রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০৪:৫২ অপরাহ্ন

কানাডায় বাড়ছে বেকারত্ব, প্রবল চাপে বিদেশি শিক্ষার্থীরা

  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ৭ মে, ২০২৪

কানাডায় চাকরির বাজার সংকুচিত হচ্ছে। সঙ্গে যোগ হয়েছে ক্রমবর্ধমান অভিবাসন, যার ফলে দেশটিতে গত ৬৭ বছরের মধ্যে সবচেয়ে দ্রুততম হারে জনসংখ্যা বাড়ছে। সব মিলিয়ে, দেশটিতে অধ্যয়নরত আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের ওপর বড় ধরনের চাপ তৈরি হয়েছে।

দেশটিতে অবস্থানরত ১০ লাখেরও বেশি বিদেশি শিক্ষার্থীরা মূলত নিম্ন বেতনের খণ্ডকালীন চাকুরি করতে পারেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এমন ছবি দেখা গেছে যেখানে ক্যাশিয়ারের মতো পদে একজন কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রেও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বাইরে চাকুরিপ্রার্থীদের বিশাল লাইন।

ব্রিটিশ কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ধিভানি মালিক বলেন, ‘ভ্যাঙ্কুভারে জীবনযাপনের খরচ বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি চাকুরির সুযোগ কমতে থাকায় (আমরা) অনেক উদ্বেগে আছি।’

তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা ইতোমধ্যে ফিস বাবদ অনেক অর্থ খরচ করে। সঙ্গে বাড়ি ভাড়া ও জীবনযাপনের খরচ বেড়ে যাওয়ায় আর্থিক চাপ অনেক বেড়েছে।’

সাম্প্রতিক মাসগুলোতে কানাডায় বেকারত্বের হার বেড়ে মার্চে ৬.১% হয়েছে, যা তরুণদের ক্ষেত্রে প্রায় দ্বিগুণ। ফেডারেল সরকারের পরিসংখ্যান সংস্থা এই তথ্য জানিয়েছে। এই ধারার পেছনে কারণ হিসেবে জনসংখ্যা বৃদ্ধির ঊর্ধ্বগতিকে মূলত দায়ী করা হয়েছে, যার পুরোটাই ঘটছে অভিবাসন ও মৌসুমি কর্মী ও বিদেশি শিক্ষার্থীদের মতো সাময়িক বাসিন্দাদের আগমনের ফলে।

জনসংখ্যার এই দ্রুত প্রবৃদ্ধির গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করা হচ্ছে, যাদেরকে কানাডায় চাকুরির সুযোগ এবং স্নাতক ডিগ্রি লাভের পর নাগরিকত্ব দেওয়া হয়। মোটা দাগে, যুক্তরাষ্ট্রের জনসংখ্যা কানাডার চেয়ে ৮ গুণ বেশি হলেও দুই দেশে প্রায় সমান সংখ্যক বিদেশি শিক্ষার্থী রয়েছে। ওয়াশিংটন পোস্ট এ সপ্তাহে এই তথ্য জানিয়েছে।

বিদেশি শিক্ষার্থীরা কানাডার নাগরিকদের তুলনায় কোর্স ফি বাবদ অনেক বেশি অর্থ দেয়, যার ফলে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য তারা আয়ের গুরুত্বপূর্ণ উৎস।

তবে রাজনৈতিক চাপ বাড়তে থাকায় সরকার জানুয়ারিতে বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি ক্ষেত্রে নতুন কোটা চালু করেছে এবং গত মাসে সাময়িক বাসিন্দার সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে একটি পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেছে।

যেসব বিদেশি শিক্ষার্থী পড়ালেখার পাশাপাশি উপার্জন করতে চান, তাদের সমস্যাগুলো বিদ্যমান নীতিমালার কারণে আরও ঘনীভূত হয়েছে। এসব নীতিমালা অনুযায়ী তারা কোন ধরনের চাকুরি করতে পারবেন এবং কত ঘণ্টা কাজ করতে পারবেন, তার ওপর সীমাবদ্ধতা আরোপ করা হয়েছে।

টরন্টো ভিত্তিক অভিবাসন বিশেষজ্ঞ আল পারসাই বলেন, ‘মূল বিষয়টি হল, তারা পূর্ণকালীন কাজ করতে পারেন না। তাদের কানাডীয় ডিগ্রি বা কাজের অভিজ্ঞতা নেই। যার ফলে, তারা ন্যুনতম ঘণ্টাভিত্তিক বেতনের চাকুরি করতে বাধ্য হয়।’

স্টুডেন্ট ভিসার সংখ্যা কমানোর সিদ্ধান্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য মাথা ব্যথার কারণ হতে পারে। উদাহরণ হিসেবে কানাডার সবচেয়ে সম্মানজনক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অন্যতম, ইউবিসির কথা বলা যায়, যেখানে ২০২২ সালে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে ২৭ শতাংশই ছিল বিদেশি শিক্ষার্থী।

সূত্র: ভয়েস অব আমেরিকা

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com