বছরেরর ১০ মাসই যদি সেখানে পর্যটন বন্ধ থাকে, এটা কোনো কাজের কথা হবে না। বরং পরিবেশ সুরক্ষা তথা দ্বীপের বৈশিষ্ট্য ও প্রাণ-প্রকৃতি বাঁচিয়ে কীভাবে সারা বছরই সেন্ট মার্টিনের পর্যটন চালু রাখা যায়, সেই ব্যবস্থা করা দরকার। এখানে কোনো ধরনের ‘হাইড অ্যান্ড সিক’ করলে মানুষের মনে সন্দেহ তৈরি হবে।
সেন্ট মার্টিনে মার্কিন নৌবাহিনীর ঘাঁটি হবে কি হবে না কিংবা এখানে নৌঘাঁটি করা আদৌ সম্ভব কি না— সেটি অন্য তর্ক। বরং এই তর্ক করতে গিয়ে সেন্ট মার্টিন ইস্যুতে মূল আলোচনাটি হারিয়ে যাচ্ছে।
সম্প্রতি সেন্ট মার্টিনে পর্যটন নিয়ন্ত্রিত করতে সরকার যে পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে সেটি এরকম: নভেম্বর মাসে পর্যটকরা যেতে পারবেন, কিন্তু রাত্রি যাপন করা যাবে না। ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে পর্যটকরা যেতে পারবেন এবং রাতেও থাকতে পারবেন, কিন্তু প্রতিদিন দুই হাজারের বেশি নয়। আর ফেব্রুয়ারিতে সেন্ট মার্টিন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার কাজে পর্যটক যাওয়া বন্ধ থাকবে। বাকি ৮ মাস কী হবে সেটি পরিষ্কার করে না বলা হলেও বাস্তবতা হলো, ওই সময়গুলোয় পর্যটকরা সেন্ট মার্টিনে যেতে পারবেন না।
এ মুহূর্তে সেন্ট মার্টিনের পরিস্থিতি নিয়ে বলা হচ্ছে: ১. সেখানে সাগরে মাছ ধরা বন্ধ; ২. পর্যটক আসা সম্পূর্ণ বন্ধ; ৩. তিন মাস ধরে হাসপাতালের কার্যক্রম বন্ধ এবং ৪. বিদ্যুৎ সরবরাহ সম্পূর্ণ শাটডাউন।
এসব কারণে অনেকেই সন্দেহ করছেন সরকার এই দ্বীপ নিয়ে বড় পরিকল্পনা করছে কি না বা এখানে পর্যটন পুরোপুরি বন্ধ করে দিতে চায় কি না? এ নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায়ও নানা ধরনের কথাবার্তা ছড়ানো হচ্ছে। এ বিষয়ে এরইমধ্যে ব্যাখ্যা দিয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে বলা হয়েছে, সেন্ট মার্টিন কোনো দেশের কাছে লিজ দেওয়ার পরিকল্পনা নেই।
সরকারের যুক্তি কী?
সরকার ও পরিবেশবাদীদের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, অনিয়ন্ত্রিত পর্যটনের কারণে সেন্ট মার্টিনে উচ্চ তাপমাত্রার পাশাপাশি লবণাক্ততা বৃদ্ধি, বন উজাড়, দূষণ, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, কচ্ছপের আবাস ধ্বংস, প্লাস্টিকের ব্যবহার, মিঠাপানির সংকট, জোয়ারে সমুদ্রভাঙনসহ নানা বিপদ দেখা দিয়েছে। কয়েক মাস ধরে দ্বীপে আরেকটি নতুন বিপদ হাজির হয়েছে। সেখানে দেখা দিয়েছে মারাত্মক ক্ষতিকর সাদা মাছির উৎপাত। এই মাছি দ্বীপের গাছপালা ধ্বংস করছে। এরকম বাস্তবতায় সেখানে পর্যটকদের নিয়ন্ত্রণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। তাছাড়া জীববৈচিত্র্য রক্ষায় পরিবেশ অধিদপ্তর ১৯৯৯ সালে সেন্ট মার্টিনকে প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) ঘোষণা করে। সর্বশেষ গত বছরের ৪ জানুয়ারি বন্যপ্রাণি (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন অনুযায়ী, সেন্ট মার্টিন সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরের ১,৭৪৩ বর্গকিলোমিটার এলাকাকে সংরক্ষিত এলাকা হিসেবে ঘোষণা করে পরিবেশ মন্ত্রণালয়।
পর্যটন সংশ্লিষ্টরা কী বলছেন?
