এমন একদিন কি আসবে যেদিন বস্তুটির প্রয়োজন ফুরিয়ে যাবে? এই প্রশ্নের উত্তরে ‘হ্যাঁ’ বলা লোকের সংখ্যা যে হাতেগোনা সেটা বেশ অনুমান করা যায়। ঠিক একইভাবে আজ থেকে ২-৩ দশক আগে ডেস্কটপ কম্পিউটার নিয়ে কেউ এমন প্রশ্ন করলে ‘হ্যাঁ’ উত্তর দেওয়া লোকের সংখ্যাটাও কাছাকাছিই হতো। অথচ আজ ‘ডেস্কটপ ছাড়া চলবে না’ এমনটা হয়তো কেউ বলবে না।
স্মার্টফোনের প্রভাব আমাদের জীবনে ব্যাপক। বহির্বিশ্বের সাথে যোগাযোগ রক্ষার্থে এই বস্তুটির কোনো বিকল্প নেই বললেই চলে। তাই স্মার্টফোনের প্রয়োজন একদিন ফুরিয়ে যাবে, এমনটা ভাবা আজকের দিনে দাঁড়িয়ে বেশ দুষ্করই বটে।
কিন্তু জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া প্রতিষ্ঠান মেটার প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী মার্ক জাকারবার্গ অবশ্য মনে করেন স্মার্টফোনের প্রয়োজন একদিন ফুরোবে। কবে নাগাদ সেটা হতে পারে তাও জানিয়েছেন এই মার্কিন প্রযুক্তিবিদ। পাশাপাশি তিনি এও জানিয়েছেন যে, স্মার্টফোনের জায়গা নেবে অন্য একটি উদ্ভাবনী প্রযুক্তি পণ্য বা অত্যাধুনিক ডিভাইস। কী সেই প্রযুক্তি পণ্য আর কবে নাগাদ স্মার্টফোনের যুগ শেষ হতে চলেছে চলুন সেটাই জেনে নেওয়া যাক।
মার্ক জাকারবার্গ মনে করেন একদিন স্মার্টফোনের জায়গা নিবে স্মার্টগ্লাস। পরবর্তী প্রজন্মের কম্পিউটিং প্ল্যাটফর্ম হতে চলেছে এই স্মার্টগ্লাস। তবে হঠাৎ করে নয় বরং পর্যায়ক্রমে কমে আসবে স্মার্টফোনের ব্যবহার এবং বেড়ে যাবে স্মার্টগ্লাস গ্রহণের প্রবণতা। স্মার্টফোন থেকে স্মার্টগ্লাস- প্রযুক্তি জগতের বৈপ্লবিক এই পরিবর্তন ২০৩০’র দশকেই হতে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন মেটার স্বত্বাধিকারী।
জাকারবার্গ বলেন, ‘একটা সময় আসবে যখন আমাদের স্মার্টফোন পকেটের বাইরে কম ভেতরে থাকবে বেশি। আমি মনে করি এটা ২০৩০’র দশকে হবে। আপনি হয়তো একটি কাজ ফোনে আরও ভালো করে ও পরিপূর্ণভাবে করতে পারেন কিন্তু তারপরেও ব্যবহারের সুবিধার্থে ইউজাররা গ্লাস ব্যবহার করতে শুরু করবেন।’
মেটার ‘ওরিয়ন’ এআর গ্লাস
গত সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিত ‘মেটা কানেক্ট’ ইভেন্টে প্রতিষ্ঠানটি তাঁদের বহুল-আলোচিত ‘ওরিয়ন’ স্মার্টগ্লাস প্রদর্শন করেছে। অগমেনটেড রিয়ালিটি (বর্ধিত বা উদ্দীপিত বাস্তবতা) বা এআর প্রযুক্তিতে তৈরি ওরিয়ন এআর গ্লাসকে জাকারবার্গ এখন পর্যন্ত পৃথিবীর ‘সবচেয়ে আধুনিক গ্লাস’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। তবে এর বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হতে আরও বছর দুয়েক সময় লাগতে পারে বলে জানা গেছে।
মেটার পাশাপাশি অ্যাপলের এআর স্মার্টগ্লাস ‘ভিশন প্রো’ ইতোমধ্যেই বাজারে এসেছে। এছাড়া চীনের কয়েকটি প্রতিষ্ঠানও সাম্প্রতিক সময়ে স্মার্টগ্লাস তৈরিতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি দেখিয়েছে।
এখন দেখার বিষয় জাকারবার্গের করা ভবিষ্যৎবাণী কতটা সত্য প্রমাণিত হয়।
তথ্যসূত্র: মার্কা, দ্য ভার্জ, মেটা