অভিনয়শিল্পী তাহমিনা সুলতানা মৌ। তিনি ১৯৯৯ সালে মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর ‘চোর চোর’ টেলিছবির মাধ্যমে পেশাদার অভিনয়ে যাত্রা শুরু করেন। এরপর থেকে টানা অভিনয়ের সঙ্গেই আছেন। অভিনয়ের ফাঁকে বিজ্ঞাপন চিত্রেও কাজ করছেন।
সোমবার সকালে নিজের ফেসবুকে একটি পোস্টে তাহমিনা সুলতানা মৌ লিখেছেন- বিদেশে বসে লাল-নীল পাসপোর্ট নিয়ে অনেক কথা বলা যায়। চোর–বাটপারে দেশটা ভরে গেছে? দেশের কী হবে? দেশের মানুষদের কী হবে? দেশের শিল্পীসমাজ কিছুই করছে না? ফেসবুক লাইভে এসে কত কথা…।
মৌ লেখেন- ভাই ও বোনেরা, সবুজ পাসপোর্টটা নেন, লাল–নীল পাসপোর্টটা ছাড়েন, তারপর লম্বা লম্বা কথা বইলেন।
অভিনেত্রী পোস্টে নিজের মতামত জানালেন, প্রায়ই তার এমনটা মনে হতো। দুই মাস ধরে এটা বেড়েছে।
মৌ বলেন, যারা প্রবাসে আছেন, সেখানকার পাসপোর্ট হোল্ডার, তাদের কথা বলছি। তাদের যেন হা হুতাশের শেষ নাই। কথায় কথায় দেশ শেষ হয়ে গেল। আমরা দেশের এমন অবস্থা দেখে মরে যাচ্ছি। কী হবে আমার দেশের। বন্যাকবলিত মানুষের কী হবে- কথা হচ্ছে এই পাসপোর্টধারীরা কয় টাকার ডলার পাঠিয়েছেন।
তিনি লিখেছেন, রেমিট্যান্সযোদ্ধারা কিন্তু পাঠাচ্ছেন, তাদের কথা আলাদা। আমি যেসব পাসপোর্ট হোল্ডারদের চিনি, তারা হয়তো বছরে একবার আসেন বা পাঁচ বছরে একবার আসেন মা–বাবাকে দেখতে। অনেক সময় মা–বাবা মারা গেলেও তা–ও আসেন না। অথচ ওখানে বসে হা-হুতাশ করেই যাচ্ছেন।
আরও লেখেন, তারপর আমাদেরই কিছু সহকর্মী, যারা দেশের বাইরে স্থায়ী হয়েছেন, তারা খোঁচায়ে খোঁচায়ে ‘ওই শিল্পী কিছু বলল না, অমুক শিল্পীও দেখছি কিছুই বলল না, ওই শিল্পীর কোনো ফেসবুক স্ট্যাটাস দেখলাম, মন্তব্যও দেখছি করল না’- এমনটা বলেই যান!
মৌ জানালেন, অন্য পেশাতেও পরিচিত অনেকে আছেন, তাদের নিয়ে কেউ কিছু বলছে না। সব আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু যেন শিল্পীরা।
তাহমিনা মৌ লেখেন- নতুন করে এ আলোচনার শুরুটা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত একটি সাংস্কৃতিক সম্মেলনকে ঘিরে। এ আয়োজনে অংশ নিতে বাংলাদেশ থেকে বেশ কয়েকজন শিল্পী যুক্তরাষ্ট্রে গেছেন।
সেই প্রসঙ্গ টেনে তাহমিনা মৌ বলেন, সেখানে অনুষ্ঠানে যারা গেছেন, তাদের নিয়ে কেউ বলতে শুরু করেছেন, ‘বাংলাদেশে শিল্পীদের কাজ নাই, সেখানে গেছে নাচ করতে, গাইতে, টাকা কামাইতে।’
আরে অনুষ্ঠান কি শিল্পীরা আয়োজন করছে! এটা তো আয়োজকেরা করেছেন, বললে তাদের বলেন। শিল্পীকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে, শিল্পী পেশাদারি কাজ করবে।
২৫ বছর ধরে অভিনয় করছেন তাহমিনা সুলতানা মৌ। চলচ্চিত্র ছাড়া অভিনয়ের সব মাধ্যমে কাজ করেছেন তিনি। তবে প্রস্তাব পাননি যে তা নয়, কিন্তু আস্থা ও বিশ্বাসের ঘাটতি থাকায় নিজের চলচ্চিত্র যাত্রা ওই সময়টায় করেননি। ২০২৪ সালে এসে পেয়েছেন আস্থা ও নির্ভরতা, তাই তো সোহেল আরমানের সিনেমা ‘সংবাদ’ দিয়ে এত বছরের ঘাটতিও পূরণ হয়েছে তার।
বড় বোন বাংলা চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় নায়িকা শাবনাজ। বাবা এসএম হুমায়ুন নাটকের দল ‘নাট্যচক্র’–এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। নিজের পরিচয়ে প্রতিষ্ঠা পেতে চেয়েছেন। এখন পেশাদার অভিনয়শিল্পী তিনি।