সুইজারল্যান্ডের বিমানবন্দরগুলো তাদের আধুনিক সুবিধা, যাত্রী সেবার মান, এবং বিশ্বমানের পরিবহন ব্যবস্থার জন্য বিখ্যাত। বিশেষ করে জুরিখ, জেনেভা এবং বাসেল-এয়রপোর্ট তিনটি সুইস এবং আন্তর্জাতিক যাত্রীদের সেবা দেয়।
সুইজারল্যান্ডের এয়ারপোর্টের ইতিহাস বেশ পুরনো। জুরিখ এয়ারপোর্ট (Zurich Airport) ১৯৪৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, যা আজ ইউরোপের অন্যতম প্রধান বিমানবন্দর। জেনেভা এয়ারপোর্ট (Geneva Airport) ১৯২০-এর দশকে প্রতিষ্ঠিত এবং বর্তমানে বহু আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের কেন্দ্র।
সুইজারল্যান্ডের প্রধান বিমানবন্দরগুলির মধ্যে জুরিখ বিমানবন্দর (জুরিখ শহর থেকে প্রায় ১৩ কিলোমিটার উত্তরে), জেনেভা বিমানবন্দর (জেনেভা শহরের কাছাকাছি) এবং বাসেল বিমানবন্দর (ফ্রান্স, জার্মানি, এবং সুইজারল্যান্ডের সংযোগস্থলে) উল্লেখযোগ্য। এগুলি ইউরোপের সাথে সহজ যোগাযোগের কেন্দ্র হিসেবে কাজ করে।
জুরিখ বিমানবন্দর এবং জেনেভা বিমানবন্দর বিশ্বের ১০০ টিরও বেশি এয়ারলাইনের ফ্লাইট পরিচালনা করে। সুইস ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইনসের প্রধান হাব হিসেবে জুরিখ বিমানবন্দর কাজ করে, যা ইউরোপ, এশিয়া এবং আমেরিকার সাথে সংযোগ স্থাপন করে।
সুইজারল্যান্ডের বিমানবন্দরগুলিতে প্রতিবছর লক্ষ লক্ষ যাত্রী আসা-যাওয়া করে। জুরিখ বিমানবন্দর বছরে প্রায় ৩ কোটি যাত্রী এবং ৫ লক্ষের বেশি ফ্লাইট পরিচালনা করে। জেনেভা বিমানবন্দরও ব্যস্ততম বিমানবন্দরের মধ্যে একটি।
বিমানবন্দরে যাত্রী সেবার মান অত্যন্ত উচ্চমানের। এখানে তথ্য কেন্দ্র, বিশেষ সহায়তা বুথ এবং হেল্প ডেস্ক রয়েছে যা যাত্রীদের সেবা প্রদান করে।
সুইজারল্যান্ডের বিমানবন্দরগুলোতে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানের রেস্টুরেন্ট এবং ক্যাফে আছে। যাত্রীরা বিভিন্ন ধরনের সুইস এবং আন্তর্জাতিক খাবার উপভোগ করতে পারেন। এছাড়া ডিউটি-ফ্রি শপে ব্র্যান্ডেড পণ্য কেনার সুযোগ রয়েছে।
ডিউটি-ফ্রি শপিং সুইস বিমানবন্দরে বিশেষ আকর্ষণ। এখানে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের পণ্য, যেমন ঘড়ি, সুগন্ধি, চকোলেট, এবং গয়নার দোকান রয়েছে, যা যাত্রীদের আকর্ষণ করে।
সুইজারল্যান্ডের এয়ারপোর্টে প্রিমিয়াম লাউঞ্জ এবং সাধারণ অপেক্ষা লাউঞ্জের ব্যবস্থা রয়েছে। প্রিমিয়াম লাউঞ্জগুলোতে বিনামূল্যে ইন্টারনেট, খাবার এবং বিশ্রামের সুযোগ থাকে।
সুইস বিমানবন্দর থেকে শহরের মধ্যে সহজে যাওয়ার জন্য রয়েছে ট্রেন, বাস এবং ট্যাক্সির সুবিধা। জুরিখ বিমানবন্দর থেকে প্রতি কয়েক মিনিট অন্তর ট্রেন এবং বাস চলে, যা শহরের সাথে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন করে।
বিশেষ করে শিশু ও প্রতিবন্ধী যাত্রীদের জন্য সুইস বিমানবন্দরে আলাদা সুবিধা আছে। এখানে সেবা বুথ এবং সহায়তা কর্মী সবসময় প্রস্তুত থাকে যাত্রীদের প্রয়োজন মেটাতে।
সুইজারল্যান্ডের বিমানবন্দরগুলো কার্গো পরিবহনের জন্য বিশেষ সুবিধা প্রদান করে। এখানে কার্গো শিপমেন্ট এবং দ্রুত কাস্টমস ক্লিয়ারেন্সের ব্যবস্থা রয়েছে।
সুইজারল্যান্ডের বিমানবন্দরগুলো শুধুমাত্র যাত্রী পরিবহনের জন্যই নয়, বরং আন্তর্জাতিক মানের সেবা এবং সুবিধার জন্যও সুনাম অর্জন করেছে।