বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৩৬ পূর্বাহ্ন

আসামবস্তি-কাপ্তাই ১৮ কি.মি. সড়কজুড়ে মুগ্ধতা

  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ২৪ আগস্ট, ২০২৩

পার্বত্য জেলা রাঙামাটির আসামবস্তি-কাপ্তাই ১৮ কিলোমিটার সড়ক যেন মুগ্ধতায় ভরে দেয় পর্যটকমন। সড়কটির এক পাশে কাপ্তাই হ্রদের নীল জলরাশি অন্যদিকে সবুজ পাহাড়ের মনোরম দৃশ্য যে কাউকেই বিমোহিত করে।

দেশের বিভিন্নস্থান থেকে যেসব পর্যটক রাঙামাটি ঘুরতে আসেন এক পলকেই তাদের দৃষ্টি কেড়ে নেয় এই সড়ক।
রাঙামাটিতে ঘুরতে আসা বেশিরভাগ পর্যটক এবং স্থানীয়রা এই সড়কটি দিয়ে অতি অল্প সময়ের মধ্যে কাপ্তাই  উপজেলায় যাতায়াত করেন।

এই সড়কটিকে কেন্দ্র করে এখানে গড়ে উঠেছে বেসরকারী পর্যটন স্পট বড়গাঙ, রাইন্যা টুগুন, বেরান্নে লেক এবং বাগী লেক ভ্যালি। এই সড়কে রয়েছে বৌদ্ধদের ধর্মীয় গুরু ও পরিনির্বাণ প্রাপ্ত মহাসাধক সাধনানন্দ মহাস্থবির (বনভান্তের) জন্ম স্থানের স্মৃতি মন্দির। রয়েছে ক্ষুদ্র-নৃ গোষ্ঠীদের গ্রাম ও তাদের জীবনযাত্রা। প্রতিদিন এই মন্দির দেখতে শত শত পর্যটক ভিড় জমান।

 

এ ছাড়াও সড়কের পাশে তৈরি করা হয়েছে রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) রাঙামাটির সদর উপজেলা অফিস সূত্রে জানা গেছে, বিগত ২০১৭ সালে ১৩ জুন ভয়াবহ পাহাড় ধসের ফলে সড়কটিতে ব্যাপক ক্ষতি হয়। পরবর্তীতে এই সড়ককে আকর্ষণীয় করে তুলতে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত পল্লী সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় এই সড়কে তিনটি নতুন সেতুসহ প্রায় ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে সড়কটিকে ২ লেইনে উন্নিত করেছে।

রাঙামাটি সদর উপজেলা এলজিইডি অফিস জানিয়েছেন, আগামি জুন মাসের মধ্যে সড়কটির কাজ পুরোপুরি শেষ হবে।

কুমিল্লা থেকে রাঙামাটি ঘুরতে আসা পর্যটক শাফিন বলেন, আমি এর আগেও রাঙামাটি এসেছি। এই সড়কে আরো কয়েকবার আসা হয়েছে। এই সড়কে এলে লেক পাহাড় দেখলে মনের বিষন্নতা কেটে যায়।

ঢাকা থেকে পরিবার নিয়ে আসামবস্তি-কাপ্তাই সড়কে ঘুরতে আসা পর্যটক সালেহ হোসাইন বলেন, রাঙামাটি থেকে কাপ্তাই যাওয়ার এ সড়কটি খুবই সুন্দর। একপাশে পাহাড় এবং একপাশে কাপ্তাই হ্রদের সৌন্দর্য্য, এটা সত্যিই উপভোগ করার মতো।

স্থানীয় সেচ্ছাসেবী সংগঠন জীবন এর সাধারণ সম্পাদক সাজিদ বিন জাহিদ বলেন, ২০১৭ সালে পাহাড় ধসের ফলে রাঙামাটিতে নতুন করে যে উন্নয়ন প্রকল্পগুলো হচ্ছে, বিশেষ করে আসামবস্তি-কাপ্তাই সড়ক সহজেই দৃষ্টি কাড়ে। টুরিস্টরা যদি এই সড়কে ভ্রমণ করেন রুপ প্রকৃতি বৈচিত্র্য এবং পাহাড়-হ্রদের সংমিশ্রণে মুগ্ধ হতে বাধ্য।

রাঙামাটি শহরের স্থানীয় বাসিন্দা রুপেন ত্রিপুরা বলেন, আসামবস্তি হয়ে যে সড়কটি কাপ্তাই পর্যন্ত গেছে তাতে আমাদের স্থানীয়রা খুবই উপকৃত হয়েছে। এই সড়কটি মাঝখানে কিছুদিন চলাচলের অনুপযোগী ছিল। কিন্তু বর্তমানে সড়কটি নতুন করে উন্নীত করা হয়েছে। এর ফলে আমরা প্রতিদিন বিকেলে আসামবস্তি হয়ে বাইক নিয়ে চলাচল করি।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের রাঙামাটি সদর উপজেলা প্রকৌশলী প্রনব রায় চৌধুরী বলেন, কাপ্তাই-আসামবস্তি সড়কের ১৮ কিলোমিটার সড়কটি বর্তমানে দুই লেইনে উন্নীত হয়েছে। রাঙামাটি এলজিইডির জন্য এই সড়কটি একটি ট্রেড মার্ক। এই সড়কটি রাঙামাটিতে আগত টুরিস্টদের কাছে খুবই আকর্ষণীয় একটি স্থান হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।

প্রনব রায় চৌধুরী আরো বলেন, এই সড়কের সৌন্দর্য্য বর্ধনের জন্য বরাদম এলাকায় নতুনভাবে নির্মিত করা হয়েছে লাভ পয়েন্ট। যা ইতোমধ্যে পর্যটকদের আকর্ষনের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে।

রাঙামাটি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী  আহামদ শফি বলেন, রাঙামাটি থেকে কাপ্তাই যাওয়ার জন্য এটি হচ্ছে একটি বিকল্প সড়ক।এই সড়কটির ফলে রাঙামাটি থেকে কাপ্তাইয়ের দূরত্ব প্রায় ২০ কিলোমিটার কমে গেছে।

পর্যটক যতই বেশী হবে, দৃষ্টিনন্দন এই সড়কের পাশ ঘেঁষে গড়ে উঠবে নতুন নতুন পর্যটন স্পট। পর্যটন স্পট গড়ে উঠলে রাঙামাটির অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে এই সড়ক।

চারদিকে পাহাড় আর কাপ্তাই হ্রদের অপরুপ সৌন্দর্য্যে ঘেরা রাঙামাটি শহরের আসামবস্তি থেকে কাপ্তাই পর্ষন্ত দুরত্ব ১৮ কিলোমিটার। এই সড়ক দিয়ে আগে শুধুমাত্র ছোট যানবাহন চলাচল করতো। এতে এই সড়ক দিয়ে কাপ্তাই যেতে যেমনি সময় লাগতো তেমনি ঝুঁকিপূর্ণ ছিলো।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com