বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০৬ অপরাহ্ন

অনলাইন গেমের আড়ালে বিপদ! আপনার সন্তান কতোটা নিরাপদ

  • আপডেট সময় শনিবার, ১৫ জুলাই, ২০২৩

সন্তানের হাতে স্মার্ট ফোন, ল্যাপটপ নিশ্চয় তুলে দেবেন প্রয়োজন হলে। কিন্তু সন্তান এই ডিভাইসটির সঠিক ব্যবহার করছে কি না, নাকি ডিজিটাল ডিভাইসে আসক্ত হয়ে পড়ছে, সেদিকে সঠিকভাবে খেয়াল রাখা খুবই জরুরী। আজকে আমরা জানার চেষ্টা করবো অনলাইন গেমের আড়ালে বিপদ! কতটা নিরাপদ আপনার সন্তান?

আজকাল অনলাইনের বাঁকে বাঁকে ওঁত পেতে থাকে বিপদ। বিশেষ করে অনলাইন গেমের ফাঁদে পড়ে তারা কোন অনাকাঙ্খিত বিপদের মুখে পড়ে কিনা, সেদিকেও নজর রাখা একান্ত কর্তব্য।

অনলাইন গেম এবং বিরূপ প্রভাব

আজকাল স্মার্ট ফোনের স্মার্ট জমানায় ছোট ছেলে-মেয়েদের হাতেই থাকে নামি দামি ব্র্যান্ডের সব ডিভাইজ। ফোন, ল্যাপটপ, ট্যাবলেট, পিসি আর সাথে থাকে ইন্টারনেট সংযোগ। বিভিন্ন বিষয়ের পাশাপাশি অনলাইন গেমে সারাদিন বুঁদ হয়ে থাকে এ যুগের কিশোর থেকে শুরু করে গোটা তরুণ সমাজ।

বয়স কম হওয়ার কারণে তারা না বুঝে নিজেদের অজান্তেই মারাত্মক ক্ষতি ডেকে আনতে পারে। বিশেষজ্ঞ পর্যায়ে এই বিষয়টিকে অত্যন্ত উদ্বেগের বলে জানিয়েছেন। তাঁরা আশঙ্কা করছেন অনলাইন গেমের আড়ালে বিপদ! সেখান থেকে তাদের নিরাপদ রাখার দায়িত্ব অবিভাবকের।

অনলাইন গেমের চক্করে পড়ে অনেক কিশোর তরুণ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কেউ কেউ মানসিক নানা ব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে। মানসিক ব্যাধির পাশাপাশি অনেক কিশোর বা তরুণ সাইবার জালিয়াতির শিকার হচ্ছে। আমাদের যাদের সন্তানের হাতে আধুনিক এসব ডিভাইস আছে, সেব সন্তান কতটা নিরাপদ?

ফাঁদ পেতে আছে অনলাইন গেমের আড়ালে বিপদ! আর বর্তমান সময়ের এসব স্মার্ট ডিভাইস আধুনিকতার নামে আজকের প্রজন্মকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে এবং এর ফলাফল কোথায় গিয়ে ঠেকবে, এই নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা।

বিগত করোনা কালে দীর্ঘ ২ বছর ঘরবন্দী জীবন যাপনের ফলে আজেকের কিশোর প্রজন্ম বহুগুণে আসক্ত হয়ে পড়েছে এসব আধুনিক ডিভাইসের প্রতি। অনেকে আসক্ত হয়ে পড়েছে অনলাইন গেমের প্রতি।

আর সেই আসক্তি অনেকের ক্ষেত্রে এমন এক পর্যায়ে পৌঁছে গেছে যে, উপায়ান্তর না দেখে বাবা-মা’কে সন্তানকে নিয়ে ছুটতে হচ্ছে মনোবিজ্ঞানীদের কাছে। একাধিক জড়িপে দেখা গেছে, সময়ের সাথে সাথে বাচ্চাদের মধ্যে অনলাইন গেমের প্রতি আসক্তি বাড়ছে এবং সেই সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্যও প্রচণ্ড ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

অনেক বাচ্চা প্রচণ্ড খিটখিটে হয়ে যাচ্ছে। কেউ কেউ আবার সারাদিন বাস্তব দুনিয়া থেকে ছিটকে পড়ে একেবারেই বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে। কিশোর তথা তরুণ প্রজন্ম খুব সহজেই নানা রকম মানসিক ব্যাধির শিকার হচ্ছে।