অন্যদিকে পর্যটন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সেন্ট মার্টিনের স্থানীয় অধিবাসীদের প্রায় শতভাগ মানুষ কোনো না কোনোভাবে পর্যটনের ওপর নির্ভরশীল। দেশের প্রায় ৫ লাখ পর্যটন ব্যবসায়ী সেন্ট মার্টিনের ওপর নির্ভরশীল। বছরের চার থেকে পাঁচ মাস পর্যটন চালু থাকলেও সেই আয় দিয়ে তাদের পুরো বছর চলা যেখানে কঠিন, সেখানে আরও বেশি নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হলে অনেকেই ব্যবসা ছেড়ে দেবেন এমনকি স্থানীয় মানুষদের অনেকেই পেশা বদল করার জন্য শহরে চলে যাবেন। অর্থাৎ একধরনের বাস্তুচ্যুতি ঘটবে।
বাস্তবতা হলো, নভেম্বর মাসে যদি সেন্ট মার্টিনে গিয়ে রাতে থাকা না যায় তাহলে এখানে এই মাসে কেউ যেতে আগ্রহ দেখাবে না। ঢাকা বা দেশের অন্য কোনো প্রান্ত থেকে প্রায় ২০ ঘণ্টা জার্নি করে একজন মানুষ সেন্ট মার্টিনে দুপুরে গিয়ে বিকেলে ফিরে আসবেন— এই শর্তে কেউ সেখানে যাবেন না। তার মানে নভেম্বর মাসে কোনো পর্যটকই সেন্ট মার্টিনে যাবে না। বাকি থাকে দুই মাস। এই দুই মাসও প্রতিদিন ২ হাজার পর্যটক যেতে পারবেন। মানে বছরে এক লাখ ২০ হাজার পর্যটক সেন্ট মার্টিন ভ্রমণ করতে পারবেন। যেহেতু প্রতিদিন দুই হাজার থাকতে পারবেন, ফলে এই সময়ে একসঙ্গে পর্যটকদের যে চাপ তৈরি হবে, সেই সুযোগ নেবে বিভিন্ন ট্যুর অপারেটর গ্রুপ। তাতে সেন্ট মার্টিন ভ্রমণের খরচ বেড়ে যাবে কয়েক গুণ। এভাবে একসময় সেন্ট মার্টিন বড়লোকের বিনোদন কেন্দ্রে পরিণত হবে। সরকার কি চায় এখানে শুধু পয়সাওয়ালারাই যাবে?
বছরের বাকি সময়গুলো সেন্ট মার্টিনে ভ্রমণের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয় মূলত সাগর উত্তাল থাকে বলে। অর্থাৎ নিরাপত্তার কারণে। কিন্তু কেউ যদি বছরের অন্য সময়গুলোতে সেন্ট মার্টিনের যেতে চায়, সেখানে সরকার কেন নিরাপদ ও উন্নত জাহাজের ব্যবস্থা করবে না? অনেকেই এক্সাইটিং ট্যুর করতে পছন্দ করেন। সমুদ্রের ঢেউ দেখার জন্যই অসংখ্য মানুষ বর্ষাকাল ও ঝড়ের মৌসুমে কক্সবাজার ও কুয়াকাটায় যান। পাহাড়ের চূড়ায় ওঠেন। এই ধরনের মানুষেরা যদি বর্ষা ও ঝড়ের সময়ে সেন্ট মার্টিন দেখতে চান, সেই সুযোগ থেকে তাকে রাষ্ট্র কেন বঞ্চিত করবে?
বিকল্প কী?
সেন্ট মার্টিনের বিষয়ে সরকারের মূল কনসার্ন যদি হয় পরিবেশ— তার জন্য বছরের ১০ মাস সেখানে পর্যটন নিয়ন্ত্রণ করা কোনো সমাধান নয়। বরং সেখানে ব্যবস্থাটিই এমন করতে হবে যে কেউ চাইলেই পলিথিন বা প্লাস্টিক নিয়ে যেতে পারবেন না। কোনো ধরনের ময়লা ফেললেই উচ্চ হারে জরিমানা এবং আইনের কঠোর প্রয়োগের জন্য সংশ্লিষ্টদের সততা ও আন্তরিকতা।
