যশোরের বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে স্থলপথে চলাচল করা পাসপোর্টধারী যাত্রীদের কাছ থেকে আজ শনিবার থেকে ভ্রমণকর বাবদ এক হাজার টাকা করে আদায় করছে প্যাসেঞ্জার টার্মিনালে অবস্থিত সোনালী ব্যাংক বুথ। এর সাথে আরো ৫২ টাকা পোর্ট ফি প্রদান করতে হচ্ছে। অর্থাৎ বাংলাদেশ বা ভারতে ভ্রমণে যাত্রীদের গুণতে হচ্ছে মোট ১,০৫২ টাকা। সরকারের এ ধরনের সিদ্ধান্তর কারণে বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছেন যাত্রীরা।
এর আগে ভ্রমণকর বাবদ ৫০০ টাকা এবং ৫২ টাকা পোর্ট ফি নেয়া হতো। আজ শনিবার (০১ জুলাই) সকাল থেকে ভ্রমণকর বাবদ ১,০০০ টাকা করে নেয়া হচ্ছে। সাথে নেয়া হচ্ছে পোর্ট ট্যাস্কের ৫২ টাকাও।
চলতি ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত বাজেট পেশ করেন। প্রস্তাবিত বাজেটে বিদেশ ভ্রমণে ভ্রমণকর দ্বিগুণ করার প্রস্তাব পেশ করেন এবং তা কার্যকর করা হয়েছে।
বর্তমানে প্রতিদিন বেনাপোল বন্দর দিয়ে হাজার হাজার বাংলাদেশি যাত্রী ভারতে চিকিৎসা, লেখাপড়া, ভ্রমণ, ব্যবসা সংক্রান্ত ও আত্মীয়-স্বজনের বাড়ি বেড়াতে যান। ভারতীয় নাগরিকরাও একইভাবে বাংলাদেশে আসেন।
ভারতীয়যাত্রী কৃষ্ণপদ বলেন, গত ২০ জুন বাংলাদেশের গোপালগঞ্জে আত্মীয়ের বাড়ি বেড়াতে এসেছিলাম। আজ ভারতে ফিরে যাওয়ার জন্য ব্যাংকে ভ্রমণকর জমা দিতে গেলে ১,০০০ টাকা ভ্রমণকর পরিশোধ করতে হয়েছে। সাথে আরো পোর্ট ফি ৫২ টাকা নিয়েছে। মোট ১,০৫২ টাকা দিতে হলো। এক মাস আগে যখন এসেছিলাম তখন নিয়েছিল ৫৫২ টাকা। এ সময় ভারত ভ্রমণে বেশির ভাগ যাত্রী বর্ধিত ভ্রমণকর প্রত্যাহারের দাবি জানান।
ঢাকার এক যাত্রী বলেন, পাসপোর্টে ভারত ও বাংলাদেশ চলাচলে বর্ধিত ভ্রমণকর প্রত্যাহার করা দরকার। তাহলে দুই দেশের মধ্যে আরও মানুষজন চলাচল বাড়বে। ভ্রমণকর বাড়ানো ঠিক হয়নি।
বেনাপোল ইমিগ্রেশন চেকপোস্টের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আহসান হাবীব বলেন, ভ্রমণকরের বিষয়ে যাত্রীরা অফিসে এসে জানতে চাইলে বলেছি, এ ব্যাপারে আমার কাছে কোনো নির্দেশনা আসেনি। এটা সরকারের বিষয়। তবে বিভিন্ন মাধ্যমে শুনেছি, এবার বাজেটে ভ্রমণকর ১,০০০ টাকা করা হয়েছে। পরে যাত্রীরা ১,০০০ টাকা করে ভ্রমণকর দিয়ে যাতায়াত করছেন।
এদিকে বেনাপোল বন্দরের পরিচালক আব্দুল জলিল বলেন, ‘২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে ভ্রমণকর ১,০০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এটি আজ শনিবার থেকে বেনাপোল বন্দরে কার্যকর করা হয়েছে। আগে ৫০০ টাকা ভ্রমণকর পরিশোধ করে যাত্রীরা আসা-যাওয়া করতে পারতেন।’
কাস্টমসের একটি সূত্র জানায়, ১২ বছর পর্যন্ত যাত্রীদের ভ্রমণকর অর্ধেক করা হয়েছে। এ ছাড়া পাঁচ বছর বা তার চেয়ে কম বয়সী যাত্রী, অন্ধ ব্যক্তি, ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগী বা স্ট্রেচার ব্যবহারকারী বা পঙ্গু ব্যক্তিরা ভ্রমণকর ছাড়াই ভারত ভ্রমণ করতে পারবে।