মনোবিজ্ঞানীরা বলছেন, অনলাইন গেমের প্রতি আসক্ত কিশোর কিশোরীর সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। সাইবার দুনিয়ায় বাঁকে বাঁকে ওঁত পেতে থাকে বিপদ। বিশেষ করে কিশোর কিশোরীদের টার্গেট করে অনলাইন গেমের নামে প্রতারণার ফাঁদ তৈরি করে রাখে সাইবার অপরাধীরা।

এসব প্রতারক চক্র অনলাইন গেমের নামে নানা প্রলোভন দেখিয়ে কিশোর প্রজন্মকে আকৃষ্ট করার চেষ্টা করে। আর কিশোর কিশোরীরা সেই এসব বিষয়ে অনেক ক্ষেত্রে বাবা মাকে এড়িয়ে যায়।

পরিসংখ্যানগত উদ্বেগ

পরিসংখ্যান বলছে, সারা বিশ্বে অনলাইন গেমের আসক্তির কারণে ৬ থেকে ক্ষেত্র বিশেষে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে কিশোর মনোরোগীর সংখ্যা। আর করোনা কালে ঘরবন্দী থাকার সময়টাতে এই সংখ্যা বেড়েছে বলে তারা আশঙ্কা করেছেন।

মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, সারা দুনিয়ায় অনলাইন গেমিয়ের পাল্লায় পড়ে বিপন্ন হচ্ছে একটি প্রজন্মের শৈশব। তাদের ব্যবহারে আসছে নানা ধরণের পরিবর্তন।

মানসিক স্বাস্থ্যের সঙ্গে সঙ্গে শারীরিক ভাবেও নানা রকমের ব্যাধির শিকার হচ্ছেন তারা। তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে অনিদ্রা, ক্ষুধামন্দা, পড়ালেখার প্রতি অনিহা, ব্যবহারের পরিবর্তন, অধিক মানসিক চাপ, উদ্বেগ ও ভয়। মোবাইল, ট্যাবলেট অথবা কম্পিউটার ছাড়া তারা অনেকেই থাকতে পারছেন না।

এসব ক্ষেত্রে বাবা-মা নিষেধ করলে তাঁদের সঙ্গে করছে খারাপ আচরণ, অভিমান এবং তৈরি হচ্ছে দূরত্ব। এমনও দেখা যায় মোবাইল বা কম্পিউটার সন্তানের কাছ থেকে দূরে সরিয়ে রাখলে অনেকে উদ্ধত হচ্ছে মা-বাবার ওপর। তেড়ে আসছে অথবা করছে দুর্ব্যবহার।

অনলাইন গেম কীভাবে একটি প্রজন্মের ওপর প্রভাব ফেলেছে সে প্রসঙ্গে ভারতীয় টার্নস্টোন গ্লোবাল (Turnstone global) এর কর্নধার এবং শিশু মনস্তত্ববিদ কাঞ্চন গাবা বলেন, “অনলাইন গেমের প্রভাব দিন দিন মারাত্মক হারে বাড়তে শুরু করেছে শিশুমনে। তবে এক্ষেত্রে বাবা-মা’কে প্রথম থেকেই সন্তানদের প্রতি আরও বেশি যত্নশীল হওয়া প্রয়োজন।

তাদের হাতে স্মার্ট ফোন ল্যাপটপ নিশ্চয় তুলে দেবেন প্রয়োজন হলে, কিন্তু সন্তানরা যাতে ডিজিটাল ডিভাইসের প্রতি আসক্ত না হয়ে পড়ে তার খেয়ালটাও রাখা অত্যন্ত জরুরি”। তিনি আরও বলেন, “সন্তানদের সময় দেওয়া, তাদের ছোট থেকে ঘরবন্দী না করে সকলের সঙ্গে মিশতে দেওয়া উচিত।

