কানাডা উত্তর আমেরিকার উত্তরাংশে অবস্থিত, আয়তনে এটি বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ। ১৫ শতকের গোড়ার দিকে ইংরেজ এবং ফরাসি অভিযাত্রীরা এখানকার আটলান্টিক উপকূল আবিষ্কার করেন এবং পরে বসতি স্থাপনের উদ্যোগ নেন।
হাড় কাঁপানো ঠান্ডা, ম্যাপল পাতা, আর বিনয়ী মানুষের দেশ হিসেবে পরিচিত কানাডা নিয়ে জেনে নিন কিছু অজানা বিষয়।
১. পৃথিবীর সবচেয়ে বড় উপকূলরেখাটি কানাডায় অবস্থিত। যার দৈর্ঘ্য ২,৪৩,৯৭৭ কিলোমিটার। এটি প্রশান্ত মহাসাগর, আটলান্টিক এবং আর্কটিক মহাসাগর দ্বারা বেষ্টিত।
২. কানাডিয়ানরা ভীষণ রকমের বিনয়ী হয়ে থাকেন। বিনয় আর ভদ্রতার জন্য বিশ্বে তাদের পরিচিতি রয়েছে। ভুলবশত কোন কাজ করে ফেললে তারা আপনার কাছে কয়েকবার ক্ষমা প্রার্থনা করবেন। ‘দুঃখিত’ না বলা এখানে অভদ্রতা হিশেবে গণ্য করা হয়। শুনতে অবাক লাগলেও সত্যি যে ২০০৯ সালে কানাডায় ক্ষমা চাওয়া আইন পাস করা হয়েছিল।
৩. কানাডাতে আছে প্রায় ৩ মিলিয়ন হ্রদ। শুধু তাই নয়, এখানে বিশ্বের ২০ শতাংশ পানযোগ্য পানি রয়েছে।
৪. আপনার শরীর থেকে যদি দুর্গন্ধ বেরোয় তাহলে আপনাকে জেলে থাকতে হবে! অবাক হচ্ছেন? হওয়ারই কথা। কানাডাতে কারো শরীর থেকে দুর্গন্ধ বের হওয়া আইন ভাঙার সমান। আর এর সাজা দুবছরের জেল!
৫. শুধুমাত্র ফ্রান্সের অধিবাসীরাই কি ফরাসি ভাষায় কথা বলেন? মোটেই তা নয়। আপনি যদি কখনো কানাডার মন্ট্রিয়ালে যান আপনার কাছে মনে হতে পারে, ভুল করে প্যারিসে চলে এলাম না তো? এখানকার ৩৮ লাখ ২০ হাজার ২২১ জন অধিবাসীর মাতৃভাষা ফরাসি।
৬. কানাডায় প্রতি ১০০০ জন মানুষের জন্য ৪৫৯টি গাড়ি রয়েছে।
৭. কানাডায় উচ্চশিক্ষার হার অন্যান্য যেকোন দেশের তুলনায় বেশি। দেশটিতে সাক্ষরতার হার ৯৯ শতাংশ, শুধু তাই নয় এখানকার ৫৬ শতাংশ মানুষ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চতর ডিগ্রি নিয়ে পড়াশোনা শেষ করেছেন।
৮. কানাডার প্রায় ৯০ শতাংশ জায়গায় কোন মানুষের বসবাস নেই। দেশটির বেশিরভাগ মানুষই আমেরিকা-কানাডার সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে বাস করেন। কিছু কিছু এলাকায় প্রায় সারা বছরই ভীষণ রকমের ঠান্ডা পড়ে যেকারণে এখানে লোকজনের বসবাস কম।
৯. কানাডা প্রতি বছরই বিপুল সংখ্যক অভিবাসীকে স্বাগত জানায়। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর লিবারেল পার্টি ক্ষমতায় আসার পর বিশ্বের সবচাইতে অভিবাসনবান্ধব দেশ হয়ে উঠেছে এটি। প্রতি বছর কানাডায় যে সংখ্যক অভিবাসী আসেন তা কানাডার মোট জনসংখ্যার ১ শতাংশ। অভিবাসীদের মধ্যে ভারতীয়দের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। এছাড়াও চীন, ফিলিপাইন, সিরিয়া থেকেও অনেক মানুষ এখানে পাড়ি জমিয়েছেন।
১০. কানাডিয়ান প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো সোশ্যাল মিডিয়ায় দারুন জনপ্রিয়। টুইটারে তার ফলোয়ার ৪ দশমিক ৬৩ মিলিয়ন। উদারপন্থী মনোভাব, অভিবাসনবান্ধব নীতির কারণে তিনি সারা বিশ্বেই বেশ জনপ্রিয়। যদিও উচ্চহারে ট্যাক্স বাড়ানো ও জলবায়ু ইস্যুসহ নানা কারণে অনেক কানাডিয়ান তাকে একেবারেই পছন্দ করেন না।
১১. সৌদি আরব এবং ভেনিজুয়েলার পরে তেলমজুদে কানাডা তৃতীয়। শুধু তাই নয়, বিশ্বের যে কোনও জায়গার তুলনায় কানাডায় ইউরেনিয়ামের উত্পাদন অনেক বেশি। ইউরেনিয়াম পারমাণবিক শক্তি যোগানে ব্যবহৃত হয়। ১৫০০ টন কয়লা যে শক্তি উত্পাদন করতে পারে, সে পরিমাণ শক্তি উৎপাদনের সক্ষমতা রয়েছে এক কেজি ইউরেনিয়ামের।