শুক্রবার, ০২ মে ২০২৫, ১২:৪৭ পূর্বাহ্ন

যে গ্রামে দু’মাসে একবার বিমানে আসে খাবার

  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ১ মে, ২০২৫

আলাস্কার পোর্ট অ্যালসওয়ার্থ বিশ্বের সবচেয়ে নির্জন গ্রামগুলোর তালিকায় পড়ে। সেখানেই থাকেন ২৭ বছর বয়সি সেলিনা অ্যালসওয়ার্থ। চারদিক বরফে ঢাকা, শান্ত, প্রত্যন্ত (Remote) সেই গ্রামে আধুনিকতার ছোঁয়া পর্যন্ত নেই। নেই কোনও দোকান, রেস্তোরাঁ-বার। প্রায় ১৮০ জন মানুষের এই ছোট্ট গ্রাম পুরোটাই নির্ভর করে আকাশপথে আসা রসদের ওপর। সবচেয়ে কাছের শহর অ্যাঙ্কোরেজ সেখান থেকে প্রায় ৩০৬ কিলোমিটার দূরে।

সেলিনা জানান, গ্রামে একটি প্রাথমিক চিকিৎসাকেন্দ্র থাকলেও, হাসপাতাল নেই। বাচ্চা হওয়ার সময় বা কোনও সার্জারির দরকার হলে বিমানে করেই শহরে যেতে হয়।

ওই গ্রামেই জন্ম সেলিনার, জীবনের ২৭টি বছর সেখানেই। তাঁর পূর্বপুরুষরা ১৯৪০-এর দশকে আমেরিকা সরকারের ‘হোমস্টেডিং’ প্রোগ্রামের আওতায় ওই গ্রামে বসবাস শুরু করেন। ওই সময়ে কেউ যদি প্রমাণ করতে পারতেন যে তাঁরা নিজেরা জমিতে চাষ করে বেঁচে থাকতে পারবেন, তবে সেই জমি তাঁদের দিয়ে দেওয়া হত।

আজকের দিনে যখন পৃথিবী এতটা এগিয়ে গেছে, ওই মানুষগুলোর জীবনযাত্রা খুব যে সহজ হয়েছে এমন নয়। খাবারদাবার আসে প্রতি দু’মাসে একবার মাত্র। বরফ-কুয়াশা এখানে বড় বাধা। তাই আবহাওয়া ভাল না থাকলে, সেই সময় বিমান চলাচলও বন্ধ থাকে।

আলাস্কার পোর্ট অ্যালসওয়ার্থ বিশ্বের সবচেয়ে নির্জন গ্রামগুলোর তালিকায় (Alaska community) পড়ে
আলাস্কার পোর্ট অ্যালসওয়ার্থ বিশ্বের সবচেয়ে নির্জন গ্রামগুলোর তালিকায় (Alaska community) পড়ে

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

গ্রামের একমাত্র দোকান ‘লেক ক্লার্ক রিসর্ট’-এর একটি গিফট শপে ম্যানেজার হিসেবে কাজ করেন সেলিনা। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের জন্য অ্যাঙ্কোরেজ-ই একমাত্র ভরসা, কিন্তু শীতকালে সেই রাস্তার ওপরও নির্ভর করা কঠিন।

সেলিনার স্বামী, ২৫ বছরের জ্যারেড রিচার্ডসন, ডেট্রয়েটের বাসিন্দা। ২০২২ সালে যখন তিনি এই গ্রামে আসেন, তাঁদের পরিচয় হয় স্থানীয় রিসর্টে। শহুরে জীবন ছেড়ে এমন এক বিচ্ছিন্ন জায়গায় এসে মানিয়ে নিতে সময় লাগলেও এখন সেই জীবনকেই ভালবেসে ফেলেছেন তিনি।

অক্টোবরে শীতের জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র মজুত করতে পারলে মে মাস পর্যন্ত তবু চালানো সম্ভব হয়। স্থানীয় এলাকায় যা পাওয়া যায় তাও তাঁরা কাজে লাগান। জুলাইয়ে স্যামন মাছ, আর সেপ্টেম্বরে মুস (হরিণ প্রজাতির প্রাণী) শিকারের সময় এলে সেসবও সংগ্রহ করে রাখেন।

আলাস্কার পোর্ট অ্যালসওয়ার্থ গ্রামে দু’মাসে একবার বিমানে আসে খাবার !
আলাস্কার পোর্ট অ্যালসওয়ার্থ গ্রামে দু’মাসে একবার বিমানে আসে খাবার !

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

যখনই কারও কোনও বিপদ হয় বা সাহায্য দরকার হয়, গ্রামের সবাই একে অপরের পাশে দাঁড়ান। কেউ যদি শহরে যান, তিনি আগেই জেনে নেন, কারও কিছু লাগবে কি না। এভাবেই তাঁরা সবাই সবার খেয়াল রাখেন।

মাঝে মাঝে সেলিনা শহরের দিকে যান ঠিকই, তবে হাজার অসুবিধা সত্ত্বেও তিনি পাকাপাকিভাবে কোথাও যেতে চান না। নিজের গ্রামই তাঁর পরম ভালবাসার জায়গা।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com