শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৪৫ অপরাহ্ন

হাওয়াই দ্বীপে দাবানলে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে ৮০

  • আপডেট সময় শনিবার, ১২ আগস্ট, ২০২৩

যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই রাজ্যের মাউই কাউন্টিতে এক ভয়াবহে দাবানলে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৮০ জনে দাঁড়িয়েছে। এখনো উদ্ধার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন উদ্ধারকারীরা। দ্বীপটির কর্মকর্তারা এই নারকীয় পরিস্থিতির কারণ নির্ধারণের পাশাপাশি নিয়ন্ত্রণে আনার জোরালো প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দাবানলটি রাজ্যের ইতিহাসে সবচেয়ে মারাত্মক প্রাকৃতিক দুর্যোগ। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যখন হাওয়াই যুক্ত হয় এর এক বছর পর ১৯৬০ সালে দ্বীপটিতে সুনামির আঘাতে ৬১ জনের প্রাণহানি ঘটেছিল। এবার দাবানলে দ্বীপটিতে প্রাণহানির সংখ্যা ৮০ জনে পৌঁছেছে।

কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ক্যাডেভার কুকুরের মাধ্যমে অনুসন্ধানকারীরা এখনো মৃতদেহ খুঁজছেন। দাবানলের কারণে অন্তত এক হাজার ভবন পুড়ে গেছে। ঘরছাড়া হয়েছে হাজার হাজার বাসিন্দা। বিশ্লেষকদের মতে, এই অবস্থার পর দ্বীপটি পুনর্গঠনের জন্য অনেক বছর সময়ের পাশাপাশি বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন।

হাওয়াইয়ের মার্কিন সিনেটর ব্রায়ান শ্যাটজ এমএসএনবিসিকে বলেছেন, ‘পুড়ে যাওয়া অনেক জায়গায় এখনো কেউ প্রবেশ করেনি। সেইসমস্ত জায়গায় দুর্ভাগ্যবশত মৃতের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাবে বলে আশঙ্কা করছি।’

সন্ধ্যায় এক বিবৃতিতে, মাউই কাউন্টি মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৮০ জন হওয়ার কথা নিশ্চিত করেছে। ব্রাশ থেকে শহরে ছড়িয়ে পড়া আগুন এখনও জ্বলছে। দ্বীপের অন্য দুটি দাবানল যথাক্রমে ৮০ শতাংশ এবং ৫০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণে ছিল।

বিপর্যয়ের তিন দিন পরে বাসিন্দারা তাদের বাড়িতে আগুন লাগার আগে কোনো সতর্কতা পেয়েছিলেন কিনা তা স্পষ্ট নয়।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং অন্যান্য হুমকির বিষয়ে সতর্ক করার উদ্দেশ্যে দ্বীপটিতে জরুরি সাইরেন রয়েছে, কিন্তু আগুনের সময় সেগুলি বাজছে বলে মনে হয়নি।

হাওয়াইয়ের গভর্নর জোশ গ্রিন সতর্কীকরণ সাইরেনের কথা উল্লেখ করে সিএনএনকে বলেন, ‘আমি আজ সকালে একটি বিস্তৃত পর্যালোচনা অনুমোদন করেছি যাতে আমরা জানি যে ঠিক কী এবং কখন ঘটেছে।’

গ্রীন একাধিক সমস্যার কথা উল্লেখ করে বলেন দ্বীপটিতে টেলিযোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। যে কোনো ক্ষেত্রে আমাদের জনগণকে কীভাবে আরও এগিয়ে যেতে হবে তার জন্য আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব।

মাউই কাউন্টি ফায়ার চিফ ব্র্যাডফোর্ড ভেনচুরা বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, আগুনের গতির কারণে সামনের সারির প্রতিক্রিয়াকারীদের জন্য জরুরি ব্যবস্থাপনার কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা ‘প্রায় অসম্ভব’ হয়ে উঠেছে। তারা সাধারণত রিয়েল-টাইম উচ্ছেদের আদেশ প্রদান করে থাকে।

কাউন্টি মেয়র রিচার্ড বিসেন শুক্রবার এনবিসির ‘টুডে’ শোতে বলেছিলেন, সাইরেন বন্ধ হয়ে গেছে কিনা তা তিনি জানেন না তবে বলেছেন আগুন অস্বাভাবিকভাবে দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে। আমি মনে করি এটি অসম্ভব পরিস্থিতি ছিল।

মঙ্গলবার মধ্যরাতের পরপরই শুরু হয় এই দাবানল। প্রথমে লাহাইনা থেকে প্রায় ৫৬ কিলোমিটার দূরে কুলা শহরে একটি ব্রাশ ফায়ারের খবর পাওয়া যায়। বাসিন্দাদের মতে এর প্রায় পাঁচ ঘণ্টা পর সেই সকালে লাহাইনায় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়। তখন থেকেই মাউই কাউন্টির শত শত চারণভূমি আগুনে পুড়ে গেছে।

তবে বিকেল নাগাদ পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে ওঠে। কাউন্টির হালনাগাদ অনুযায়ী, বেলা সাড়ে ৩টার দিকে লাহাইনার আগুন হঠাৎ জ্বলে ওঠে। শহরের পশ্চিম দিকে হোটেলের অতিথিসহ লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয় নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হলে কিছু বাসিন্দা সরে যেতে শুরু করে।

ইত্তেফাক

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com