1. [email protected] : চলো যাই : cholojaai.net
‘লাস ভেগাস’ হতে চাচ্ছে শ্রীলঙ্কা
রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:৩৬ অপরাহ্ন

‘লাস ভেগাস’ হতে চাচ্ছে শ্রীলঙ্কা

  • আপডেট সময় রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

ভ্রমণ নিয়ে একাধিক উদ্যোগ নিচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ার দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কা। শান্ত ও নিরিবিলি ভ্রমণের জন্য আগে থেকে জনপ্রিয় গন্তব্য ছিল এই দেশ। সে কারণে সমুদ্রের সৌন্দর্য থেকে প্রাচীন বৌদ্ধ নিদর্শন দেখতে প্রতিবছর প্রায় ২০ লাখ পর্যটক দেশটিতে ভিড় জমায়।

তবে দেশটির নতুন প্রেসিডেন্ট অনুড়া কুমারা দিশানায়েকে এবার পর্যটনশিল্পকে বাড়ানোর এক ভিন্ন পরিকল্পনা নিয়েছেন। তাঁর লক্ষ্য, শ্রীলঙ্কাকে দক্ষিণ এশিয়ার ‘লাস ভেগাস’-এ রূপ দেওয়া। গত মাসে দেশটির রাজধানী কলম্বোতে এক বিলিয়ন ডলারের সিটি অব ড্রিমস ক্যাসিনো রিসোর্ট উদ্বোধন করে তিনি ঘোষণা দেন, ‘শ্রীলঙ্কার জন্য শুরু হলো এক নতুন যুগ।’

বিলাসবহুল ক্যাসিনো রিসোর্ট

শ্রীলঙ্কায় আগে থেকে ছোটখাটো ক্যাসিনো চালু ছিল। যেগুলোতে মূলত স্থানীয়দের আনাগোনা ছিল। তবে নতুন এই রিসোর্ট আগের সবকিছুকে ছাড়িয়ে গেছে।

এতে রয়েছে প্রায় ৮০০ হোটেলকক্ষ, ২০টির বেশি রেস্তোরাঁ ও বার এবং একটি বিলাসবহুল শপিং মল। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নাচ-গান পরিবেশন করেন বলিউড তারকা হৃতিক রোশন। দিশানায়েকে আশা করছেন, নতুন এই রিসোর্ট পর্যটকসংখ্যা ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়াতে সাহায্য করবে; বিশেষ করে ভারত ও চীনের ধনী পর্যটকেরা ব্ল্যাকজ্যাক বা ব্যাকারার মতো খেলার টেবিলে বসতে এখানে আসবেন।

অর্থনৈতিক অবস্থা

২০২২ সালে ভয়াবহ আর্থিক সংকটে পড়ে শ্রীলঙ্কা। ঋণখেলাপি হয়ে পড়ার পর আইএমএফ থেকে বড় অঙ্কের অর্থ সহায়তা নিতে হয় তাদের। এখন তাদের পর্যটন খাত দেশের মোট জিডিপির প্রায় ৪ শতাংশ। এই ইতিবাচক অবস্থা আবারও আশার আলো হয়ে উঠছে। সরকারের ধারণা, জুয়ার টেবিলে ভাগ্য পরীক্ষা করতে আসা বিদেশি পর্যটকেরা দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখবেন।

দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রতিযোগিতা

শুধু শ্রীলঙ্কাই নয়, এশিয়ার বিভিন্ন দেশ এখন পর্যটন বাড়াতে ক্যাসিনোর দিকে ঝুঁকছে। থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া, ফিলিপাইনসহ অনেক দেশে দ্রুত নতুন ক্যাসিনো গড়ে উঠছে। আজারবাইজানও সম্প্রতি দীর্ঘদিনের এই নিষেধাজ্ঞা তুলে দিয়েছে। আরব আমিরাতও পিছিয়ে নেই। সংযুক্ত আরব আমিরাত রাস আল খাইমাহতে ২০২৭ সালে খুলতে যাচ্ছে প্রথম বড় ক্যাসিনো। সেটি চালাবে লাস ভেগাসের বিখ্যাত উইন রিসোর্টস। এমনকি মিসর কিংবা উত্তর কোরিয়ার মতো রক্ষণশীল দেশেও বিদেশিদের জন্য ক্যাসিনো চালু আছে। অনেকে পর্যটকদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থাও রেখেছে।

বিশ্বমানের প্রতিযোগিতা কঠিন

তবে লাস ভেগাস কিংবা ম্যাকাওয়ের সঙ্গে পাল্লা দেওয়া সহজ হবে না শ্রীলঙ্কার। এই দুই শহর প্রতিবছর ৮ কোটির বেশি পর্যটক টানে এবং এই খাতে প্রায় ৪০ বিলিয়ন ডলার আয় করে। শুধু ক্যাসিনো নয়; খেলাধুলা, কনসার্ট, সাংস্কৃতিক উৎসব, বিলাসবহুল হোটেল—সবকিছু মিলিয়ে সেগুলো বিশ্বমানের গন্তব্য।

ভারত ও চীনের বাজার

শ্রীলঙ্কার বড় একটি সুবিধা হলো, এটি ভারত ও চীনের মতো দুটি বিশাল বাজারের খুব কাছে। তবে ভারতে জুয়া খেলার প্রবল চাহিদা থাকলেও আইনকানুন অনেক কঠোর। গোয়াতে কিছু ক্যাসিনো থাকলেও সেগুলো তুলনায় ছোট। চীন আবার অনেক দিন ধরে আন্তর্জাতিক ক্যাসিনো পর্যটনের বড় ভরসা।

শ্রীলঙ্কা এত দিন পর্যটন টানতে খুব বড় ধরনের সমস্যায় পড়েনি। এবারও হয়তো তার ব্যতিক্রম হবে না। তবে একে সত্যিকারের লাস ভেগাস হতে হলে দেশটিকে আরও অনেক দূর যেতে হবে। এরপরও ধারণা করা হচ্ছে, ‘সিটি অব ড্রিমস’ শুধু অকার্যকর স্বপ্ন হয়ে থাকবে না, এটি শ্রীলঙ্কার পর্যটনে নতুন মাত্রা যোগ করবে।

সূত্র: দ্য টেলিগ্রাফ

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Developed By ThemesBazar.Com