লেবানন, মধ্যপ্রাচ্যের একটি ছোট কিন্তু সমৃদ্ধশালী দেশ, তার বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতি এবং ঐতিহাসিক গুরুত্বের জন্য বিখ্যাত। এই দেশের এভিয়েশন সেক্টরেও রয়েছে একটি বিশেষ স্থান, যার অন্যতম প্রধান আকর্ষণ হল মিডল ইস্ট এয়ারলাইন্স (Middle East Airlines – MEA)। এই এয়ারলাইন্সটি লেবাননের জাতীয় পতাকাবাহী সংস্থা এবং বিশ্বজুড়ে একটি সুপরিচিত ব্র্যান্ড।
১৯৪৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়া মিডল ইস্ট এয়ারলাইন্স লেবাননের রাজধানী বৈরুত ভিত্তিক একটি এয়ারলাইন। এর প্রধান হাব হলো বৈরুত-রাফিক হারিরি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। ১৯৬০-এর দশক থেকে শুরু করে, MEA দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এবং আন্তর্জাতিক বাজারে লেবাননের প্রতিনিধিত্ব করে।
MEA বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন গন্তব্যে ফ্লাইট পরিচালনা করে। এশিয়া, ইউরোপ, আফ্রিকা এবং মধ্যপ্রাচ্যের প্রায় ৩০টির বেশি গন্তব্যে এই এয়ারলাইন্সের পরিষেবা উপলভ্য।
MEA-এর বিমানবহর আধুনিক এবং পরিবেশবান্ধব। তারা মূলত এয়ারবাস এ৩২০ এবং এ৩২১ নিউ জেনারেশন বিমানের মাধ্যমে তাদের অপারেশন পরিচালনা করে। এই বিমানগুলোতে উন্নত প্রযুক্তি এবং যাত্রীদের জন্য অত্যাধুনিক সুবিধা রয়েছে।
মিডল ইস্ট এয়ারলাইন্স তাদের গ্রাহক সেবার জন্য বিখ্যাত। তারা ব্যবসায়িক শ্রেণি (Business Class) এবং অর্থনৈতিক শ্রেণি (Economy Class)-এর জন্য আলাদা সুবিধা প্রদান করে।
MEA-এর সিডার্স মাইলস (Cedars Miles) প্রোগ্রাম যাত্রীদের পুরস্কার সুবিধা প্রদান করে। এই প্রোগ্রামের মাধ্যমে যাত্রীরা ফ্লাইট মাইল সংগ্রহ করতে পারেন এবং তা ভবিষ্যতের টিকিট, আপগ্রেড, বা অন্যান্য পরিষেবার জন্য ব্যবহার করতে পারেন।
লেবাননের অর্থনৈতিক সংকট এবং রাজনৈতিক অস্থিরতা থাকা সত্ত্বেও MEA তার অপারেশন চালিয়ে যাচ্ছে এবং আন্তর্জাতিক মান ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে। ২০২০ সালে তারা স্কাইটিম অ্যালায়েন্স (SkyTeam Alliance)-এর অংশ হয়, যা তাদের গ্লোবাল নেটওয়ার্ক আরও শক্তিশালী করে।
MEA ভবিষ্যতে তাদের ফ্লাইট নেটওয়ার্ক আরও বিস্তৃত করতে এবং টেকসই পরিবেশ বান্ধব প্রযুক্তি গ্রহণের পরিকল্পনা করছে।
লেবাননের এভিয়েশন শিল্পের একটি মুকুট রত্ন হল মিডল ইস্ট এয়ারলাইন্স। এটি শুধু একটি এয়ারলাইন নয়, বরং লেবাননের সংস্কৃতি এবং আতিথেয়তার এক অসাধারণ প্রতীক। MEA-এর মাধ্যমে লেবাননের আকাশপথে একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যত তৈরি হচ্ছে।