সৌদি আরবের জেদ্দা বিমানবন্দরে বিপুল পরিমাণ অবৈধ স্বর্ণসহ এফ এস জিয়াউল নামে বিমানের এক কেবিন ক্রুকে আটক করেছে দেশটির পুলিশ। রোববার রাত ১টায় জেদ্দা-ঢাকা বিজি ১৩৬ নম্বর ফ্লাইট ছাড়ার আগ মুহূর্তে এ ঘটনা ঘটে।
বিমানের কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, এ ঘটনায় পুলিশের হেফাজতে থাকা বিমানের ওই কর্মীকে রেখে প্রায় দেড় ঘণ্টা পর ফ্লাইট নিয়ে বুধবার দুপুর একটায় ঢাকায় ফিরেছেন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পাইলট।
তারা বলেন, বিমানের এ ফ্লাইটে যাত্রী ছিলেন ৪১৭জন। নিয়ম অনুযায়ী ফ্লাইটে সর্বনিম্ন ১০ জন ক্রু থাকার কথা। সেখানে একজন ক্রু কম থাকার কারণে জেদ্দা বিমানবন্দর থেকে ফ্লাইট ডিপারচার নিয়ে বিপাকে পড়েন বিমানের ক্যাপ্টেন খাজা। এ সময় বাংলাদেশ সিভিল এভিয়েশনের ইন্সপেক্টর ক্যাপ্টেন মাজেদ দায়িত্ব নিয়ে ৯ জন ক্রু নিয়ে দেড় ঘণ্টা দেরিতে ফ্লাইট নিয়ে ঢাকায় অবতরণ করেন। দেরি হওয়ায় অনেক যাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়েন।
অন্যদিকে বিমানের এক নারী কেবিন ক্রুর বিরুদ্ধে ফ্লাইটের ভেতর ধূমপান করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ফ্লাইট থেকে তাকে গ্রাউন্ডেড করা হয়েছে। বর্তমান তার বিরুদ্ধে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স সূত্রে জানা যায়, যাত্রীসেবার নামে স্বর্ণসহ বিভিন্ন চোরাচালানে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ উঠেছে এক শ্রেণির বিমান কর্মীর বিরুদ্ধে। প্রায়ই অবৈধ স্বর্ণসহ বিদেশে নিরাপত্তা কর্মীদের হাতে আটক হন বিমানের অসাধু কর্মীরা। এতে করে বিদেশে ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে জাতীয় পতাকবাহী বিমানের।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিমানের এক কর্মকর্তা জানান, রোববার রাতে জেদ্দা বিমানবন্দরে নিরাপত্তা গেট দিয়ে প্রবেশ করার সময় কেবিন ক্রু জিয়াউলের লাগেজে স্বর্ণসহ অবৈধ পণ্যের উপস্থিতি ধরা পড়ে। তাকে আটক করে জেদ্দার পুলিশ। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে ওই কেবিন ক্রুকে রেখে ফ্লাইট নিয়ে ঢাকায় চলে আসেন বিমানের কর্তব্যরত পাইলট।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিমানের মহাব্যবস্থপক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা তাহেরা খন্দকার বলেন, জেদ্দা বিমানবন্দরে অবৈধ স্বর্ণসহ আটক বিমানের কেবিন ক্রু জিয়াউলের বিষয়টি এখনও জানা যায়নি। তবে এ বিষয়টি বিমান কর্তৃপক্ষ্য জানার পর জানা যাবে।
এদিকে বিমানের প্রধান কার্যালয় বলাকা ভবনে এক অনুষ্ঠানে বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমডি ও সিইও শফিউল আজিম সাংবাদিকদের জানান, সম্প্রতি বিমানের ভেতর এক নারী কেবিন ক্রুর ধুমপানের বিষয়টি তদন্ত চলছে। বর্তমানে বিমান থেকে ওই কর্মীকে গ্রাউন্ডেড করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বিমানে দুর্নীতি করে পার পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। স্বর্ণ চোরাচালানসহ যে কোনো অভিযোগের বিষয়ে জড়িত কর্মীকে শাস্তি পেতেই হবে।
এর আগে জেদ্দা বিমানবন্দরে অবৈধ স্বর্ণ ও মুদ্রাসহ পুলিশের হাতে আটক হয়ে চাকুরি খুইয়েছেন রুহুল আমিন শুভ নামে বিমানের এক কেবিন ক্রু।