শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৪৮ অপরাহ্ন

হাসিনার পতনে সম্মতি ছিল নরেন্দ্র মোদির

  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ১৫ অক্টোবর, ২০২৪

রেন্দ্র মোদির সম্মতিতেই কি হাসিনার পতন? এই প্রশ্নটি হঠাৎই সামনে চলে এসেছে। এমন আলোচনা শুরু হয়েছে এই জন্যে যে, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পিনাক রঞ্জন চক্রবর্তী দাবি করেছেন- ভারত সরকার শেখ হাসিনার পতনের বিষয়টি জানতো। বাংলাদেশে একসময় হাইকমিশনারের দায়িত্ব পালন করা পিনাক রঞ্জন চক্রবর্তী সর্বশেষ ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সচিব ছিলেন।

ভারতের অত্যন্ত শক্তিশালী ইংরেজি দৈনিক ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে পিনাক রঞ্জন চক্রবর্তী দাবি করছেন, ভারত সরকার বুঝে ফেলেছিল, তারা জেনে গিয়েছিল শেখ হাসিনা আর ক্ষমতায় থাকতে পারবেন না। তার পতন অবশ্যম্ভাবী। এই কথাটি যদি দিল্লির সাউথ ব্লকের এক সময়কার অত্যন্ত প্রভাবশালী কর্মকর্তা পিনাক রঞ্জন চক্রবর্তী বলেন তখন ধরেই নিতে হবে এর কোন না কোন সত্যতা আছে।

প্রশ্ন হচ্ছে, দিল্লির অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ শেখ হাসিনা সরকারের পতনের এমন আগাম আভাস পেয়েও কেনো মোদি সরকার শেখ হাসিনাকে সতর্ক করেনি? প্রশ্ন, কেনো তারা শেখ হাসিনা সরকারের পতন রোধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি? তাহলে কি ধরে নিতে হবে খোদ নরেন্দ্র মোদিও চাইছিলেন শেখ হাসিনার পতন হোক? যদি সেটাই হয় তাহলে তিনি কেনো শেখ হাসিনার পতন চাইলেন বা চাইবেন? ভারতের অনেক গুরুত্বপূর্ণ স্বার্থ শেখ হাসিনা দ্বারা যতটা সহজে রক্ষা হচ্ছিল সেই স্বার্থের দিকে তাকিয়ে হলেও আওয়ামী লীগ সরকারকে রক্ষার সর্বাত্মক চেষ্টাই বিজেপি সরকারের করার কথা। কিন্তু বাংলাদেশে ভারতের হয়ে হাইকমিশনার এবং তার আগে উপ-হাইকমিশনারের দায়িত্ব পালন করা পিনাক রঞ্জন চক্রবর্তীর ব্যাখ্যা হচ্ছে- প্রায় ১৬ বছর দায়িত্ব পালন করা শেখ হাসিনা এতটাই আত্মবিশ্বাসী, এতটাই বেপরোয়া হয়ে উঠেছিলেন যে তিনি কোনো কথার পরোয়া করতেন না। ভারত যদি তাকে বা মোদি সরকার যদি তাকে সতর্ক করতো তিনি শুনতেন না। তিনি তার খেয়াল খুশি মতোই কাজ করতেন। শেখ হাসিনার একগুঁয়েমি মনোভাব তার স্বৈরাচারী আচরণ, তার এই পতনের জন্য দায়ী পিনাক রঞ্জন চক্রবর্তীর সাক্ষাৎকার পড়লে এমনটাই মনে হয়।

কিন্তু এরপরেও রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের প্রশ্ন মোদী জেনে বুঝে শেখ হাসিনার পতন চাইবেন সেটাও তো যথেষ্ট কৌতূহল জাগানো বিষয়। তাহলে বিষয়টা কি এমন শেখ হাসিনা বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মোদীর নিয়ন্ত্রণ বা মোদির কথার বাইরে গিয়ে এমন অনেক কিছু করছিলেন যা কিনা তিনি সহ্য করতে চাননি বা সহ্য করতে পারেননি। বিশেষ করে থেকে থেকে শেখ হাসিনা ভারত ও চীনের মধ্যে যে ভারসাম্যমূলক কূটনৈতিক সম্পর্ক রক্ষা করছিলেন সেটিও দিল্লি পছন্দ করছিল না। দিল্লির মোদি সরকার তার মধ্যে একটা ধারণাই জন্ম নিয়েছিল যে, হাসিনা সরকার শুধুমাত্র ভারতের স্বার্থকেই সর্বাধিক প্রাধান্য দেবে এবং ভারত যেভাবে চাইবে সেভাবেই হাসিনার কুটনৈতিক তৎপরতা থাকবে।

যেহেতু ভারতের একজন সাবেক ঊর্ধ্বতন কূটনীতিক পিনাক রঞ্জন চক্রবর্তী তিনি দায়িত্ব নিয়ে বলছেন, ভারত সরকার জানতো শেখ হাসিনার পদত্যাগের আগাম আভাস মোদি সরকার পেয়েছিল। সেহেতু আমাদের এটাই ধরে নিতে হবে শেষ দিকে গিয়ে নরেন্দ্র মোদিও বিরক্ত হয়েছিলেন এবং শেখ হাসিনার স্বৈরাচারী আচরণ, স্বৈরাচারী মনোভাব, একগুঁয়েমি নীতি তিনিও মেনে নিতে পারেননি, মেনে নিতে চাননি।

তাহলে সকল স্বৈরাচারী শাসকের জন্যে এই ঘটনার শিক্ষণীয় নয় কি? দেখা যাক শেষমেশ কি হয়?

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com