আজকাল তরুণ প্রজন্মের মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়াতে ভাইরাল হওয়ার প্রবণতা অনেক বেশি বেড়ে গেছে। বেশিরভাগ মানুষেরই আজকাল ইউটিউব চ্যানেল আছে। তাই নতুন শতাব্দীর নতুন ট্রেন্ড হলো ভিউ-লাইক-সাবস্ক্রাইব-শেয়ার। মানুষের বিনোদনের ভাষাকে বদলে দিয়েছে এই নতুন জাগরণ। শুধু বিদেশেই নয় এদেশেও দিন দিন বেড়ে চলেছে ইউটিউবারের সংখ্যা। এর সবথেকে বড় প্রমাণ হলো ছত্তিশগড়ের (Chhattisgarh) একটি গ্রাম। গ্রামটির নাম হলো তুলসী, এখানে বাস করে ৩ হাজার মানুষ, যার মধ্যে ১ হাজার জন ইউটিউবার (Village of Youtubers)। আপনি নিশ্চয় বিশ্বাস করতে পারছেন না কিন্তু এটাই সত্যি।
কোথায় অবস্থিত এই তুলসী গ্রামটি? ছত্তিশগড়ের রাজধানীর রায়পুর থেকে প্রায় ৪৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই গ্রাম। গ্রামে বেশিরভাগ মানুষই ইউটিউবার সেই কারণেই গ্রামটির নাম হয়ে গেছে ইউটিউবারদের গ্রাম (Village of Youtubers)। পারিবারিক সূত্রেই এখানকার তরুণ প্রজন্মরা পেয়েছে এই অভিনব সত্তা। এদের বাপ-কাকারা কাকারা সবাই যাত্রায় অভিনয় করতেন। বর্তমানে এদের সন্তানেরা মোবাইলের মাধ্যমে নিজেদের প্রতিভাকে সবার সামনে তুলে ধরছে। তুলসী গ্রামের বর্তমান ইউটিউব চ্যানেলের সংখ্যা ৪০। কিন্তু হঠাৎ করে গোটা গ্রাম এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হল কেন?
তুলসী গ্রামে (Village of Youtubers) প্রথম সাফল্য আসে জ্ঞানেন্দ্র শুক্লা ও জয় বর্মার ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে। বহু ব্যর্থতার পরেই অবশেষে তারা সাফল্য পায় জীবনে। জ্ঞানেন্দ্র করতেন ব্যাংকের চাকরি কিন্তু ২০১১-১২ সালে সুরক্ষিত ব্যাংকের চাকরি ছেড়ে ইউটিউব চ্যানেল খোলেন। একেবারে প্রথম থেকেই তিনি সাফল্য পাননি। জ্ঞানেন্দ্র শুক্লা নিজের গ্রামে রামলীলায় অভিনয় করতেন সেটাই তার ইউটিউব চ্যানেলের ক্ষেত্রে অনেক কাজে আসে। সম্প্রতি জ্ঞানেন্দ্র শুক্লার চ্যানেলে সাবস্ক্রাইবারের সংখ্যা ১.১৫ লক্ষ। নিজের চ্যানেলে এখনও অবধি তিনি ২৫০ টি ভিডিও আপলোড করেছেন।
অন্যদিকে জয় বর্মা ছিলেন একজন অস্থায়ী শিক্ষক। তিনি সব ছেড়ে শুরু করেন নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেল। জয় বলেন যে, তিনি মাসে আগে আয় করতেন বারো থেকে পনেরো হাজার টাকা, তবে বর্তমানে তিনি উপার্জন করেন ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা। সবকিছুই তার ইউটিউব চ্যানেলের জন্য। এইভাবেই গ্রামটির (Village of Youtubers) অন্যান্য মানুষেরাও আকৃষ্ট হয় ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করার প্রতি।
জ্ঞানেন্দ্র আরো বলেন যে, তুলসী গ্রামের ৪০ শতাংশ মানুষের ইউটিউব চ্যানেল রয়েছে। যার থেকে আয় হচ্ছে লক্ষাধিক টাকা। এই কাজটি করে গ্রামের বেশিরভাগ মানুষই যথেষ্ট আনন্দ লাভ করছে। তবে গ্রামের সব মানুষই ইউটিউব চ্যানেল নিয়ে ব্যস্ত ব্যাপারটা এমনও নয়।