বাংলাদেশি শ্রমিকদের জন্য বৈদেশিক কর্মসংস্থানের সুযোগ দ্রুত সংকুচিত হয়ে পড়ছে। মালয়েশিয়ার পর প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) শ্রমবাজারও। এখন সৌদি আরবের বাজার নিয়েও শঙ্কা প্রকাশ করছেন জনশক্তি রপ্তানি সংশ্লিষ্টরা।
তাদের মতে, এই সংকটের পেছনে একাধিক কারণ রয়েছে—বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশি দূতাবাসগুলোর নিষ্ক্রিয়তা, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তহীনতা, বেসরকারি এজেন্সিগুলোর ওপর অপ্রয়োজনীয় নিয়ন্ত্রণ এবং মানব ও অর্থ পাচারসংক্রান্ত মামলার ধীর তদন্ত। এসব কারণে যুক্তরাষ্ট্রের মানবপাচার সূচকে (টিআইপি) বাংলাদেশের অবস্থান তলানিতে নেমে গেছে।
মানবপাচারে ঝুঁকিপূর্ণ দেশের তালিকায়ও বাংলাদেশের স্থান এখন দ্বিতীয়। এর ফলে শ্রমিক গ্রহণকারী দেশগুলো বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিতে অনাগ্রহী হয়ে পড়ছে।
প্রধান শ্রমবাজারগুলো একে একে বন্ধ
বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শ্রমবাজার মালয়েশিয়া গত বছরের মে মাসে বন্ধ হয়ে যায়। এরপর ইউএই ভিসা জারি বন্ধ করে দেয়। ওমান ও বাহরাইনের বাজারও কার্যত স্থবির। সৌদি আরবের বাজারে শ্রমিক পাঠানোর হার কমে গেছে, একই সঙ্গে রেমিট্যান্স প্রবাহেও হ্রাস ঘটেছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, বিদ্যমান সমস্যা দ্রুত চিহ্নিত করে বন্ধ বাজারগুলো পুনরায় চালু করা এবং নতুন বাজার খোঁজার বিকল্প নেই। তা না হলে বেকার শ্রমিকের সংখ্যা বাড়বে এবং রেমিট্যান্স আয় আরও কমে যেতে পারে।
জঙ্গিবাদসহ বিভিন্ন ইস্যুতে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে সংকট
মালয়েশিয়ার সঙ্গে জিটুজি প্লাস চুক্তির আওতায় ৪ লাখ ৮০ হাজার শ্রমিক পাঠানো হয়। তবে অর্থপাচার ও অতিরিক্ত ফি আদায়ের অভিযোগে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ও দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) একাধিক মামলা করেছে। এসব মামলার সঠিক তদন্ত না হওয়ায় মালয়েশিয়া সরকার জানিয়েছে—অভিযোগগুলো প্রত্যাহার না হলে বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নেওয়া বন্ধ থাকবে।
এছাড়াও সাম্প্রতিক সময়ে কয়েক দফায় দেশটিতে বাংলাদেশি জঙ্গি এবং অবৈধ অভিবাসী আটকের ঘটনাগুলো দেশটিতে বাংলাদেশি শ্রমিকদের প্রতি বিরূপ পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। মালয়েশিয়ায় বসে আন্তর্জাতিক ইসলামি জঙ্গি সংগঠনগুলোকে মদদ, সহায়তা, প্রশিক্ষণ এবং বাংলাদেশে নির্বাচিত আওয়ামী লীগ সরকার উৎখাতে সংশ্লিষ্টতার দায়ে বিপুল সংখ্যক জঙ্গি আটক হয়েছে গত কয়েক মাসে।