সন্তানের সঙ্গে খোলামেলা ভাবে কথা বলাটা একান্ত জরুরি। তিনি বলেন, আগে অধিকাংশ পরিবারই ছিল একান্নবর্তী পরিবার। সেক্ষেত্রে একাকীত্ব কী সেটা আমরা সেভাবে বুঝতে শিখিনি। সময়ের পরিবর্তনে এখন ছোট পরিবার, আর কর্পোরেট লাইফস্টাইল অচিরেই আমদের মধ্যে বিপদ ডেকে আনছে ।

ডাঃ গাবা আরও বলেন, “কোভিডের আগে আমাদের কাছে যত সংখ্যক বাবা-মা তাদের সন্তানদের নিয়ে কাউন্সিলিং করাতে আসতেন, সেই সময়ের তুলনায় এখন এই সংখ্যাটা অনেকটাই বেড়েছে। গেমিংয়ের মারাত্মক প্রভাব পড়ছে শিশুদের মনে। অনেকে নিজেরাই সেটা বুঝতে পারছে।

আশার কথা হলো যারা বুজতে পারছে, তাদের ক্ষেত্রে সেই আসক্তি কাটিয়ে ওঠা অনেকটাই সহজ। আর যারা সেটা বুঝতে পারছে না, তাদের ক্ষেত্রে আসক্তি কাটাতে অনেকটাই সময় লাগছে। কারো কারো ক্ষেত্রে কাউন্সিলিং করে সুস্থ করে তুলতে ৬ থেকে ৮ মাস পর্যন্ত সময় লেগে যাচ্ছে”।

তিনি বলেন,”অনলাইন গেম মানেই যে খারাপ সব ক্ষেত্রে এমনটা নয়। সমস্যা হলো এর প্রতি আসক্ত হয়ে যাওয়াটা ভয়। অবসেসিভ কম্পালসিভ ডিজঅর্ডার, ‘বিহেভেরিয়াল ডিজঅর্ডার ’ সহ নানা ধরণের সমস্যা গ্রাস করছে আজকাল শিশুদের।

তিনি জানান, এই ধরণের রোগীদের কাছ থেকে জোর করে গেম বন্ধ করতে গেলেই নানান সমস্যা দেখা দেয়। কারো ক্ষেত্রে পালস রেট বেড়ে যায় , উদ্বেগ বেড়ে যায় , সেই সঙ্গে বুক ধড়ফড়ানি বেড়ে যেতে দেখা যায়৷

কারো কারো ক্ষেত্রে মেজাজের ব্যাপক পরিবর্তন লক্ষ করা যায়। এর জন্য প্রয়োজন যথাযথ চিকিৎসা এবং কাউন্সিলিং”।

অনলাইন গেম এবং সাইবার জালিয়াতি

এই ডিজিটাল যুগে আমাদের জীবনযাত্রার সবকিছুই আগের চেয়ে অনেক সহজ হয়েছে। আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে অনেক কষ্টের ও সময়সাপেক্ষ কাজ দ্রুত করা যাচ্ছে। কাজে এসেছে গতি এবং বেড়েছে কর্মসংস্থান। যোগাগোগের ক্ষেত্রে এসেছে যুগান্তকারী পরিবর্তন।

মুহুর্তেই দুনিয়ার এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে তৈরি হয়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। প্রযুক্তির উৎকর্ষতায় আমূল পরিবর্তন হয়ে গেছে জীবন প্রবাহ। কিন্তু সেই সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সাইবার অপরাধের সংখ্যা।

সাইবার অপরাধীরা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট হ্যাকিং করে টাকা-পয়সা হাতিয়ে নেয়া থেকে শুরু করে তৈরি করছে নিত্য-নতুন জালিয়াতির পদ্ধতি। সাইবার দুনিয়ার বাঁকে বাঁকে তৈরি করে রাখছে জালিয়াতির দুষ্ট ফাঁদ।

সাইবার গেমের আড়ালে চলছে জুয়ার আসর। লোভনীয় প্রলোভন দেখিয়ে নিঃস্ব করে দিচ্ছে বহু মানুষকে। বিশেষ করে কিশোর প্রজন্মকে টার্গেট করে তারা তৈরি করে জালিয়াতির এক বিশাল জাল।

আর এসব প্রলোভনে আকৃষ্ট হয়ে সেই জালে আটকা পড়ছে আজকের প্রজন্ম। বিভিন্ন উপায়ে টাকা হাতানোই এসব সাইবার অপরাধীদের মূল উদ্দেশ্য। আজকাল অহরহ এসব অভিযোগ পাওয়া যায়। আবার অনেকে সর্বস্ব খুইয়ে ভয়ে বিষয়টি এড়িয়ে যান।

