পর্তুগালে যতগুলি প্রাচীন শহর রয়েছে তার মধ্যে লিসবন অন্যতম। এই শহরে রয়েছে প্রাচীন ঐতিহ্যের নিদর্শন সমুহ, কাস্তেলো ডি এ. জর্জ, প্রাসা ড্যা কমার্সিও, সান্তা জুস্তা লিফট, ক্রিস্ট রিও, এলএক্সফ্যাক্টরী ও বিশ্ব ঐতিহ্য বেলেম টাওয়ারসহ আরও ঐতিহাসিক নিদর্শন সমূহ।
বেলেম টাওয়ার তাগুস নদীর তীরে অবস্থিত। টাওয়ারের সম্মুখভাগ তাগুস নদীর দিক মুখ করে তৈরি করা হয়েছে। এটি পর্তুগালের লিসবনে অবস্থিত। অসাধারণ নির্মান শৈলির ডিজাইন করেছেন ডিজাইনার ফ্রান্সিসকো ডি আরুদা। টাওয়ার তৈরিতে বেশীর ভাগ উপদান চুনা পাথরের। এর নির্মাণ কাজ শুরু হয় ১৫১৪ সালে এবং এর সমাপ্তি হয় ১৫১৯ সালে। এই টাওয়ার তৈরি করতে সময় লেগেছে প্রায় পাঁচ বছর। এই টাওয়ারটি ১৯৮৩ সালে ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট হিসাবে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়েছিল এবং ২০০৭ সালে পর্তুগালের সাতটি ওয়ান্ডার্সের রেজিস্ট্রিতে অন্তর্ভুক্ত ছিল।
ইংরেজীতে টাওয়ারের নাম টাওয়ার অফ সেন্ট ভিনসেন্ট। লিসবনে অবস্থিত চার তলা বিশিষ্ট টাওয়ারটি শতাব্দীর ১৬তম দুর্গ হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। লিসবনকে সুরক্ষিত রাখার জন্য তাগুস নদীর প্রবেশদ্বারে নির্মাণ করা হয়েছে। এটি সৈনিকদের পাহারার ঘাঁটি ছিল। সময়ের বিবর্তনে সেই বেলেম আজ লিসবনের অন্যতম পর্যটন নগরী হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে।
অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের বেলেম। ঘুরে বেড়ানোর এক মনোরম পরিবেশ। চারদিকে সবুজের সমারোহ আর পাশে বয়ে চলা নদী, সব কিছুই স্বপ্নের মত মনে হয়। তাগুস নদীতে ঘুরতে ইঞ্জিনচালিত নৌকা ভাড়ায় পাওয়া যায়। ঘাট থেকে ইঞ্জিন চালিত নৌকায় তাগুস নদীতে বয়ে চলার আনন্দটুকু অসাধারণ। নদীর মাঝে থেকে দুপাশের শহরগুলিকে তাকালে সত্যি হৃদয়ে দোলা খেয়ে যাবে। আটলান্টিক মহাসাগর থেকে আসা ঢেউ গুলি মনের অজান্তে ভয় পাইয়ে দেয়।
দূরের ছোট ছোট বাড়িগুলির দিকে তাকালে মনে হয়, সোনালির বুকে লাল রঙের আঁচড় কাটা যেন স্বচ্ছ পানির সঙ্গে মিশানো প্রতিটি বাড়ি। মনোরম দৃশ্য দেখতে দেখতে কখন দুপুর ঘনিয়ে সন্ধ্যা হবে বুঝা মুশকিল। লাল নীলের আলোতে পরিবর্তন ঘটবে সময়ের। সূর্যাস্ত শেষে আলোকময় নতুন রূপে আসে বেলেম। রোদের জলকানিতে পাহাড় আর নদীর পানির ক্ষণে ক্ষণে রং বদলানোর দৃশ্য সূর্যাস্তের অপূর্ব মনোমুগ্ধ চোখের পলক আপনার সব ক্লান্তি দূর হবে। মনে আসবে শান্তির পরশ। আনন্দময় হবে জীবন। কেটে যাবে একটি সুন্দর দিন।
কিভাবে যাবেন: লিসবনের রসিও থেকে ৭১৪ নাম্বার বাসে করে বেলেম যাওয়া যাবে। ইচ্ছে করলে ট্রামে করে যেতে পারেন। খরচ: যাতায়ত খরচ বেশী নয় আসা যাওয়া ৩/৪ ইউরোর মধ্যে হয়ে যাবে। খাবার নিজের চাহিদা মত যা ইচ্ছে খেতে পারেন।