প্রশ্ন হলো, বিদ্যুৎ, চিকিৎসা ও জীবিকার যেসব সংকটের কথা বলা হচ্ছে, সেগুলো সমাধানে সরকার কী উদ্যোগ নিয়েছে? বছরের ১০ মাস যদি সেখানে পর্যটক যেতে না পারে তাহলে মাত্র দুই মাসের আয় দিয়ে সেন্ট মার্টিনের লোকেরা কী করে চলবে? বলা হচ্ছে, এই দুই মাসে ব্যবসায়ী এবং দ্বীপের ব্যবসায়ী, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীসহ সেবাদানকারীরা অতিরিক্ত অর্থ আদায় করলে পর্যটকদের সঙ্গে তাদের ঝামেলা তৈরি হবে। তার ফলে এখানে ধীরে ধীরে পর্যটক কমতে থাকবে এবং একসময় সেন্ট মার্টিনের ব্যাপারে পর্যটকরা আগ্রহ হারিয়ে ফেলবেন। প্রশ্ন হলো, সরকার কি এটিই চাচ্ছে? পর্যটক না গেলে সেখানের মানুষ শুধুমাত্র মাছ ধরে ও কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতে পারবে? কেননা অবস্থা এমন হয়েছে যে, সেন্ট মার্টিনের মৎস্যজীবী ও কৃষকরাও এখন কোনো না কোনোভাবে পর্যটনের ওপর নির্ভরশীল। নিশ্চয়ই এখানে কোনো শিল্পকারখানা নির্মাণের অনুমতি দেয়া হবে না।
মানুষ যদি দ্বীপের কোনো ক্ষতি না করে সেখানে ভ্রমণ করতে পারে এবং সারা বছরই কম বেশি পর্যটনের মাধ্যমে দ্বীপের মানুষেরা যদি আর্থিকভাবে স্বচ্ছল হতে পারে, তাতে সরকারের অসুবিধা কী? সরকার এখানে ভবন ও অবকাঠামো নির্মাণের ক্ষেত্রে কড়াকড়ি করতে পারে। ব্যবসার জন্য বহিরাগতদের সুযোগ সীমিত করে স্থানীয়দের অগ্রাধিকার দিতে পারে। বহিরাগত ব্যবসায়ীদেরে দাপটে যাতে স্থানীয় মানুষেরা প্রান্তিক হয়ে না যায়, সেজন্য একটি নীতিমালা করতে পারে। কিন্তু বছরেরর ১০ মাসই যদি সেখানে পর্যটন বন্ধ থাকে, এটা কোনো কাজের কথা হবে না। বরং পরিবেশ সুরক্ষা তথা দ্বীপের বৈশিষ্ট্য ও প্রাণ-প্রকৃতি বাঁচিয়ে কীভাবে সারা বছরই সেন্ট মার্টিনের পর্যটন চালু রাখা যায়, সেই ব্যবস্থা করা দরকার। এখানে কোনো ধরনের ‘হাইড অ্যান্ড সিক’ করলে মানুষের মনে সন্দেহ তৈরি হবে।
তার চেয়ে বড় কথা, পৃথিবীতে এরকম পরিবেশ সংবেদনশীল আরও অসংখ্য দ্বীপ আছে, যেখানে মানুষেরা ভ্রমণে যায়। সেসব দেশের সরকার এভাবে পর্যটন নিয়ন্ত্রণ করে কি না— সেটি আরেকটি প্রশ্ন। পৃথিবীর কোনো দ্বীপে এরকম ঘটনা আছে কি না যে, দুই মাস পর্যটকরা যাবেন এবং তারপরে পুরো এক মাস সেখানে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হবে? দুই মাসে পর্যটকরা দ্বীপকে এতটাই দূষিত করবেন যে সেটি পরিষ্কার করতে এক মাস সময় লাগবে? তার চেয়ে তো এমন একটা ব্যবস্থা করাই যুক্তিযুক্ত যে, পর্যটকরা দ্বীপের পরিবেশ নষ্ট করারই সুযোগ পাবেন না। কোনো কিছু নিষিদ্ধ বা নিয়ন্ত্রিত করা খুবই সহজ। একটি প্রজ্ঞাপন দিয়েই সেটি করা যায়। কিন্তু নিষিদ্ধ বা নিয়ন্ত্রণ না করে সরকার কেন এমন একটি ব্যবস্থা গড়ে তুলছে না যাতে সেখানে সারা বছরই পর্যটকরা যেতে পারবেন এবং পরিবেশেরও ক্ষতি হবে না? সারা পৃথিবীতেই কমিউনিটি ট্যুরিজম জনপ্রিয় হচ্ছে। অর্থাৎ কমিউনিটির মানুষেরা তাদের নিজেদের স্বার্থেই পরিবেশ ও প্রাণ-প্রকৃতির সুরক্ষা করেন এবং পর্যটকদের জন্য একটি আরামদায়ক ব্যবস্থা গড়ে তোলেন। স্থানীয় মানুষকে সেভাবেই প্রশিক্ষিত করা দরকার। এসব পথে না গিয়ে রাষ্ট্রীয় আদেশে কোনো একটি দ্বীপে বা পর্যটন এলাকায় যাতায়াত নিয়ন্ত্রণ ও নিষিদ্ধ করা মাথা ব্যথায় মাথা কেটে ফেলারই নামান্তর।
কেন সংশয়?