তাছাড়াও অনলাইন গেমের মাধ্যমে, কিশোর-তরুণদের মোটা অংকের টাকার প্রলোভন দেখিয়ে ফাঁদে ফেলে অর্থ হাতানোর বহু চক্র বর্তমানে নানা ফর্মে সক্রিয় রয়েছে।

সাইবার অপরাধীরা নানা রকম প্রতারণার ফাঁদ তৈরি করে কিশোর প্রজন্মকে লক্ষ্য করে। নিত্যদিন তারা নতুন নতুন কৌশল অবলম্বন করে করছে জালিয়াতি। পর্ণগ্রাফি থেকে শুরু করে অনলাইন গেমে মোটা টাকা জিতে নেয়ার প্রলোভনের ভেতর দিয়ে আকৃষ্ট করছে এই প্রজন্মকে।

সাইবার অপরাধীরা অনলাইন গেমসহ বিভিন্ন মাধ্যমগুলি এমন ভাবে ডিজাইন করে যে, সেসব অ্যাপের মধ্যে ঢুকতে গেলে দিতে হয় নানা তথ্য। আর সেসব তথ্য দিয়ে গিয়ে কিশোর প্রজন্ম না বুঝে অতি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তাদের কাছে দিয়ে থাকে এবং অবিভাবকের কাছে চেপে যায়।

আর এভাবে সাইবার অপরাধীরা ব্যবহারকারীর কাছ থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য, কোড নাম্বার, গুরুত্বপূর্ণ ডেটা এবং ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের তথ্য পর্যন্ত হাতিয়ে নিতে তৎপর থাকে। আর ব্যবহারকারী তার অজান্তে মুহূর্তেই বিপদে পড়ে এবং তার সর্বস্ব খুইয়ে ফতুর হয়ে যায়।

বাংলাদেশে একটা সময় তিনপাত্তি গোল্ড নামের একটি অ্যাপ ছড়িয়ে পড়ে। এটি মুঠোফোনে ডাউনলোড করে খেলা যায়। এই অ্যাপের সার্বিক নিয়ন্ত্রণ ছিলো মুনফ্রগ ল্যাবসের হাতে। এছাড়াও ‘রাখি’, ‘অন্দর বাহার’ ও ‘পোকার’ নামের অনলাইন জুয়ার গেমস রয়েছে এই প্রতিষ্ঠানের।

তিনপাত্তি গোল্ডে নিবন্ধন করার পরে একজন গ্রাহক খেলার জন্য কিছু ‘চিপস’ বিনা মূল্যে পায়। বিনা মূল্যের চিপস শেষ হয়ে গেলে গেম খেলতে গেলে টাকা দিয়ে চিপস কিনতে হয়।

আর মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে চিপস কেনার লেনদেন হয়। এভাবে প্রতিদিন প্রায় ৫০ হাজার কোটি চিপস বিক্রি হয় বলে জানা যায়। এবং প্রতি কোটি চিপস বিভিন্ন পর্যায়ে ৪৬ টাকা থেকে ৬৫ টাকায় বিক্রি হয় বলে জানা যায়।

এটি মূলত কম্পিউটারের স্বয়ংক্রিয় খেলোয়াড় এবং প্রলোভনে পা দেয়া প্লেয়ারের মাধ্যমে জুয়া খেলা। প্রথম দিকে প্লেয়ারকে কৌশলে দিগুণ টাকা জিতিয়ে দেয়া হয়। জেতার পর চিপস কিনতে উৎসাহিত করা হয়। লোভে পড়ে গেমার চিপস কেনে এক পর্যায়ে টাকা খোয়াতে থাকে।

আর এই গেমে উৎসাহিত করা হয় কিশোর প্রজন্মকে। যে সকল অনলাইন গেম শিশুদের মধ্যে বিশেষভাবে জনপ্রিয়, সাইবার অপরাধীরা সোশ্যাল মিডিয়াসহ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে সেই সব গেমের ভুয়া পেজ তৈরি করে এবং PUBG, ফ্রি ফায়ার এবং অন্যান্য অনলাইন গেমসের ধাঁচে ভুয়া গেম,

বিক্রি করার জন্য বিজ্ঞাপন দেয় এবং গেমারদের আকর্ষণ করে। এসব বিজ্ঞাপন দেখে তাদের ফাঁদে পড়ে অনেক গেমার। আর এসব ভুয়া অনলাইন গেমের আড়ালে বিপদ!

