ভারতীয় সংস্কৃতিতে সাধারণত বিয়ের পর মেয়েরা শ্বশুর বাড়িতে যায় এবং সেখানেই বাকি জীবন কাটায়। কিন্তু আমাদের দেশে এমন একটি গ্রাম আছে, যেখানে মেয়েরা বিয়ের পর শ্বশুর বাড়িতে যায় না, বরং জামাইয়েরা শ্বশুর বাড়িতে থাকে। উত্তরপ্রদেশের কৌশাম্বি জেলায় অবস্থিত এই গ্রামের নাম হিঙ্গুলপুর। এটি জামাইদের গ্রাম নামে পরিচিত।
একটা সময় ছিল যখন হিঙ্গুলপুর গ্রাম কন্যা ভ্রুণ হত্যা ও যৌতুক মৃত্যুতে অনেক এগিয়ে ছিল, কিন্তু বর্তমান সময়ে এই গ্রামটি তাদের কন্যাদের বাঁচাতে এক অনন্য পদ্ধতি অবলম্বন করেছে। কয়েক দশক আগে গ্রামের প্রবীণরা বিয়ের পর মেয়েদেরকে তাদের কাছে মেয়ে রাখার সিদ্ধান্ত নেন। যখনই হিংগালপুর গ্রামের মেয়েদের মধ্যে সম্পর্কের কথা হয়, তখনই জামাইকে গ্রামে থাকতে দেওয়ার শর্ত দেওয়া হয়। এমনকি মুসলিম সম্প্রদায়ও এই পদ্ধতি গ্রহণ করেছে।
এই গ্রামের লোকজন একত্রিত হয়ে গ্রামে বসবাস করতে আসা জামাইদের ব্যবস্থা করে, যাতে তাদের চাকরির সমস্যা না হয়। কানপুর, ফতেপুর, প্রতাপগড়, এলাহাবাদ ও বান্দা ইত্যাদি জেলার জামাইরা হিঙ্গুলপুর গ্রামে বসবাস করছেন। শুধু তাই নয়, বংশপরম্পরায় জামাইরা এখানে একই বাড়িতে বসবাস করছেন।
তবে হিঙ্গলপুর আমাদের দেশে একমাত্র গ্রাম নয়। মধ্যপ্রদেশের নরসিংহপুর জেলার সদরের কাছে একটি গ্রাম আছে, যেখানে জামাইরা থাকে, এখানকার গ্রামটি বিটলি জামাইদের গ্রাম হিসেবে পরিচিত।
বিয়ের পর মেয়েদের সঙ্গে রাখার একটা কারণ হলো মেয়ের বিয়ে তো দূরের কথা, পরিবারের বাকিদের সম্পর্কে সব তথ্য পাওয়া যায় না। অনেক সময় অসম্পূর্ণ তথ্যের ভিত্তিতে সম্পর্ক স্থাপিত হয়, যার কারনে উভয় পক্ষের মধ্যে ঝামেলা বাঁধে। এই সমস্যা মোকাবেলায় জামাইকে নিয়ে মেয়ের সঙ্গে থাকার রেওয়াজ প্রচলিত আছে এইসব এলাকায়।