অস্ট্রেলিয়ার প্রায় এক-তৃতীয়াংশ মানুষ একাকীত্ব বোধ করেন বলে এক জরিপে উঠে এসেছে।
গবেষণা ও অ্যাডভোকেসি সংগঠনগুলোর একটি জাতীয় জোট ‘এন্ডিং লোনলিনেস টুগেদার’ সোমবার সামাজিক সংযোগের বিষয়ে প্রথম ‘স্টেট অব দ্য নেশন’ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
১৮ থেকে ৯২ বছর বয়সী চার হাজারেরও বেশি মানুষের ওপর চালানো জরিপে দেখা গেছে, অস্ট্রেলিয়ার ৩২ শতাংশ নারী এবং ৩১ শতাংশ পুরুষ একাকীত্ব বোধ করেন।
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, ১৮ থেকে ২৪ বছরের মানুষ অধিকাংশ সময় একাকীত্ব অনুভব করেন। সময়ের হিসাবে ৭৫ বছর বয়সীদের তুলনায় তা চার গুণ।
মহানগর এলাকার তুলনায় গ্রামাঞ্চলের মানুষের মাঝে একাকী হওয়ার প্রবণতা কিছুটা বেশি দেখা গেছে।
প্রতিবেদনে দেখা গেছে, অস্ট্রেলিয়ানরা যারা একাকী বোধ করেন তারা সাধারণত শারীরিক ক্রিয়াকলাপে কম যুক্ত, কর্মক্ষেত্রে কম উৎপাদনশীল এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আসক্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
একাকী অস্ট্রেলিয়ানদের বাকিদের তুলনায় হতাশ হওয়ার সম্ভাবনা চার দশমিক ছয় গুণ এবং দীর্ঘস্থায়ী রোগ হওয়ার সম্ভাবনা দ্বিগুণ বেশি।
‘এন্ডিং লোনলিনেস টুগেদার’ এর চেয়ারম্যান মিশেল লিম প্রতিবেদনে বলেন, ‘একাকীত্ব আমাদের সময়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এবং বিশ্বের অনেক দেশে জনস্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার হিসেবে স্বীকৃত। যদিও একাকীত্বের ক্ষতিকারক স্বাস্থ্য, অর্থনৈতিক ও সামাজিক প্রভাবগুলো সুপ্রতিষ্ঠিত; তবে সম্প্রদায়ে সচেতনতা এবং এর জন্য ক্রিয়াকলাপ কম।’
অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ‘লোনলিনেস অ্যাওয়ারনেস উইক’ শুরু হওয়ার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এ প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়।
লিম বলেন, ‘একাকীত্বকে দুর্বলতা বা দোষের লক্ষণ হিসেবে দেখা উচিত নয়। একাকীত্ব বোধ করা আমাদের জন্য একটি সহজাত সঙ্কেত, যা যোগাযোগ বা সংযোগের জন্য আমাদের মৌলিক মানবিক চাহিদাকে মেনে নেয়া ও এর সমাধানের কথা মনে করিয়ে দেয়। এটি বুঝতে পারাই হচ্ছে একটি সংযুক্ত অস্ট্রেলিয়া তৈরি করার প্রথম পদক্ষেপ।’
একাকীত্বের কথা জানানো ৩৯ শতাংশ মানুষ অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে সুবিধাবঞ্চিত এলাকায় বাস করেন। এক-তৃতীয়াংশ মানুষ জানিয়েছেন যে তারা একাকী হওয়ার জন্য লজ্জা অনুভব করেন এবং ৫৮ শতাংশ বলেছেন, তারা এট সম্পর্কে কথা বলা এড়িয়ে চলেন।