টিকিট জটিলতা কাটিয়ে ১৮ হাজার বাংলাদেশী শ্রমিক খুব শিগগিরই মালয়েশিয়ার নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম। তবে দেশটিতে কর্মরত ৪ লাখ ৭৫ হাজার ৫০০ শ্রমিক গত ৩ বছরে সাড়ে ৩ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স পাঠিয়েছে দেশে।
জানা গেছে, বিদ্যমান সমঝোতা স্মারকের আওতায় ২০২২ সালের ৮ই আগষ্ট থেকে ২০২৪ সালের ৩১ মে পর্যন্ত মাত্র ২২ মাসে পৌনে ৫ লাখ বাংলাদেশী কর্মী মালয়েশিয়ায় গমন করেছে। বিশাল এই অভিবাসন প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণরূপে অনলাইন ভিত্তিক ও স্বয়ংক্রিয় সফটওয়্যার পদ্ধতি হওয়া কোন কর্মী মালয়েশিয়ায় গিয়ে প্রতারিত হননি।
তারা যথাযথ নিয়মে নিয়োগকারী কোম্পানিতে কাজ পেয়েছেন। এসব শ্রমিকরা ব্যাংকের মাধ্যমে বেতন-ভাতা পাচ্ছেন এবং সেটা রেমিটেন্ট হিসেবে বাংলাদেশে পাঠাচ্ছেন। ওই ২২ মাসে যাওয়া শ্রমিকরা ন্যূনতম ১৫শ’ রিঙ্গিত মূল বেতন এবং ওভারটাইমসহ মাসে বাংলাদেশী টাকায় প্রায় ৫০ হাজার টাকা বেতন- ভাতা পাচ্ছেন।
পুরানা পল্টনের একটি জনশক্তিকারক প্রতিষ্ঠানের মালিক রবিউল ইসলাম জানান, মালয়েশিয়া যাওয়া শ্রমকিরা সেখানকার কাজের পরিবেশ নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। কর্মীদের প্রায় সবাই ভালো আছেন। অধিকন্তু মালয়েশিয়া সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ কর্মীদের চুক্তি মোতাবেক সকল প্রকার অধিকার ও কল্যাণ আন্তরিকতার সঙ্গে নিশ্চিত করেছেন। ওই ২২ মাসে বড় সংখ্যক শ্রমিক মালয়েশিয়ায় কাজে যোগদানের পর বাংলাদেশে বৈদেশিক রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে।
বর্তমানে বৈদেশিক রেমিট্যান্স প্রাপ্তির ক্ষেত্রে বাংলাদেশে মালয়েশিয়া ৮ম থেকে ৪র্থ স্থানে এসেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে শুধুমাত্র ২০২৪ সালের আগষ্ট মাসে মালয়েশিয়া হতে প্রাপ্ত রেমিট্যান্সের পরিমাণ ২৫১ দশমিক ৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
বর্তমান ধাপে মালয়েশিয়ায় গমনকারী পৌনে পাঁচ লাখ কর্মী ও পরিবার-পরিজন মিলে অন্তত ২৫ লক্ষ মানুষ প্রত্যক্ষভাবে উপকৃত হয়েছে। তারা আরও জানান, মালয়েশিয়া সরকার কর্তৃক অনুমোদিত ১০১টি এজেন্সিসহ সহযোগী এজেন্সি এবং নিয়োগকারীর পাওয়ার অব অ্যাটর্নীর মাধ্যমে ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রায় ১১০০ রিক্রুটিং এজেন্সি বর্তমান ধাপের মালয়েশিয়ায় কর্মী প্রেরণে সক্রিয়ভাবে যুক্ত রয়েছে।
সরকারের এ্যালোকেশন অব বিজনেস মোতাবেক জনশক্তি রপ্তানি খাতের সংশ্লিষ্ট সকল বিষয় নিয়ন্ত্রণকারী মন্ত্রণালয় হচ্ছে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। বিভিন্ন তদন্তে যারা ভালো ব্যবাসায়ী তাদেরকে সহযোগিতা ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিয়ন্ত্রণ, তদন্ত করা উচিত। বিদ্যমান আইনের আওতায় তাদেরকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেওয়া হয়ে এই সেক্টরে বর্তমানে যে অস্থিরতা বিরাজ করছে তা দূর হবে এবং দ্রুতই মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারটি বাংলাদেশী কর্মীদের জন্য শীঘ্রই পুনরায় উন্মুক্ত হবে বলে আশা করা যায়।