1. [email protected] : চলো যাই : cholojaai.net
সহজ হচ্ছে গ্রিনকার্ড প্রাপ্তি
মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫, ১০:৩২ অপরাহ্ন

সহজ হচ্ছে গ্রিনকার্ড প্রাপ্তি

  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারি, ২০২৫

অবৈধ অভিবাসীদের জন্য আমেরিকা হবে আতঙ্কের এবং সিটিজেনদের জন্য বাড়বে সুযোগ-সুবিধা। উন্নত হবে আমেরিকানদের জীবনযাত্রার মান। কমবে অপরাধ। – এসব শুনতে অনেকটা খটকা লাগলেও ক্ষমতা গ্রহণের পর সেই পথেই হাঁটছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি আমেরিকাকে মহান করবেন।

ট্রাম্পের যেমন কথা তেমন কাজ। নির্বাচনের আগে দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী শুরু হয়েছে ইমিগ্রেশন ক্র্যাকডাউন। এরই অংশ হিসাবে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে চলছে ব্যাপক ধরপাকড়। ২৬ জানুয়ারি রোববার থেকে শুরু হওয়া এই ক্র্যাকডাউনে প্রতিদিন গড়ে এক হাজার অবৈধ অভিবাসী গ্রেপ্তার হচ্ছেন। তাদের বেশিরভাগকে সরাসরি নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হচ্ছে।

২০১৬ সালের নির্বাচনে হিলারি ক্লিনটনকে পরাজিত করে ট্রাস্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। ট্রাম্পের শাসনামলে ভালো ছিল দেশটির নাগরিক ও বৈধ অভিবাসীরা। সার বিশ্বে যুদ্ধ বন্ধ ছিল। এত কিছুর পরও ২০২০ সালের নির্বাচনে তিনি পরাজিত হন। কিন্তু গত চার বছর প্রেসিডেন্ট বাইডেনের শাসনামলে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি ভেঙে পড়ে। দেখা দেয় মূদ্রাস্ফিতি। জীবনযাত্রা কঠিন হয়ে পড়ে। অপরাধের মাত্রা বাড়তে থাকে হু হু করে। এ অবস্থার মধ্যে ‘মেক আমেরিকা গ্রেইট অ্যাগেইন’ স্লোগান নিয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হন ট্রাম্প। দলমত নির্বিশেষ সবাই ভোট দেন তাকে। বিপুল জনপ্রিয়তা নিয়ে হোয়াইট হাউহেজ প্রত্যাবর্তন করেন তিনি।

২০ জানুয়ারি শপথ গ্রহণের পর ট্রাম্প তার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কাজ শুরু করেন। প্রথম দিনেই তিনি শতাধিক নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেন। এরপর একের পর এক আদেশ দেন তিনি। ট্রাম্পের এসব আদেশে অপরাধী ও অবৈধ অভিবাসীদের ঘুম নেই। তাদের গ্রেপ্তারে মাঠে নেমেছে ফেডারেল আইন-প্রয়োগকারী সংস্থা। এমনকী স্যাঙ্কুয়ারি সিটি হওয়ার পরও নিউইয়র্ক, শিকাগো ও লস অ্যাঞ্জেলেস সিটিতে ব্যাপক ধরপাকড় শুরু হয়েছে।

শুধু ইমিগ্রেশন ধরপাকড় নয়, ট্রাম্প অবৈধভাবে বসবাস করে যারা রাষ্ট্রের সুযো-সুবিধা গ্রহণ করছেন তাদের চিহ্নিত করতে যান। তাদের থামিয়ে দিতে চান। এজন্য ফেডারেল সুযোগ-সুবিধা সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করেছেন। ট্রাম্পের অনেক আদেশই গত কয়েকদিনে আদালতে চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে। কিন্তু ট্রাম্প তাতে মোটেও দমে যাবেন না। তিনি বিষয়গুলো কংগ্রেসে তুলে বৈধতা নেবেন বলে আশা করছেন।

ইমিগ্রেশন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নির্বাচনের আগে ট্রাম্প যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তা আমেরিকার জন্য ভালো। বরং তার প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়িত হলে আমেরিকার ইমিগ্রেশন সিস্টেম শক্তিশালী হবে। আর এসব কারণে এই রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট প্রার্থীকে ভোট দিয়েছেন ডেমোক্রেটরাও।

ইমিগ্রেশন বিশেষজ্ঞ ও যুক্তরাষ্ট্রে ইন্টারন্যাশনাল বার অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক অ্যাটর্নি মঈন চৌধুরী ঠিকানাকে বলেন, ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের অপরাধ কমাতে চান। আমেরিকানরা যাতে নিজেকে নিরাপদ বোধ করেন, এ লক্ষ্যেই তিনি কাজ করছেন। তিনি বলেন, ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিকে বুস্ট করতে চান। এতে আমেরিকানদের জীবনযাত্রার মান বাড়বে। এছাড়া ট্রাম্প ইমিগ্রেশন সিস্টেমকে উন্নত করতে চান। আর ইমিগ্রেশন সিস্টেম উন্নত হলে যুক্তরাষ্ট্রে বৈধ ইমিগ্রেমন সহজ হবে।

