বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১১:৩২ অপরাহ্ন

যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও আর কোন কোন দেশ জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব দেয়

  • আপডেট সময় সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

মেরিল্যান্ডের জেলা জজ ডেবোরা বোর্ডম্যান বলেছেন, ‘আজকের দিনে যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে জন্ম নেওয়া প্রায় প্রতিটি শিশু জন্মগতভাবেই যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক হয়ে থাকে। এটি আমাদের দেশের আইন ও ঐতিহ্য। এই আইন ও ঐতিহ্যই এই মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত বহাল থাকবে।’

২০ জানুয়ারি শপথ নেওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর ট্রাম্প মিথ্যা দাবি করে বলেন যে যুক্তরাষ্ট্রই একমাত্র দেশ যেখানে জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব দেওয়া হয়। তিনি ওভাল অফিস থেকে বলেন, ‘এটি হাস্যকর। জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব দেওয়ার বিষয়টি শুধুমাত্র আমাদের দেশেই রয়েছে। এটি সম্পূর্ণ অযৌক্তিক।’

ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশের বিরুদ্ধে আলাদা একটি মামলায় সিয়াটলভিত্তিক এক ফেডারেল জজ একে ‘স্পষ্টতই অসাংবিধানিক’ ঘোষণা করেছেন। ফলে আদেশটি ইতোমধ্যেই সারাদেশে সাময়িকভাবে স্থগিত রয়েছে।

মোট ২২টি রাজ্য ও বেশ কয়েকটি সংস্থা এই নির্বাহী আদেশের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। আদেশটি যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের ১৪তম সংশোধনীর নাগরিকত্ব সংজ্ঞা পরিবর্তন করতে চায়। যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণকারীদের নাগরিকত্ব নিশ্চিত করে সংবিধানের এই সংশোধনী।

জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব কী?

জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব হলো একটি আইনি নীতি। যেখানে কোনো ব্যক্তির বাবা-মায়ের জাতীয়তা বা অভিবাসন অবস্থা বিবেচনা না করেই শুধু দেশের ভৌগোলিক সীমানার মধ্যে জন্মগ্রহণের ভিত্তিতে তাকে নাগরিকত্ব দেওয়া হয়। এটি ‘জাস সোলাই’ (জমির অধিকার) নীতির অধীনে দেওয়া হয়।

জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের বিকল্প হলো অভিভাবকের জাতীয়তা বা নাগরিকত্বের ভিত্তিতে নাগরিকত্ব নির্ধারণ করা। ‘জাস স্যাঙ্গুইনিস’ (রক্তের অধিকার) নীতির আওতায় যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে জন্ম নেওয়া কোনো ব্যক্তির বাবা-মা যদি যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক হন, তাহলে ওই ব্যক্তি নাগরিকত্ব পেতে পারেন।

যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব পাওয়ার আরেকটি উপায় হলো স্বাভাবিকরণ প্রক্রিয়া। যেখানে নির্দিষ্ট আইনি শর্ত পূরণ করতে হয়। যেমন নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত ওই দেশে বসবাস করা, ভাষাগত দক্ষতা ও নাগরিকত্ব পরীক্ষা পাশ করা ইত্যাদি।

যুক্তরাষ্ট্র কতদিন ধরে জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বহাল রেখেছে?

গত ১৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে যুক্তরাষ্ট্র জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব দিচ্ছে। ১৮৬৮ সালে সংবিধানের ১৪তম সংশোধনী অনুমোদিত হওয়ার পর থেকে এটি কার্যকর রয়েছে।

এই সংশোধনীতে বলা হয়েছে, ‘যেকোনো ব্যক্তি, যিনি যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণ করেছেন বা এখানে নাগরিকত্ব অর্জন করেছেন এবং এখানকার আইনি অধীনস্থ, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের এবং যে রাজ্যে বসবাস করেন তার নাগরিক।’

গৃহযুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে প্রাক্তন দাস ও মুক্ত আফ্রিকান আমেরিকানদের নাগরিকত্ব নিশ্চিত করতেই এই সংশোধনী আনা হয়েছিল।

কোন কোন দেশে জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব দেওয়া হয়?

সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সির (সিআইএ) ওয়ার্ল্ড ফ্যাক্টবুক-এর তথ্যমতে, অন্তত ৩৩টি দেশ নিজেদের সীমানার মধ্যে জন্ম নেওয়া ব্যক্তিদের স্বয়ংক্রিয়ভাবে নাগরিকত্ব প্রদান করে। এসব দেশ বেশিরভাগই আমেরিকা অঞ্চলের।

কিছু দেশে শর্তসাপেক্ষে জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব দেওয়া হয়। এসব দেশে নির্দিষ্ট বয়স (১৮ বছর) পূরণের পর নাগরিকত্ব পাওয়া যায়।

যেসব দেশে শর্তহীনভাবে জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব দেওয়া হয়

অ্যান্টিগুয়া ও বারবুডা, আর্জেন্টিনা, বার্বাডোস, বেলিজ, বলিভিয়া, ব্রাজিল, কানাডা, চিলি, কোস্টারিকা, কিউবা, ডোমিনিকা, ইকুয়েডর, এল সালভাদর, গাম্বিয়া, গ্রেনাডা, গুয়াতেমালা, গায়ানা, হন্ডুরাস, জামাইকা, লেসোথো, মেক্সিকো, নিকারাগুয়া, পানামা, প্যারাগুয়ে, পেরু, সেন্ট কিটস ও নেভিস, সেন্ট লুসিয়া, সেন্ট ভিনসেন্ট ও গ্রেনাডিনস, ত্রিনিদাদ ও টোবাগো, টুভালু, যুক্তরাষ্ট্র, উরুগুয়ে, ভেনেজুয়েলা।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com