শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০১:২৯ অপরাহ্ন

রাজশাহীর প্রশস্ত চোখজুড়ানো সড়কের সৌন্দর্যে দর্শনার্থীরা বিমুগ্ধ

  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ৩০ মে, ২০২৩

প্রশস্ত চোখজুড়ানো সড়কের দ্বীপে ফুটে আছে সূর্যমুখী, রঙন, কাঠ গোলাপ, পাম, ছাতিম, নাগালিঙ্গম গাছের মতো বিলুপ্ত প্রায় ছোট-বড় নানা জাতের বাহারি ফুল। কোথাও এক পায়ে দাঁড়িয়ে আছে তালগাছের সারির মতো দৃষ্টিনন্দন প্রজাপতিবাতি ও জলসাঘরের আদলে ঝাড়বাতি। ময়লা-আবর্জনা তো নেই-ই, নেই গাড়ি ঘোড়ারও চেনা জট।

এই দৃশ্য বিদেশের কোনো শহরের রাস্তাঘাটের নয়, এটি পদ্মানগরী রাজশাহীরই কোর্ট থেকে তালাইমারী এবং তালাইমারী থেকে ঐতিহ্য চত্ত্বর পর্যন্ত চার লেইনের সুপ্রশস্ত দৃষ্টিনন্দন সড়কের।

নগরীর এই গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো ঘুরে দেখা গেছে, এই রাস্তারই সড়কদ্বীপে লাগানো হয়েছে নানা বাহারি ফুলের গাছ। কোথাও ফুটে আছে নীল অপরাজিতা, কোথাওবা কসমস-ক্যামেলিয়া।

এছাড়াও বরেন্দ্র অঞ্চলের রাজশাহী নগরীর ফুটপাত ও সড়ক ডিভাইডারগুলোতে সূর্যমুখী, রঙন, কাঠ গোলাপ, পাম গাছ, ছাতিম, নাগালিঙ্গম গাছ থেকে শুরু করে ছোট-বড় নানা জাতের ফুলের গাছে ভরে গেছে পুরো নগরী। এই সড়কে বসানো হয়েছে জলসাঘরের আদলের ঝাড়বাতি। যেখানে দর্শনার্থীরা এই সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে ছবি তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছে।

প্রায় এক যুগ পর রাজশাহীতে চিকিৎসার জন্য এসেছেন কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধা খালেক মিয়া। তার সাথে কথা হয় নগরীর সিএন্ডবি মোড় এলাকায়। তিনি সোনার দেশকে জানান, ‘আগে থেকেই রাজশাহী উত্তরাঞ্চলের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ শহর। কিন্তু সে অনুযায়ী শহরটি সাজানো ছিল না। এখন পুরো শহর এত পরিচ্ছন্ন, পরিপাটি! এ তো শুধু শহর নয়, যেন সাজানো এক বাগান! এত সুন্দর শহর দেশে আর আছে?’

তিনি আরও জানান, প্রায় ১২ বছর পর রাজশাহী শহরে এসে অবাক হয়েছেন তিনি। এই এক যুগে রাজশাহী শহর যেন খোলনলচে বদলে গেছে। কোথায় সেই ঘিঞ্জি রাজশাহী, আর কোথায় এই বাগানের শহর!

শুধু বীর মুক্তিযোদ্ধা খালেক মিয়া নন, এখন রাজশাহী শহর দেখে মুগ্ধ হবেন যে কেউ-ই। শহরের পরতে পরতে ছড়িয়ে আছে নান্দনিকতার ছোঁয়া। পরিচ্ছন্ন এই নগরী ঘুরে আরও কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, রাজশাহী নামের এই সাজানো বাগানের রূপকার সিটি মেয়র এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন। তিনি নগরপিতা হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই বদলে যেতে থাকে রাজশাহীর চেনা রূপ। এক সময়ের ঘিঞ্জি শহর বদলে যায় অপরূপ এক দৃষ্টিনন্দন আলোকায়িত নগরীতে।

কোর্ট এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা সেলিম রেজা, দীর্ঘ দিন থেকে ডিসি অফিসের এসএ শাখায় কর্মরত আছেন। চোখের সামনে এ নগরীকে পালটে যেতে দেখেছেন তিনি।

তিনি জানান, নগরীর কোর্ট থেকে তালাইমারী পর্যন্ত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও ব্যস্ততম সড়ক। আগে এই সড়কে যানজট লেগেই থাকত। কিন্তু সিটি মেয়র এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন ভাই দায়িত্ব গ্ৰহণের পর বহুবিধ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে নগরীর দুই লেইনের সড়কগুলোকে ভেঙে প্রশস্ত চার লেইনে উন্নিত করেছেন। সড়ক সম্প্রসারণের ফলে এ শহরের মানুষ যানজট ভুলে গেছে। আর রাতে যখন সড়কবাতি জ্বলে ওঠে মনে হয় যেন জলসাঘর ঝলমলিয়ে উঠল।

সাইদুর রহমান মালয়েশিয়াতে একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি করে। তিনি নতুন বিয়ে করেছেন। বন্ধুদের কাছে গল্প শুনে সম্প্রতি সিরাজগঞ্জ থেকে রাজশাহী শহরে নতুন বৌ নিয়ে ঘুরতে এসেছেন।

তিনি বলেন, ‘শহরটির পরিচ্ছন্ন পরিবেশ, প্রশস্ত রাস্তা, উন্নত ড্রেনেজ ব্যবস্থা, সবুজায়ন, আলোকায়ন, দৃষ্টিনন্দন সড়ক বিভাজক ও বিনোদন কেন্দ্র আমাকে মুগ্ধ করেছে। এ শহর ঘুরে দেখলে যে কাউকে চোখের প্রশান্তি দেবে। কোর্ট থেকে তালাইমারী পর্যন্ত চার লেইনের সুপ্রশস্ত সড়কের এই সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে যেখানে যাচ্ছি, সেখানেই ছবি তুলতে ইচ্ছে করছে।’

আমার রাজশাহী

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com