ডেমোক্রেটিক পার্টির কুইন্স ডিস্ট্রিক্ট অ্যাট লার্জ অ্যাটর্নি মঈন চৌধুরী বলেন, এখন হাসপাতালে গেলে রোগীর চাপ থাকে। সিট খালি পাওয়া যায় না। বৈধ ইমিগ্রেশন ব্যবস্থা চালু থাকলে সবক্ষেত্রে সেবার মান বাড়বে। আমেরিকানদের সুযোগ-সুবিধাও বাড়বে। তিনি বলেন, ট্রাম্প চান শিক্ষিত মানুষ যুক্তরাষ্ট্রে আসুক। তারা বৈধভাবে গ্রিনকার্ড লাভ করুক। আর এ কারণে তিনি ইমিগ্রেশন ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে চান। এর অংশ হিসাবে শুরু হয়েছে নথিপত্রহীন অভিবাসীদের গ্রেপ্তার ও বিতারণ। ট্রাম্প সফল হলে পাল্টে যাবে আমেরিকার চেহারা।

মঈন চৌধুরী আশা করেন, আমেরিকা আইনের দেশ। এই দেশে সবার আইন মেনে চলা উচিত।

বাংলাদেশি কমিউনিটি লিডার ও রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী নাসির আলী খান পল মনে করেন, ট্রাম্প আমলে আমেরিকার চেহারার আমূল পরিবর্তন হবে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আগে ট্রাম্প যখন ক্ষমতায় ছিলেন তখন রিয়েল এস্টেট খাতসহ বিভিন্ন খাতে উন্নতি হয়েছিল। তখন বাড়ি কেনার জন্য মর্গেজ ইন্টারেস্ট ছিল ২ দশমিক ৯৫ শতাংশ। বাইডেনের আমলে তা সাড়ে ৮ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়। ফলে যেসব তরুণ আমেরিকান চাকরি জীবন শুরু করার ৪-৫ বছর পর বাড়ি কিনতে উদ্যোগী হয়েছিলেন তারা হোচট খেয়েছেন। ট্রাম্প আবার ক্ষমতায় আসায় মর্গেজ ইন্টারেস্ট কমবে এবং মানুষ বাড়ি কিনবে।তিনি বলেন, বাইডেনের আমলে সীমান্ত অরক্ষিত ছিল। অপরাধী ও অবৈধ অভিবাসীদের স্বর্গরাজ্য ছিল স্যাঙ্কুয়ারি সিটি। অবৈধ অভিবাসীরা যেখানে আতঙ্কে থাকার কথা, বরং স্যাঙ্কুয়ারি সিটিতে তারা নানান অপরাধ করেও নিরাপদে ছিল। মানুষ দেখেছে ১৫ জন অবৈধ অভিবাসী মিলে কীভাবে দুজন পুলিশকে পিটিয়েছে। ভেনিজুয়েলার সন্ত্রাসীরা নিউইয়র্ক সিটির বড় বড় ভবন দখলে নিয়ে ভাড়া তুলছে। তারা মাদক ব্যবসা করছে। তাদের সরবরাহ করা মাদক সেবন করে গত চার বছরে তিন হাজার তরুণ মারা গেছে।

তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে ১৫ মিলিয়ন অবৈধ অভিবাসী আছে। তাদের তাড়ালে যুক্তরাষ্ট্রে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। তখন বিভিন্ন সেক্টরে ছোট বড় কাজের জন্য লোক লাগবে। তখন বৈধভাবে লোক আসবে এই আমেরিকায়। বৈধভাবে আমেরিকা আসার ফলে সহজে তারা গ্রিনকার্ডও পাবেন। ট্রাম্প সেই ব্যবস্থাই চালু করতে চান। তিনি বিশ্বাস করেন, আমেরিকা ট্রাম্পের আমলে আবার গ্রেট হবেই।

উল্লেখ্য, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ক্ষমতায় থাকাকালে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ সীমান্ত দিয়ে বহু অভিবাসী প্রবেশ করেছিলেন। তাদের বড় অংশের ঠিকানা হয়েছিল টেক্সাস। তখন টেক্সাসের গভর্নর গ্রেগ অ্যাবট এই অভিবাসীদের বাইডেনের দল ডেমোক্রেটিক পার্টি শাসিত শহরগুলোয় পাঠিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। এখন অবৈধ অভিবাসীদের খোঁজে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে বাসা-বাড়ি আর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হানা দিচ্ছে দেশটির বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় সংস্থার সদস্যরা। অভিযানে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই)-এর পাশাপাশি অংশ নিয়েছেন এফবিআই ও ড্রাগ এনফোর্সমেন্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেশনসহ (ডিইএ) বিচার বিভাগের বিভিন্ন সংস্থার সদস্যরা। অভিবাসন, মাদক, অস্ত্র আর কাস্টমস বিষয়ক ভিন্ন ভিন্ন বিভাগের অভিযানে গ্রেফতারের সংখ্যা তিনি হাজার ছাড়িয়েছে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Developed By ThemesBazar.Com