মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ০২:১৯ পূর্বাহ্ন

এক নজরে শাহজালালের থার্ড টার্মিনাল

  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ৭ নভেম্বর, ২০২৩

খুলে গেছে আকাশপথের নতুন দুয়ার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল।

শনিবার (০৭ অক্টোবর) প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত থেকে এই টার্মিনালের সফট ওপেনিং (আংশিক উদ্বোধন) করেন।

এর আগে তিনি প্রায় ১০ মিনিট ঘুরে-ঘুরে টার্মিনালের বিভিন্ন স্থান পরিদর্শন করেন।

থার্ড টার্মিনাল বাংলাদেশের এভিয়েশন সেক্টরে নতুন মাত্রা যোগ করবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এই টার্মিনালে ইতোমধ্যে বিদেশি ১২টি এয়ারলাইন্স বাংলাদেশে ফ্লাইট পরিচালনার আগ্রহ দেখিয়েছে। দেশের বৃহৎ এই টার্মিনালকে কেন্দ্র করে বাড়বে যাত্রী চলাচল, আকাশপথের বিস্তৃত।

থার্ড টার্মিনাল উদ্বোধনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।  ছবি: ফোকাস মোহনা

থার্ড টার্মিনাল উদ্বোধনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: ফোকাস মোহনা

চলুন জেনে নেয়া যাক এর আদ্যোপান্ত।

এক নজরে থার্ড টার্মিনাল:

২০১৭ সালে তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণের প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হয়। এরপর নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০১৯ সালের ২৮ ডিসেম্বর। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ২১ হাজার ৩৯৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে জাপানি সহযোগিতা সংস্থা জাইকা ঋণ হিসেবে দিচ্ছে ১৬ হাজার ১৪১ কোটি টাকা। আর বাকি টাকা দিচ্ছে বাংলাদেশ সরকার। এই নির্মাণকাজ করছে জাপানের মিতসুবিশি ও ফুজিতা এবং দক্ষিণ কোরিয়ার স্যামসাং।

মোট ৩০ লাখ বর্গফুট জায়গায় তিনতলা বিশিষ্ট এ টার্মিনাল ভবনটির আয়তন হবে ২ লাখ ৩০ হাজার বর্গমিটার এবং লম্বা ৭০০ মিটার ও চওড়া ২০০ মিটার। এ ভবনটির নকশা করেছেন রোহানি বাহারিন। তিনি আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন সিঙ্গাপুরের সিপিজি করপোরেশন প্রাইভেট লিমিটেডের স্থপতি।

তৃতীয় টার্মিনাল ভবনে প্রথম পর্যায়ে ১২টি বোর্ডিং ব্রিজ চালু করা হবে। পরবর্তী পর্যায়ে আরও ১৪টি বোডিং ব্রিজ স্থাপন করা হবে। বহির্গমনে মোট ১১৫টি চেক ইন কাউন্টার থাকবে, এর মধ্যে ১৫টি থাকবে সেলফ সার্ভিস চেক ইন কাউন্টার। আগমনী লাউঞ্জে ৫টি স্বয়ংক্রিয় চেক ইন কাউন্টারসহ মোট ৫৯টি পাসপোর্ট চেক ইন কাউন্টার থাকবে।

ছবি: ফোকাস মোহনা

ছবি: ফোকাস মোহনা

এছাড়া, ১০টি স্বয়ংক্রিয় পাসপোর্ট কন্ট্রোল কাউন্টারসহ মোট ৬৬টি ডিপার্চার ইমিগ্রেশন কাউন্টার থাকবে। তৃতীয় টার্মিনালের সাথে মাল্টিলেভেল কার পার্কিং ভবন নির্মাণ করা হবে। সেখানে প্রায় ১২৫০টি গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা থাকবে। তৃতীয় টার্মিনাল ভবনের ভেতরেই ভিভিআইপি ও ভিআইপিদের জন্য সর্বাধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্পন্ন আলাদা নির্ধারিত অংশ থাকবে। শুধু তৃতীয় টার্মিনাল  দিয়ে বছরে ১ কোটি ২০ লাখ যাত্রীকে সেবা দেওয়া সম্ভব হবে।

তৃতীয় টার্মিনাল ভবন নির্মিত হলে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর দিয়ে বছরে প্রায় ২ কোটি যাত্রী যাতায়াত করতে পারবেন। শাহজালাল বিমান বন্দরের উত্তর পাশে রয়েছে রফতানি ও আমদানি কার্গো ভিলেজ।
বর্তমান কার্গো ভিলেজের উত্তর পাশে যথাক্রমে ৩৬ হাজার বর্গমিটার ২৭ হাজার বর্গমিটার আয়তনের সর্বাধুনিক সুবিধা সম্পন্ন দুটি পৃথক আমদানি ও রফতানি কার্গো ভিলেজ নির্মাণ করা হবে। যার আয়তন হবে ৬৩ হাজার বর্গমিটার।

বিমানবন্দরের বর্তমান কার্গো ভিলেজের ধারণক্ষমতা ২ দশমিক ৫৮ মিলিয়ন টন। তৃতীয় টার্মিনাল সম্পন্ন হলে ধারণক্ষমতা হবে ৪ মিলিয়ন টন। নতুন এই কার্গো ভিলেজ দেশের রফতানি ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়াতে সহায়তা করবে বলে মনে করা হচ্ছে।

তৃতীয় টার্মিনাল ভবনের সঙ্গে ভূগর্ভস্থ সুড়ঙ্গ পথ ও উড়াল সেতু নির্মাণ করা হবে। যার মাধ্যমে মেট্রোরেল ও ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়ের সংযোগ ব্যবস্থা থাকবে। তৃতীয় টার্মিনালে থাকবে অত্যাধুনিক আন্তর্জাতিক মানের অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা। পাশাপাশি লাউঞ্জ, দোকান, রেস্তোরাঁসহ আন্তর্জাতিক মানের অত্যাধুনিক যাত্রী সেবার সুবিধা রাখা হবে। এছাড়াও এর টার্মিনাল ভবনে ১৬টি আগমনী ব্যাগেজ বেল্ট স্থাপন করা হবে।

এভিয়েশন ঢাকা কনসোর্টিয়াম (এডিসি)-এর মাধ্যমে জাপানের মিৎসুবিশি ও ফুজিতা এবং কোরিয়ার স্যামসাং টার্মিনালের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করবে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com