শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:০২ অপরাহ্ন

ইমিগ্রেশন নীতির সংস্কারের প্রয়োজন

  • আপডেট সময় শুক্রবার, ৮ মার্চ, ২০২৪

বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশন নিয়ে যা চলছে, তা রীতিমতো অরাজকতা। দক্ষিণ সীমান্ত দিয়ে মাইগ্রেন্টদের অনুপ্রবেশ প্রবাহ এবং ইমিগ্রেশন ব্যবস্থার ওপর রিপাবলিকান ও ডেমোক্রেটদের বিপরীতমুখী অবস্থানের কারণে বিষয়টি প্রতিনিয়ত জটিল হচ্ছে। এখন ডেমোক্রেটরা রাষ্ট্রের ক্ষমতায় আসীন এবং রিপাবলিকানদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের অন্যতম বিষয় হয়ে দাড়িয়েছে ইমিগ্রেশন ইস্যুতে ডেমোক্রেটদের কীভাবে কাবু করা যায় সেই ব্যবস্থা করা এবং শুধু এ কারণেই সীমান্ত পথে যারা যুক্তরাষ্ট্রে অনুপ্রবেশ করছে, সীমান্তবর্তী প্রধান স্টেট টেক্সাসের গভর্নর প্রধান নীতি হিসেবে গ্রহণ করেছেন, ইমিগ্রান্টদের ডেমোক্রেট স্টেটের বড় বড় সিটিগুলোতে পাঠিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করা।

তিনি এমনও ঘোষণা দিয়েছেন যে, ডেমোক্রেটদের অবশ্যই রিপাবলিকানদের ইমিগ্রেশন নীতি অনুসরণ করতে হবে এবং সীমান্ত প্রাচীরের ব্যাপারে ঐকমত্যে উপনীত হতে হবে। ব্যাপারটি বলা যত সহজ, করা তত কঠিন। জো বাইডেনের আগে রিপাবলিকানরা ক্ষমতায় ছিল এবং তাদের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইমিগ্রান্টদের বিরুদ্ধে রীতিমতো বর্ণবাদী কথাবার্তা বলতেন। প্রাচীর নির্মাণের ব্যাপারেও তিনি অনেক বড় বড় কথা বলেছেন, কিন্তু কংগ্রেস প্রাচীর নির্মাণের ব্যয় অনুমোদন করতে কখনো সম্মতি দেয়নি।

কিন্তু টেক্সাসের গভর্নর গ্রেগরি অ্যাবোট ডেমোক্রেট সিটিগুলোতে, বিশেষ করে স্যাঙ্কচ্যুয়ারি সিটি খ্যাত ডেমোক্রেট সিটিগুলোতে টেক্সাস সরকারের খরচে বাস ভাড়া করে ইমিগ্রান্টদের সুদূরের নিউইয়র্ক, ওয়াশিংটন ডিসি, পোর্টল্যান্ডের মতো সিটিতে পাঠিয়ে দিচ্ছেন, যা যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশনের ইতিহাসে নজীরবিহীন বলে বর্ণনা করেছে সংবাদপত্র ও ইলেকট্রনিক মিডিয়াগুলো। টেক্সাসের গভর্নর তার উদ্দেশ্য জাহির করতে কোনো দ্বিধা করছেন না।

প্রকাশ্যে বলছেন যে অনুপ্রবেশ বন্ধ করতে রিপাবলিকানদের সীমান্ত নীতি অনুসরণ করার কোনো বিকল্প নেই। এদিকে নবাগত ইমিগ্রান্টদের অব্যাহত চাপ সিটিগুলো সহ্য করতে হিমশিম খাচ্ছে। এ ধরনের সমস্যা মোকাবেলার মতো বিপুল পরিমাণ অর্থ কোনো সিটিরই থাকে না। পোর্টল্যান্ড সিটি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে তারা নবাগত ইমিগ্রান্টদের পেছনে ৫০ মিলিয়ন ডলারের বেশি ব্যয় করে ফেলেছেন, তাদের সাধ্যে আর কুলাচ্ছে না। তারা রিপাবলিকানদের রাজনৈতিক চরমপন্থার সংকটে পড়েছে। রিপাবলিকানদের দ্বারা সৃষ্ট সংকটের মুখোমুখি হয়ে ইমিগ্রান্টরাও ভীতসন্ত্রস্ত, কারণ টেক্সাস গভর্নরের ল্যাটিনোদের প্রতি ঘৃণা পোষণ হোয়াইট সুপারম্যাসিষ্টদের প্ররোচিত করতে পারে স্থানীয় ইমিগ্রান্টদের ওপর চড়াও হতে।

তাতে আইনশৃংখলা পরিস্থিতির চরম অবনতি হতে বাধ্য। তার উগ্র মানসিকতার প্রকাশ সর্বনাশা হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রে বর্তমানে প্রায় দেড় কোটি অবৈধ ইমিগ্রান্ট বসবাস করছে, যাদের মধ্যে প্রায় দশ লাখ ইমিগ্রান্ট এসাইলাম বা রাজনৈতিক আশ্রয়ের জন্য আবেদন করেছে। এসাইলাম অফিস থেকে যাদের আবেদন নামঞ্জুর করা হয়েছে তাদের বিষয় পুন:বিবেচনার জন্য ইমিগ্রেশন জজদের কাছে পাঠানো হয় এবং ইমিগ্রেশন আদালতগুলোতে প্রায় ছয় লাখ এসাইলাম কেস বিবেচনাধীন রয়েছে। লোকবলের ঘাটতির কারণে এসাইলাম অফিস ও ইমিগ্রেশন আদালতগুলোতে অনিস্পন্ন এসাইলাম কেস ক্রমাগত বেড়ে চলেছে।

আট-দশ বছর যাবত আটকে থাকা কেস অসংখ্য। ২০১৪ বা ২০১৫ সালে এসাইলাম আবেদন করেছেন এমন বহু এসাইলাম প্রার্থীর আজ পর্যন্ত ইন্টারভিউ হয়নি। এ ধরনের আবেদনকারীদের একটি বড় অংশ পরিবার থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন। তাদের ইমিগ্রেশন আবেদনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হওয়ার আগে তারা যুক্তরাষ্ট্র ছেড়েও যেতে পারছেন না। এধরনের আবেদনকারীর মধ্যে ১৫০টি দেশের এসাইলাম প্রার্থী রয়েছেন। এমন ঢিমেতেতালা গতিতে ইমিগ্রেশন কেস ফয়সালা করা হলে যুক্তরাষ্ট্রের সার্বিক ইমিগ্রেশন সমস্যা বৃদ্ধি পাওয়া ছাড়া কোনোদিন হ্রাস পাবে না। ইমিগ্রেশন নীতির ব্যাপক সংস্কারের জন্য প্রয়োজন ডেমোক্রে ও রিপাবলিকানদের মধ্যে ইমিগ্রেশন ইস্যুতে সমঝোতা।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com