লাইট ক্যাসল পার্টনার নামে একটি দেশীয় প্রতিষ্ঠানের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে, এ মুহূর্তে দেশে সক্রিয় ১ হাজার ২০০–এর বেশি স্টার্টআপে ১৫ লাখ কর্মী কর্মরত। শুধু তা–ই নয়, প্রতিবছর নতুন ২০০টি স্টার্টআপের সৃষ্টি হচ্ছে। দেশে স্টার্টআপের কোনো স্বীকৃত সংজ্ঞা না থাকলেও যেসব নতুন উদ্যোগের মধ্যে উদ্ভাবনের কারণে দ্রুত বিকশিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এবং যারা তাদের কাজ বা বিকাশের জন্য ডিজিটাল প্রযুক্তিকে কোনো না কোনোভাবে ব্যবহার করছে, তাদেরই স্টার্টআপ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।
অন্যান্য দেশের মতো আমাদের দেশেও মোবাইল ও স্মার্টফোনের বিস্তার এবং ইন্টারনেটের সম্প্রসারণ স্টার্টআপ বিকাশে সহায়তা করছে। দেশে বর্তমানে শতভাগের বেশি মোবাইল ফোনের পাশাপাশি সরকারি হিসাবে ১১ কোটির বেশি জনগোষ্ঠী ইন্টারনেটের আওতায় এসেছে। মহামারিকালে ১৮ লাখ নতুন ব্রডব্যান্ড সংযোগ হয়েছে। দেশে প্রতি দুজনের একজনের এখন মোবাইল ব্যাংকিং হিসাব রয়েছে। এসব কারণে দেশে ডিজিটাল সেবা সম্প্রসারিত হয়েছে এবং করোনার কারণে ঘর থেকে বের হতে না পেরে লোকে এসব সেবায় ক্রমাগত অভ্যস্ত হয়ে উঠছে। ২০২৩ সাল নাগাদ দেশীয় ই-কমার্সের বাজার ২৫ হাজার কোটিতে পৌঁছানোর আশাবাদ রয়েছে। বর্তমানে দেশে দুই হাজারের বেশি ই-কমার্স সাইট এবং ৫০ হাজারের বেশি ফেসবুকভিত্তিক উদ্যোক্তা প্রতিদিন প্রায় ৩০ হাজার পণ্যের স্থানান্তরের সঙ্গে যুক্ত বলে সম্প্রতি সিপিডির একটি গবেষণায় জানা গেছে। মোবাইল ব্যাংকিংয়ের লেনদেনের সংখ্যা একদিকে যেমন কোটি ছাড়িয়েছে, তেমনি তার আর্থিক পরিমাণ দুই হাজার কোটি টাকাও ছাড়িয়ে গেছে।
দশকজুড়ে এ খাতে সরকারের ভূমিকাও আগের তুলনায় ইতিবাচক বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের উদ্যোগে আইডিয়া (আইডিয়া, এন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ, ডিজাইন একাডেমি) প্রকল্প ও বঙ্গবন্ধু ইনোভেশন গ্র্যাটের মাধ্যমে স্টার্টআপগুলোর অনুদান দেওয়া, স্টার্টআপে বিনিয়োগ করার জন্য স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেড নামে সরকারি ভেঞ্চার কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করা, পাঁচ কোটি টাকার পরিশোধিত মূলধন নিয়ে শেয়ারবাজারে যাওয়ার সুযোগ, শেয়ারবাজারে পৃথক এসএমই বোর্ড চালু করা, বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক ভেঞ্চার তহবিল পরিচালনার নীতিমালা প্রণয়ন ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি খাতেও স্টার্টআপ–সহায়ক নানা কর্মকাণ্ড দেখা যাচ্ছে। মোবাইল ফোন সেবাদানকারী তিনটি প্রধান প্রতিষ্ঠান স্টার্টআপ এক্সিলারেটর পরিচালনা করছে।