প্রতি বছর প্রায় ৩০ হাজারের বেশি মানুষ আমেরিকা ভ্রমণে আসেন তাদের সন্তান জন্ম দেয়ার জন্য। সন্তান জন্মের পর তারা সন্তানের পাসপোর্ট নিয়ে আবার নিজ নিজ দেশে চলে যান। সন্তানের বয়স ২১ বছর হলে তাদের মাধ্যমেই পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের জন্য আবেদন করা হয়। আমেরিকায় বেড়াতে এসে জন্ম নেয়া সন্তানের মা-বাবা নথিপত্রহীন অভিবাসী হলে, তাদের নাগরিকত্ব না দেওয়ার নির্বাহী আদেশ জারি করতে পারেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। জানা গেছে, বিদায় বেলায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগত নাগরিকত্বের অধিকার আইনে পরিবর্তন আনার চেষ্টা করছেন। তিনি এমন একটি নির্বাহী আদেশ জারির প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে। ট্রাম্প প্রশাসনের একাধিক ঘনিষ্ঠ সূত্রের বরাত দিয়ে প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম দ্য হিল গত ২০ নভেম্বর এ নিয়ে প্রতিবেদনে প্রকাশ করেছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পরই এমন একটা নির্দেশনা জারি করার কথা বলেছিলেন। মার্কিন সংবিধানের ১৪তম সংশোধনীতে বলা আছে, যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে বা যুক্তরাষ্ট্রের যেকোনো রাষ্ট্রীয় স্থাপনায় জন্ম নেয়া যে কেউ যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব পেয়ে যাবে। যদিও কোথাও বলা নেই, এমন জন্মের সময় মা-বাবা বা তাঁদের অন্তত একজনকে যুক্তরাষ্ট্রের বৈধ অভিবাসী হতে হবে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাইডেন প্রশাসন ক্ষমতা গ্রহণের আগেই ডোনাল্ড ট্রাম্প এ নিয়ে নির্দেশনা জারি করতে পারেন। এমন নির্দেশনা জারি হলে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই বিষয়টি নিয়ে আদালতে যাবে অভিবাসী গ্রুপগুলো। সংবিধানের এ বিষয়টি অস্পষ্ট মনে করেন ট্রাম্প সমর্থকেরা। অভিবাসন নিয়ন্ত্রণের পক্ষগুলোর সমর্থন নিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই নির্বাহী আদেশ জারির প্রয়াস নিচ্ছেন। এ নির্বাহী আদেশ চ্যালেঞ্জ করে আদালতের রক্ষণশীল পক্ষ থেকে নিজেদের পক্ষে রায় পাওয়ার আশা করছে অভিবাসনবিরোধী পক্ষগুলো।
বিভিন্ন তথ্যে জানা গেছে, প্রতি বছর নানা দেশ থেকে ৩০ হাজারের বেশি মানুষ সন্তান জন্ম দিতে যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে আসেন। সন্তান জন্মের পর তার নাগরিকত্ব নিয়ে অনেকেই আবার চলে যান। সন্তানের বয়স ২১ বছর হলে তাঁরা আবার মা-বাবার অভিবাসনের জন্য আবেদন করতে পারেন। যদিও উদারনৈতিক মহল থেকে বলা হচ্ছে, সংবিধান এ নিয়ে স্পষ্ট অবস্থানে আছে। তাঁরা মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নেওয়া সন্তান কোনো প্রশ্ন ছাড়াই নাগরিকত্ব পাওয়ার যোগ্য।
ট্রাম্প প্রশাসন ক্ষমতায় আসার পর এমন ‘বার্থ টুরিজম’ বন্ধের প্রয়াস নেয়া হয়েছে। এতদিন তা কার্যকর করা হয়নি। শেষ বেলায় এসে ট্রাম্প নতুন করে উদ্যোগ নিচ্ছেন।
Facebook T