানে যদি কোনো গান-বাজনাই না থাকে, তাহলে বিয়ের অনুষ্ঠান আর জানাজার মধ্যে পার্থক্য কী থাকল?
নিরাপত্তার কারণে ওই ব্যক্তির নাম প্রকাশ করা হয়নি।
২০২১ সালের আগস্টে আফগানিস্তানে তালেবান সরকার ক্ষমতা দখলের পর অনেক সংগীতশিল্পী ও কলাকুশলী দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। তাঁরা পশ্চিমা দেশগুলোয় আশ্রয় নিয়েছেন।
গানের সঙ্গে যন্ত্রের সুর বাজানোকে ইসলামি অনুশাসনের বিরোধী বলে মনে করে তালেবান। তাদের মতে, শুধু মানবকণ্ঠ ব্যবহার করেই গান গাওয়া যাবে আর সে গান অবশ্যই আল্লাহর প্রশংসা করে গাইতে হবে।
১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকাকালেও তালেবান বেশ কিছু কার্যক্রমকে বেআইনি ঘোষণা করেছিল। যেমন ঘুড়ি ওড়ানো, টিভিতে সোপ অপেরা দেখা, খেয়ালখুশিমতো চুল কাটা এবং গান বাজনা বাজানো। তখনো এসব করার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল।
পরে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন অভিযানে সশস্ত্র গোষ্ঠীটিকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করার পর এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা বাতিল করা হয়েছিল। তবে নতুন করে তালেবান আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলের পর আবার কঠোর বিধিনিষেধ জারি করছে। বিশেষ করে, আফগান নারীদের ওপর বেশি কড়াকড়ি আরোপ করা হচ্ছে। তাদের মাধ্যমিক স্কুলপর্যায় থেকে শুরু করে পরবর্তী পর্যায়ের শিক্ষা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বিভিন্ন ধরনের চাকরিতেও তাঁদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আছে।
এপ্রিলে আফগানিস্তানের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে নারীদের পরিচালিত একটি রেডিও স্টেশন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। তালেবান কর্মকর্তাদের ভাষ্য, পবিত্র রমজান মাসে রেডিও স্টেশনটিতে গান বাজানো হয়েছে। বাদাখশান প্রদেশের তথ্য ও সংস্কৃতিবিষয়ক পরিচালক মোয়েজউদ্দিন আহমদি বলেন, এ ধরনের কার্যক্রম ইসলামি আমিরাতের আইন ও বিধির লঙ্ঘন।
আল জাজিরা