গত পয়লা নভেম্বর বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টি নামে একটি সংগঠনের সদস্যরা অভিযোগ করেছেন, পরিবেশ রক্ষার নামে ভারত ও মগ-আরাকানদের স্বার্থ রক্ষা করতেই সেন্ট মার্টিন ভ্রমণে সরকার বাধা দিচ্ছে। তারা বলেন, পরিবেশ রক্ষার নামে নারিকেল দ্বীপ ভ্রমণে সরকারি বাধা একদিকে বাংলাদেশের পর্যটন খাতকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। অন্যদিকে ভারতীয় পর্যটনকে লাভবান করবে।
তাদের আশঙ্কা, পর্যটকরা এখানে যেতে নিরুৎসাহিত হলে ধীরে ধীরে এই দ্বীপ জনশূন্য হয়ে পড়বে। ফলে নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি হলে এটি পার্শ্ববর্তী মিয়ানমারের মগ-আরাকান দস্যুদের বিচরণ ক্ষেত্রে পরিণত হবে। সুতরাং পর্যটন নিয়ন্ত্রণের সঙ্গে সঙ্গে সরকার এই দূরবর্তী বিষয়গুলো বিবেচনায় রাখছে কি না, সেটিই প্রশ্ন।
নৌঘাঁটি হবে?
যারা বিশ্বাস করেন বা বৈজ্ঞানিকভাবেই এটি প্রমাণ করে দিতে পারেন যে, যুক্তরাষ্ট্রের একটি নৌঘাঁটি করার মতো স্পেস বা জমি সেন্ট মার্টিনে নেই এবং এখানে পানির গভীরতাও নৌঘাঁটির জন্য যথেষ্ট নয়, তারপরও যদি এটা ধরেও নেওয়া হয় যে, সরকার সত্যি সত্যিই এই দ্বীপটি কোনো বিদেশি রাষ্ট্রকে লিজ বা ইজারা দিয়ে দিচ্ছে— সেটি আদৌ সম্ভব নয়।
কারণ বাংলাদেশের মানুষের যে প্রতিবাদী মানসিকতা এবং কিছু বিচ্ছিন্ন ইস্যু বাদ দিলে এখানের মানুষ জাতিগতভাবে যেরকম ঐক্যবদ্ধ—তাতে কোনো বিদেশি শক্তি এখানে এসে ঘাঁটি গাড়বে— সেটি সুদূর কল্পনা। বরং যে সরকার এই ধরনের উদ্যোগ নেবে, তাদের পতনের দাবিতে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো তো বটেই, সাধারণ মানুষও রাস্তায় নেমে যাবে। সুতরাং সেন্ট মার্টিনে নৌঘাঁটি হবে— এরকম শঙ্কা অন্তত আমি দেখি না।
স্থানীয় মানুষের কথা শুনুন
বাস্তবতা হলো, সরকার যে পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে তাতে সেন্ট মার্টিনের স্থানীয় মানুষের জীবন-জীবিকা হুমকিতে পড়বে। বরং পরিবেশ এবং দ্বীপের বৈশিষ্ট্য ও প্রাণ-প্রকৃতি বাঁচিয়েও এখানে সারা বছরই কম-বেশি পর্যটন উন্মুক্ত রাখা খুব কঠিন কিছু নয়। এখানে সরকার যেকোনো পদক্ষেপই নিক না কেন, সেখানে সেন্ট মার্টিনের স্থানীয় মানুষের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা তথা তাদের মতামত নিতে হবে। কিন্তু ব্যক্তিগতভাবে যতটুকু খোঁজ-খবর নিয়েছি, সেন্ট মার্টিন ইস্যুতে কোনো সরকারই কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে দ্বীপের মানুষের মতামতই গ্রহণ করেনি। বরং একেকটা সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিয়েছে।
এই দ্বীপের যাদের জন্ম ও বেড়ে ওঠা; বছরের পর বছর ধরে যারা এখানে বসবাস করেন— তাদের কথা না শুনে বা তাদের মতামত না নিয়ে এখানে কোনো নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা যৌক্তিক নয়। কোনো পরিবেশবাদী সংগঠন বা ব্যক্তির চেয়ে সেন্ট মার্টিনের প্রতি দরদ, ভালোবাসা ও দায়বদ্ধতা এই দ্বীপের মানুষেরই বেশি— এই সত্যটি মেনে নেওয়া দরকার। অতএব পরিবেশ সুরক্ষার কথা বলে স্থানীয়দের উপেক্ষা করে এখানে কোনো পরিকল্পনা গ্রহণ করা হলে সেটি নানারকম প্রশ্ন ও সংশয়ের জন্ম দেবে। আগে তাদের কথা শুনতে হবে। যারা ওখানের অধিবাসী তাদেরকে বাদ দিয়ে শুধু পরিবেশের চিন্তা করলে সেটি ‘মায়ের চেয়ে মাসির দরদ বেশি’ হয়ে যাবে।