ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাবেক অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ তার ‘ভাতের হোটেল’-এর জন্য ব্যাপক আলোচিত হন। ডিবি কার্যালয়ে আসা বিভিন্ন ব্যক্তিকে ভাত খাওয়ানোর ভিডিও করে তিনি তুমুল সমালোচনার জন্ম দিয়েছিলেন। পরে তার কর্মকাণ্ডকে ‘দুষ্টুমি’ বলে অনেকে ‘হারুনের ভাতের হোটেল’ নামকরণ করেন। হারুনও একাধিক সাক্ষাৎকারে এই নাম উপভোগ করেছিলেন।
২০২২ সালের জুলাই মাসে হারুন অর রশীদ ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব নেন। ২০২৩ সালের ২৯ জুলাই আওয়ামী লীগ সরকারবিরোধী আন্দোলনের সময় বিএনপি নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায় আটক হন। তাকে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে গিয়ে হারুন নিজে খাবার তুলে দেন এবং এটি ভিডিও করে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন। এরপর থেকেই ‘হারুনের ভাতের হোটেল’ নামটি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।
এই ভিডিও প্রচারের পর ডিবি কার্যালয়ে বিভিন্ন ব্যক্তিকে আপ্যায়ন করার ঘটনা নিয়মিত হয়ে ওঠে এবং হারুন নিজেই বলেন, “এটা আমাদের মানবিক দিক।” তবে এই কর্মকাণ্ডের কারণে ডিবির ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষুণ্ন হয়েছিল। বিভিন্ন বিতর্কের মাধ্যমে ডিবি হাস্যরসে পরিণত হয়।
হারুন অর রশীদের পলাতক হওয়ার পর বর্তমানে ডিবির দায়িত্বে আছেন রেজাউল করিম মল্লিক। তিনি বলেছেন, “ভাতের হোটেল আর ফিরবে না।” তার মতে, হারুনের কর্মকাণ্ডের কারণে ডিবির ভাবমূর্তি অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল এবং এখনকার ডিবি মানুষের আস্থা ও ভরসার ডিবি হয়ে উঠেছে।
বর্তমানে হারুনের ‘ভাতের হোটেল’ হিসেবে পরিচিত কক্ষটি ডিবি কার্যালয়ের পুরনো ভবনের দোতলায় অবস্থিত। সেখানে বর্তমানে ছোট সভা এবং আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। ডিবির প্রধান রেজাউল করিম মল্লিক জানান, এখনকার ডিবি পেশাদার কাজের মাধ্যমে ভরসার জায়গা হয়ে উঠেছে, যা হারুনের আমলে ছিল না।
এখন ‘ভাতের হোটেল’ কক্ষে আর খাবারের ব্যবস্থা নেই; এটি শুধু ডিবির কাজকর্মের জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে।