ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য প্রিন্ট এক প্রতিবেদনে দাবি করেছে যে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক ভার্চুয়াল বৈঠকে বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, সাম্প্রতিক হত্যাকাণ্ড এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে বক্তব্য রেখেছেন। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, তিনি দেশে ফেরার ঘোষণা দিয়েছেন এবং নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের হত্যার ঘটনায় জড়িতদের বিচারের আশ্বাস দিয়েছেন।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, শেখ হাসিনা স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন, “সব হত্যাকাণ্ডের বিচার বাংলার মাটিতেই হবে।” তবে সাধারণ নাগরিকদের মৃত্যু নিয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি, যা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
অন্যদিকে, আগামী এপ্রিল মাসে তার বিরুদ্ধে বিচারিক প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে ভারতের ভূমিকা কী হবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। শেখ হাসিনার শাসনামলে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ ছিল, তাই তার প্রত্যাবর্তন নিয়ে কূটনৈতিক টানাপোড়েনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
দ্য প্রিন্ট আরও জানায়, শেখ হাসিনা নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনুসকে “ষড়যন্ত্রকারী” হিসেবে অভিহিত করে অভিযোগ তুলেছেন যে, ইউনুস ও তার সহযোগীরা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছেন। তার দাবি, গত জুলাই মাসে ছাত্র আন্দোলনের সময় পুলিশের ওপর হামলা এবং চার পুলিশ সদস্যের মৃত্যুর ঘটনা একটি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র, যেখানে ড. ইউনুসের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে।
শেখ হাসিনা এই ঘটনাকে “বড় ধরনের চক্রান্ত” বলে উল্লেখ করেন এবং বলেন, “আমি দেশে ফিরে দোষীদের বিচারের মুখোমুখি করব।” একই সঙ্গে তিনি নিহত পুলিশ সদস্যদের পরিবারের প্রতি সরকারের উদাসীনতা নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
অন্যদিকে, জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত জুলাইয়ের সহিংসতার জন্য শেখ হাসিনা ও তার দল আওয়ামী লীগকে সরাসরি দায়ী করা হয়েছে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ছাত্র আন্দোলন দমন করতে নিরাপত্তা বাহিনী অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ করেছে এবং মেটাল বুলেট ব্যবহারের অভিযোগও রয়েছে।
এই প্রতিবেদন প্রকাশের পর বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। অনেকে মনে করছেন, শেখ হাসিনা এখনও কঠোর রাজনৈতিক অবস্থানে রয়েছেন এবং জনমতের প্রতি নমনীয়তা দেখাচ্ছেন না, যা তাকে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে আরও দূরে সরিয়ে দিচ্ছে।