মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি শিক্ষার্থী হাসিবুর দরিদ্র পরিবারের সন্তান। মা, মানুষের কাঁথা সেলাই করে ছেলেকে পড়িয়েছেন। বাবা, মানুষের কাজ করে ছেলেরপড়ার খরচ ও সংসার চালাতেন। হাসিবুর লেখাপড়ার পাশাপাশি মানুষের বাড়ি কাজ করত এবং ছেলেমেয়েদের পড়াতো। হাজারও প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে তার পথ চলা। সে মনে প্রাণে বিশ্বাস করে সৎ পথে থেকে, কঠোর পরিশ্রম করলে সফলতা পাওয়া যায়। আর তাই কঠোর সংগ্রামের মধ্য দিয়ে এগিয়ে চলেছে হাসিবুর।
পাবনা জেলার চাটমোহর উপজেলার মূলগ্রাম ইউনিয়নের খতবাড়ী গ্রামের শাহাদত হোসেন ও মরিয়ম খাতুনের ছেলে হাসিবুর রহমান, জগতলা দাখিল মাদরাসা থেকে জিপিএ ৫ ও চাটমোহর সরকারি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে ২০১৫ সালে উচ্চশিক্ষার উদ্দেশ্যে মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমান।
মালয়েশিয়ার এপিটমি কলেজ থেকে ডিপ্লোমা ইন বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন সম্পন্ন করেন। সেলাঙ্গর ইসলামিক ইউনিভার্সিটি থেকে ব্যাচেলর অফ হিউম্যান রিসোর্স সম্পন্ন করেছেন। মেধা ও দক্ষতায় দেশের নাম উজ্জ্বল করছে। হাসিবুর রহমান বাংলাদেশ স্টুডেন্ট ইউনিয়ন মালয়েশিয়ার (বিএসইউএম) কার্যনির্বাহী সদস্য। ভবিষ্যতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হয়ে দেশের সুনাম অর্জন করতে পারেন সেজন্য দেশবাসী ও প্রবাসীদের দোয়া চেয়েছেন।
হাসিবুরের বাবা শাহাদত হোসেন জানান, কখনোই ছেলের প্রয়োজন পুরোপুরি মেটাতে পারিনি। এক বিঘা মাত্র জমি আবাদ করি। অন্যের বাড়িতে শ্রম বিক্রি করে তিন সন্তানকে মানুষ করতে চেষ্টা করছি।
মা মরিয়ম খাতুন জানান, টাকার জন্য কখনো মানুষের কাঁথা সেলাই করে দিয়েছি। হাঁস মুরগি পালন করেছি। ওদের পড়ালেখার টাকার জোগান দিতে ডিম না খেয়ে বিক্রি করতে হয়েছে। ছোট ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান সজীবও পড়ালেখা করছে। ওদের জন্য অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। এখনও করতে হচ্ছে।
হাসিবুরের শিক্ষক মজিবুর রহমান জানান, বাবা-মায়ের আর্থিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় ছেলেটাকে এ পর্যায়ে নিয়ে আসতে অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। আমরা তার উজ্জ্বল ভবিষ্যত কামনা করছি।
হাসিবুর সেলাঙ্গর ইসলামিক ইউনিভার্সিটি থেকে ব্যাচেলর শেষ করে বর্তমানে ইউনিভার্সিটি উতারা মালয়েশিয়া (ইউইউএম) এ মাস্টার অফ হিউম্যান রিসোর্স এ অধ্যয়নরত।