যুক্তরাজ্য ২০২২ সালে সর্বোচ্চ ৬ লাখ ৬ হাজার অভিবাসী নিয়েছে। দেশটির সাম্প্রতিক ইতিহাসে এটি একটি রেকর্ড। এ নিয়ে চাপের মুখে রয়েছে যুক্তরাজ্য সরকার। কারণ, আগে থেকেই বিদেশি শ্রমিকদের ওপর নির্ভরশীলতা কমানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসছিল ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ দল।
বৃহস্পতিবার ২০২২ সালে অভিবাসীর সংখ্যা প্রকাশ করা হয়। দেশটির জাতীয় পরিসংখ্যান অফিসের (ওএনএস) আন্তর্জাতিক অভিবাসন সেন্টারের পরিচালক জে লিনডপ বলেন, ২০২২ সালজুড়ে ধারাবাহিকভাবে ঘটে যাওয়া নজিরবিহীন সব ঘটনা ও করোনা মহামারির পর বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার ফলে যুক্তরাজ্যে রেকর্ড পরিমাণ আন্তর্জাতিক অভিবাসন হয়েছে।
এই অভিবাসীরা কোন কোন দেশ থেকে বেশি এসেছেন, তার একটি ধারণা দিয়েছেন জে লিনডপ। তাঁর ভাষ্যমতে, ২০২২ যুক্তরাজ্যে সবচেয়ে বেশি অভিবাসী গেছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত নয়, এমন দেশ থেকে। তাঁরা মূলত চাকরি, পড়াশোনা ও মানবিক বিভিন্ন কারণে দেশটিতে বসবাস শুরু করেছেন।
যুক্তরাজ্যে যাওয়া অভিবাসীদের মধ্যে রয়েছেন রাশিয়ার হামলার মুখে ইউক্রেন থেকে পালিয়ে যাওয়া লোকজনও। এ ছাড়া হংকংয়ের অনেক বাসিন্দাও ২০২২ সালে যুক্তরাজ্যে গিয়েছেন। হংকংয়ে নাগরিক অধিকারের ওপর চীনের দমন–পীড়ন শুরুর পর সেখানকার বাসিন্দাদের যুক্তরাজ্যে প্রবেশের ক্ষেত্রে শিথিলতার সুযোগ দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া ২০১৮ সাল থেকে ছোট ছোট নৌকায় করে সাগর পাড়ি দিয়ে দেশটিতে আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টা করেছেন বহু শরণার্থী। ২০২২ সালে যুক্তরাজ্যে অভিবাসন নেওয়া ব৵ক্তিদের মধ্যে এমন ৪৫ হাজারের বেশি শরণার্থী রয়েছেন বলে জানিয়েছে দেশটির সরকার।
যুক্তরাজ্যে বহুদিন ধরেই বড় রাজনৈতিক ইস্যু হিসেবে কাজ করছে অভিবাসন। ২০১৬ সালে ব্রেক্সিট গণভোটের সময় আলোচনার মূলে ছিল বিষয়টি। ব্রেক্সিটের মাধ্যমে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ত্যাগ করে যুক্তরাজ্য। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ত্যাগের মাধ্যমে যুক্তরাজ্য অভিবাসনে লাগাম টানতে পারবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসছিল দেশটির ক্ষমতাসী কনজারভেটিভ দল। সেই প্রতিশ্রুতির মধ্যেই গত বছর অভিবাসী গ্রহণে রেকর্ড হলো।