ভারতবর্ষের সীমানায় অনেক প্রতিবেশী রাষ্ট্র রয়েছে। তবে অধিকাংশ সীমানা গুলি কাঁটাতার দিয়ে ঘেরা। কিন্তু এই প্রতিবেদনে এমন একটি গ্রামের কথা বলা হয়েছে যা ভারত ও মায়ানমারকে আলাদা করেছে। আসলে নাগাল্যান্ডের (Nagaland) মোন জেলার ‘লংওয়া’ (Longwa) বৃহত্তম গ্রামগুলির মধ্যে একটি।
মজার বিষয় হল, এই গ্রামের মানুষেরা এক দেশে রান্না করে আর অন্য দেশে ঘুমাতে যায়। এমন অনেক বাড়ির মধ্যে দিয়ে আন্তর্জাতিক সীমানা চলে গেছে। এই গ্রামের মোট জনসংখ্যা প্রায় ৭,০০০ জন। এখানকার সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয়টি হলো এখানকার মানুষদের কাছে দ্বৈত নাগরিকত্ব রয়েছে। ফলে তারা দুটি দেশে ভোট দেওয়ারও সুবিধা পান।
ভারত-মায়ানমার সীমান্তে অবস্থিত লংওয়া গ্রামের বাসিন্দাদের উভয় দেশে চলাচলের সম্পূর্ণ স্বাধীনতা রয়েছে। এই গ্রামের ক্ষেত্রে তেমন কোনও বাধা নিষেধ নেই। এই গ্রামটির ভারতের দিকে তিনটি গ্রাম এবং মায়ানমারের দিকে পাঁচটি গ্রাম রয়েছে। এখানকার ঐতিহ্য ও সাংস্কৃতির ভালো মেলবন্ধন রয়েছে এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর।
লংওয়া হলো বিখ্যাত কোনিয়াক নাগা উপজাতির বাস। বর্তমানে এর অধিকাংশ মানুষ মায়ানমারে থাকে। অতীতে এই উপজাতিদের নিয়ে রীতিমতো আতঙ্ক ছিল। কারণ এরা জমি দখলের জন্য আশেপাশে গ্রামের বাসিন্দাদের উপর আক্রমণ চালাত। শত্রুদের শিরচ্ছেদও করত তারা। তবে ১৯৪০ সাল থেকে শিরচ্ছেদ করার প্রথা নিষিদ্ধ করা হয়।
লংওয়া গ্রামের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সবাইকে মুগ্ধ করে। এই এলাকায় দর্শনীয় স্থানগুলির মধ্যে রইল ডোয়াং নদী, নাগাল্যান্ড বিজ্ঞান কেন্দ্র, হংকং মার্কেট এবং শিলোই লেক ইত্যাদি। বর্তমানে এখানকার পরিবহন ব্যবস্থাও উন্নত হয়েছে। এই গ্রামে ঘুরতে যাওয়ার সবচেয়ে ভালো সময় হলো অক্টোবর থেকে মার্চ। এইসময় নাগাল্যান্ডে নানান উৎসব ও মেলার আয়োজন করা হয়।