সীমানা পেরিয়ে – সেন্টমার্টিনের কোনাপাড়া নারিকেল পাড়ায় অবস্থিত রিসোর্টটি সাগর সংলগ্ন। বীচের ঠিক পাশ ঘেষেই গড়ে ওঠেছে এটি । ১৬০ শতক জমির ওপর গড়ে ওঠা এ রিসোর্টে নিশ্চিত করা হয়েছে থাকা খাওয়ার যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা। আরামদায়ক অবকাশ যাপনে সীমানা পেরিয়ে হতে পারে আপনার প্রথম পছন্দের একটি স্থান। রিসোর্টের সামনেই বঙ্গোপসাগর এর ফেনিল ঢেউ এসে আছড়ে পড়ে । রিসোর্ট থেকে বের হলেই বীচের নান্দনিকতা আপনাকে বিমুগ্ধ করবে ।
রিসোর্টে যাওয়ার পথটি আপনাকে প্রসন্ন করবে নিঃসন্দেহে । গ্রামীণ মেঠো পথ পাড়ি দিয়ে রিসোর্টে প্রবেশ করতে হয়। সীমানা পেরিয়ে রিসোর্টের সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এটি একটি ইকো-রিসোর্ট । সৌন্দর্যকে অক্ষুন্ন রেখেই নির্মিত হয়েছে এ রিসোর্ট। আধুনিকতার অপূর্ব সমন্বয় ঘটেছে এখানে। সবুজ প্রকৃতির প্রশান্তি সাথে পাবেন আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধাও। ছবির মতো করে সাজানো হয়েছে সীমানা পেরিয়ে রিসোর্ট। যে দিকে দৃষ্টি যাবে শুধু সবুজের নান্দনিকতা । চতুর্দিকে কেয়া গাছের সারি , ভেতরে নারিকেল, ঝাউ গাছসহ দেশি-বিদেশি নানান বৃক্ষের সমাহার ঘটেছে। আছে বিভিন্ন ধরনের ফলের গাছও।
এখানে আছে দেশি-বিদেশি ফুলের বাগান । সীমানা পেরিয়ে রিসোর্টে যোগ করেছে একটি নতুন মাত্রা। ইকো-রিসোর্ট বলে এ রিসোর্টে যতটা সম্ভব ইট-বালি সিমেন্টের ব্যবহার এড়ানো হয়েছে বলে এখানে ভ্রমণে এলে মনে হবে ছায়া সুনিবিড় নিজের গ্রামে বেড়াতে এসেছেন । তাই সেরার স্বীকৃতিও পেয়েছে রিসোর্টটি । এ সবুজের রাজ্যে আপনার অবকাশ যাপন হয়ে ওঠবে সত্যিই আনন্দময় ।
সীমানা পেরিয়ে রিসোর্টে থাকা-খাওয়ার জন্য রয়েছে অত্যাধুনিক সব আয়োজন। তিন ধরনের কটেজ রয়েছে এখানে । ব্রিকস, ব্যাম্বো আর উডেন। কটেজে রুম রয়েছে মোট ১৪টি। প্রতিটি রুমই আলাদা । ডেকোরেশনও ভিন্ন । এসব রুমে রয়েছে সেমি ডাবল খাট, এটাচ বাথ, টাইলস এবং আনুষঙ্গিক সুবিধা। প্রতিটি রুমই সুসজ্জিত এবং খোলামেলা । এছাড়া এখানে আছে চমৎকার একটি স্যুইট ভিলা । রুমগুলোর ভাড়াও হাতের নাগালে। সীমানা পেরিয়ে রিসোর্টের রেস্টুরেন্ট চাহিদানুযায়ী খাবার পাওয়া যায়। শাক-সবজিসহ নানা রকম ভর্তা-ভাজি পাওয়া যায় ।
তবে রেস্টুরেন্টের বড় আকর্ষণ হচ্ছে সামুদ্রিক মাছ। যেহেতু রিসোর্টটি সাগর সংলগ্ন তাই গেইট থেকে বের হয়েই সাগরে গোসল কিংবা পানিতে নেমে আনন্দ করতে পারেন। বসার জন্য আছে চেয়ার। চারদিকে প্রবাল পাথর, সাগরের ঢেউ, নারিকেল গাছের সারি সব মিলিয়ে প্রকৃতির চমৎকার আয়োজন। পুর্নিমা রাতে এখানকার সৌন্দর্য ভিন্নমাত্রা পায় । চাঁদের আলো যখন সাগরে আছড়ে পড়ে তখন পুরো সাগর রুপালী রঙ ধারণ করে। সৃষ্টি হয় মায়াবী এক পরিবেশ।
সত্যিই এ এই অসাধারণ দৃশ্য। রিসোর্ট থেকেই এ দৃশ্য উপভোগ করা যায়। এছাড়া চাঁদনী রাতের এ সৌন্দর্যে নতুন মাত্রা দিতে আয়োজন করা হয় বারবিকিউ ডিনারের। তার সাথে যোগ হয় স্থানীয় শিল্পীদের আয়োজনে গান-বাজনা । এখানকার স্টাফদের মধ্যে আছেন বংশী বাদক, তবলা বাদকও। সীমানা পেরিয়ে রিসোর্টে পুকুরের পাড়ে বসে কাটিয়ে দিতে পারেন একটি বিকেল। সবুজ মাঠে ব্যাডমিন্টন, ভলিবল ইত্যাদি খেলা যায়।
শুধু অবকাশ যাপন নয়, সীমানা পরিয়ে রিসোর্টে সেরে নেয়া যায় কর্পোরেট মিটিং। নিশ্চিত করা করেছে নিরাপত্তা ব্যবস্থাও। নিরাপত্তার জন্য আছে লায়ন নামের একটি প্রশিক্ষিত কুকুর । রিসোর্টে সংলগ্ন বীচে মাঝে মধ্যেই কচ্ছপ ডিম পাড়তে আসে। ভাগ্য ভালো থাকলে দেখতে পাবেন এ দুর্লভ দৃশ্যও।