এসব ক্ষেত্রে অপরাধীরা প্রথমে গেম অ্যাকসেস করতে অ্যাকাউন্টে টাকা ট্রান্সফার করতে বলে। অনেক কিশোর চুপে চুপে কাউকে কিছু না বলে অনেক সময় তাদের বাবা-মায়ের ক্রেডিট কার্ড ও ডেবিট কার্ড নম্বর দিয়ে গেম একসেস করে। এর ফলে যা সর্বনাশ হবার ততক্ষণে তা হয়ে যায় এবং অনেকে সব খুইয়ে সর্বশান্ত হয়ে পড়ে।

অনলাইন গেমের আড়ালে বিপদ - আপনার সন্তান কতোটা নিরাপদ

অনলাইন জালিয়াতি রোধে সতর্কতা

  • আপনার কার্ড নাম্বার, পিন বা পাসওয়ার্ড, সিভিভি (CVV), ওটিপি (OTP), এক্সপায়ারি ডেট অত্যন্ত গোপনীয়। এ সকল তথ্য কারো সাথে শেয়ার করা কিংবা কোথাও লিখে রাখা থেকে বিরত থাকতে হবে।
  • আপনার লেনদেন সম্পর্কিত যেকোনো কাগজপত্র ব্যাংক অনুমোদিত ব্যক্তি ছাড়া কারো সাথে আদান-প্রদান করা থেকে বিরত থাকুন। এমনকি উঠতি বয়সের ছেলে-মেয়েদের কাছ থেকে নিরাপদে রাখুন।
  • নিজের চেক বই, কার্ড ইত্যাদি নিরাপদ স্থানে নিজ দায়িত্বে রাখুন। এসবের ছবি তোলা এবং কোন মেসেজিং সাইটে শেয়ার করা থেকে বিরত থাকুন এবং ছোট ছেলে-মেয়েদের কাছ থেকে দূরে রাখুন।
  • বিদেশ থেকে আসার পর কার্ডের ইউএসডি অংশটুকু বন্ধ করে রাখুন।
  • আপনার কার্ডটি হারিয়ে গেলে, কার্ড কিংবা কার্ডের প্রয়োজনীয় ও গোপন তথ্য চুরি হলে অথবা ক্লোন হয়েছে মনে করলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের সার্বক্ষণিক নির্দিষ্ট কন্টাক্ট নাম্বারে যোগাযোগ করুণ। আপনার অভিযোগের প্রেক্ষিতে ব্যাংক আপনার কার্ডটি ব্লক করে দেবে।
  • আপনি ব্যাংক-কে অবহিত করার আগে ঘটিত কোন লেনদেনের ক্ষেত্রে ব্যাংক দায় নেবে না। আপনার দ্বারা সংঘটিত হয়নি এমন কোন লেনদেন হয়েছে সন্দেহ হলে বা এরকম লেনদেন সংক্রান্ত কোন এসএমএস/ই-মেইল পেলে সাথে সাথে ব্যাংক-কে অবহিত করুণ।
  • ব্যাংক কখনোই ফোনে আপনার কার্ডের গোপনীয় তথ্য (PIN, OTP, CVV, VALIDITY) জানতে চায় না। তবে জরুরী প্রয়োজন যেমন কার্ড অ্যাকটিভ করতে কিংবা প্রয়োজনীয় তথ্য (NID, TIN ইত্যাদি) সংগ্রহ করতে প্রয়োজনে সুনির্দিষ্ট নাম্বার থেকে যোগাযোগ করতে পারে। সে ক্ষেত্রে ব্যাংকের অনুমোদিত কর্মকর্তা ফোন করে এবং পরিচয় দিয়ে আপনার কাছ থেকে প্রয়োজনীয় সহায়তা চাইতে পারে । আপনাকে পরিচয় নিশ্চিত হয়ে তথ্য লেনদেন করতে হবে।

তথ্যসূত্র : দ্যা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com