শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল নির্মাণে সাড়ে তিন গুণ বেশি খরচ করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বিশেষজ্ঞরা যুক্তি দেখান, ভারতে ৭ হাজার কোটিতে টার্মিনাল নির্মাণ হলেও বাংলাদেশে ব্যয় হচ্ছে ২৫ হাজার কোটি টাকা।
সোমবার সকালে রাজধানীর একটি হোটেলে অ্যাভিয়েশন বিষয়ক সংবাদিকদের সংগঠন এটিজেএফবির এক আলোচনা সভায় এ অভিযোগ তোলা হয়। এ সময় বেসামরিক বিমান পরিবহন উপদেষ্টা এএফ হাসান আরিফ জানান, নির্মাণ কাজে দুর্নীতি হয়ে থাকলে শ্বেতপত্র প্রকাশ করা হবে।
শাহজালাল বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনালের ৯৮ শতাংশ কাজ শেষ হলেও চালু হচ্ছে না এ বছর। এরইমধ্যে উঠে এসেছে টার্মিনালের নির্মাণকাজে দুর্নীতির নানা অভিযোগ।
অ্যাভিয়েশন খাত সংশ্লিষ্টদের দাবি, নিম্নমানের সরঞ্জাম অখ্যাত ব্র্যান্ডের যন্ত্রপাতি ও অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় হচ্ছে প্রকল্পে। মোট ব্যয় দাঁড়াচ্ছে প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকা। অথচ এর সাড়ে তিনগুণ কম খরচে ভারতের বেঙ্গুলুরু ক্যাম্পাগাউড়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণ করা হয়েছে। সেখানে খরচ হয়েছে ৭ হাজার কোটি টাকা।
বেসরকারি এয়ারলাইনসগুলোর জোট এভিয়েশন অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশনের (এওএবি) মহাসচিব মফিজুর রহমান বলেন, ‘রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পের বালিশকান্ড থার্ড টার্মিনালে ঘটেনি, এমনটি ভাবা বাস্তবতাকে অস্বীকার করা। জাপান এবং কোরিয়া যেহতু এই প্রকল্পের মুল ঠিকাদার তাই এখানে দুর্নীতি হয়নি এমন আত্মতুষ্টির সুযোগ নেই।’
দুদকসহ অন্যান্য তদন্ত সংস্থাকে অভিযোগ খতিয়ে দেখার আহ্বান অ্যাভিয়েশন বিশেষজ্ঞদের। এর সাথে যারা জড়িত তাদের জবাবদিহির তাগিদও দেন তারা।
এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ এ টি এম নজরুল ইসলাম বলেন, ‘নিম্নমানের জিনিস দেওয়া হয়েছে, কি হয়নি এটা নিয়ে তদন্ত হওয়া উচিত। যদি এটা হয়ে থাকে, যারা করেছে অবশ্যই তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে।’
এ বিষয়ে উপদেষ্টা পরিষদে আলোচনার ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন উপদেষ্টা। তিনি জানান, বিমান ও সিভিল অ্যাভিয়েশনের দুর্নীতির শ্বেতপত্র প্রকাশেরও উদ্যোগ নেওয়া হবে।
এএফ হাসান আরিফ বলেন, ‘দুর্নীতি না হলে এই খরচটা এতোটা হতো না। সেটা নিশ্চই আমরা খতিয়ে দেখব। যেহতু সব ক্ষেত্রেই সংস্কারের একটি বিষয় আসছে, দুর্নীতি দমন কমিশনও সংস্কারের একটি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। প্রত্যেকটি বিষয় যেটা বিগত সরকারের সময় হয়েছে, সেগুলো ফোকাসের মধ্যে আসবে।’
থার্ড টার্মিনাল যাত্রীদের জন্য খুলে দিতে আরও এক বছর সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন বেসামরিক বিমান উপদেষ্টা।