ফুটবল বিশ্বকাপের পরে কাতারের বেশিরভাগ প্রকল্প ধীরগতি হওয়ায় দেশটিতে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন নির্মাণশ্রমিকসহ অন্যান্য পেশায় যুক্ত অসংখ্য বাংলাদেশি।
কর্মহীন হয়ে পড়ায় অনেকে খাবার ও বাসস্থান খরচ মেটাতে গিয়ে দেশটিতে মানবেতর দিন পার করছেন। এমন পরিস্থিতিতে কাতারে খাদ্য সহায়তা নিয়ে প্রবাসীদের পাশে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ দূতাবাস।
গত শুক্রবার দুপুর ২টায় দূতাবাস প্রাঙ্গণে বাংলাদেশি কর্মীদের মাঝে খাদ্য সহায়তা বিতরণ করেন দেশটিতে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম। এই সংকট মুহূর্তে প্রবাসী শ্রমিকদেরকে খাদ্য সহায়তা দিতে বাংলাদেশ কমিউনিটির বিত্তবানদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
দূতাবাস সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে কাতারে প্রায় চার লাখ বাংলাদেশির বসবাস। যাদের মধ্যে অধিকাংশই নির্মাণশ্রমিক। ফিফা বিশ্বকাপ উপলক্ষে কাতারে ইতোমধ্যে ব্যাপক অবকাঠামো উন্নয়ন হয়েছে।
তবে আগের চেয়ে বর্তমানে কাজের চাহিদা কমে আসায় ফ্রি ভিসায় আসা অসংখ্য বাংলাদেশি কর্মী এখন মানবেতর জীবনযাপন করছেন। প্রতিদিন সন্ধ্যা হলে রাজধানীর দোহারসহ বিভিন্ন স্থানে কর্মহীন বাংলাদেশিদের জনসমাগম দেখা যায়।
রাষ্ট্রদূত নজরুল ইসলাম জানান, বর্তমানে দেশটির বেশিরভাগ প্রকল্প ধীরগতিতে চলছে। তাই অনেক বাংলাদেশি দেশটিতে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। অনেকের চাকরি আছে কিন্তু নিয়মিত বেতন পাচ্ছেন না।
আবার অনেকের বেতন ও চাকরির অবস্থা তেমন ভালো না। তাই নতুন ভিসায় যারা কাতারে আসবেন তাদের অবশ্যই কাজ যাচাই-বাছাই করে সতর্কতা অবলম্বন করে আসা উচিত বলে তিনি মনে করেন।
রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, বাংলাদেশ সরকারের প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ওয়েলফেয়ার ফান্ড থেকে কর্মহীন বাংলাদেশিকে খাদ্য সহায়তা প্রদান করছে দূতাবাস।
দীর্ঘদিন কাজ না থাকায় প্রবাসীদের দেশে থাকা পরিবাররাও নানান সংকটে আছেন। এমতাবস্থায় দূতাবাসের মাধ্যমে প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতা পাওয়ার আশা প্রকাশ করেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
ফিফা বিশ্বকাপের পরে কাতারে কর্মহীন হয়ে পড়া বাংলাদেশিদের বিকল্প কর্মসংস্থানের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য দুই দেশের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান সংশ্লিষ্টরা।
গত মে মাসে কাতারের পাবলিক ওয়ার্কস অথরিটি (আসগাল) নতুন ৪.১ বিলিয়ন বাজেটের ২২টি মেগা প্রকল্পের কাজ শুরু করার ঘোষণা দিয়েছে। তবে কবে নাগাদ এসব প্রকল্পের কাজ শুরু হবে তা দেখার অপেক্ষা।
এছাড়া কাতার ভিশন ২০৩০-কে সামনে রেখে নিয়মিত প্রকল্পের কাজ চলছে ধীরগতিতে যা পুরোদমে শুরু হলে অনেকটাই বেকারত্ব কমে আসবে এমনটাই মনে করেছেন সংশ্লিষ্টরা।