ডলার-সংকটে রেমিট্যান্স বাড়াতে নানা উদ্যোগ নিচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কিন্তু বৈধপথে রেমিট্যান্স সংগ্রহে গত মাসে ভাটা পড়েছে। এক মাসের ব্যবধানে ৫ কোটি ডলার রেমিট্যান্স কম এসেছে। যদিও করোনার পর থেকে প্রতি মাসেই বিদেশে জনসংখ্যা পাঠানো অব্যাহত রয়েছে। বেড়েই চলেছে প্রবাসীর সংখ্যা। সেই অনুপাতে রেমিট্যান্স বাড়ছে না। যার নেপথ্যে রয়েছে রেমিট্যান্স পাঠাতে জটিলতা এবং হুন্ডিতে বাড়তি দাম পাওয়া।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন অনুযায়ী, নভেম্বর মাসে ব্যাংকিং চ্যানেলে ১৯৩ কোটি ডলার (১ দশমিক ৯৩ বিলিয়ন) ডলার দেশে এসেছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ (প্রতি ডলার ১০৯ টাকা ৭৫ পয়সা ধরে) ২১ হাজার ১৮২ কোটি টাকা। তার আগের মাস অক্টোবরে প্রবাসীরা ব্যাংকিং চ্যানেলে দেশে ১৯৭ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন, যা গত চার মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। তবে অক্টোবরের তুলনায় নভেম্বরে রেমিট্যান্স কম এসেছে প্রায় ৫ কোটি ডলার।
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ও রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্ট রিসার্চ ইউনিটের (রামরু) প্রতিষ্ঠাতা চেয়ার ড. তাসনিম সিদ্দিকী বলেন, করোনার পরেই প্রবাসী বেড়েছে। যাঁদের বড় একটি অংশ শ্রমিক হিসেবে গিয়েছেন। তাঁদের অনেকের আয় বৈধ পথে হয় না। আবার ব্যাংকে পাঠাতে জটিলতা রয়েছে। কিন্তু হুন্ডিওলাদের তাঁরা সহজে পান এবং রেটও তুলনামূলক বেশি। এ জন্য ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স বাড়ছে না।
বাংলাদেশ জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) তথ্য বলছে, ২০২৩ সালে ৮ লাখের বেশি বাংলাদেশি শ্রমিক হিসেবে বিদেশে গেছেন। ২০২২ সালে বিদেশগামী শ্রমিকের সংখ্যা ছিল ১১ লাখ ৩৫ হাজার ৮৭৩। এর আগে ২০২১ সালেও ৬ লাখ ১৭ হাজার ২০৯ বাংলাদেশি শ্রমিক অভিবাসী হয়েছেন। সব মিলিয়ে করোনার পরে বিদেশের শ্রমবাজারে নতুন করে ২৫ লাখ বাংলাদেশি যুক্ত হয়েছেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, নভেম্বর মাসে রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ১৪ কোটি ৪২ লাখ ৬০ হাজার ডলার, বিশেষায়িত দুই ব্যাংকের মধ্যে এক ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৫ কোটি ৩১ লাখ ৮০ হাজার ডলার। বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ১৭২ কোটি ৬৬ লাখ ৮০ হাজার ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৫৯ লাখ ২০ হাজার ডলার। তবে ৭ ব্যাংকের মাধ্যমে কোনো রেমিট্যান্স আসেনি।