মে ৫: ওয়র্ক ফ্রম হোম পুরোপুরি কার্যকর। কাঁচা বাজার আর রসদ নিয়ে যে ভয় ছিল, কেটে গিয়েছে অনেকটাই। স্টেরিলাইজ়েশন প্রোগ্রামের সাফল্য ঘোষণা হয়েছে। দিনের বেলা সুপারমার্কেট খুলে যাওয়ায়, বাজার করার ছুতোয় কয়েক পা হেঁটে আসতে পারছি। মন্দ লাগছে না। হাতে দস্তানা, মুখে মাস্ক, সুপারমার্কেটের দরজায় জ্বর মাপতে দাঁড়িয়ে থাকা সিকিয়োরিটি, সোশ্যাল ডিসট্যান্সিংয়ের স্টিকার আঁটা বাস স্ট্যান্ড… এ যেন নতুন পৃথিবীর ডাক। ফুড ডেলিভারি অ্যাপের মানুষগুলোকেও রাস্তায় বেশ দেখা যাচ্ছে। গত মাসেও খাবার আসতে বেশ সময় লাগছিল। কিন্তু এখন কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পরিষেবা মিলছে। এ দিকে চেনাজানা কয়েকজন ভাইরাসের শিকার হয়েছেন ইতিমধ্যে। প্রত্যেকেই চিকিৎসা পেয়েছেন সরকারি তত্ত্বাবধানে। ডেডিকেটেড কোভিড ট্রিটমেন্ট সেন্টারে, ড্রাইভ-ইন-টেস্টিং ফেসিলিটি আর প্রায় সব নাগরিকের টেস্ট করে ফেলার লক্ষ্যে সরকার এগিয়ে চলেছে।
জুলাই ২৫: আজ অফিস গিয়েছিলাম, পাঁচ মাস পরে। এখন সপ্তাহে তিন দিন অফিস যাওয়া। অন্য দিনে ওয়র্ক ফ্রম হোম। রাতে যাতায়াতের উপরে নিষেধাজ্ঞা উঠে গিয়েছে। সরকারি নজরদারি সর্বত্র। নতুন সোশ্যাল ডিসট্যান্সিংয়ের নিয়ম না মানলেই ব্যবসা বন্ধ। মহামারিতে অনেক মানুষ জীবিকা হারালেন। মরুশহরের স্বপ্ন দেখা শেষ করে তাঁরা দেশের পথে। বন্দে ভারত। আকাশে এমিরেটস এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট দেখা যাচ্ছে ইতিউতি।
অগস্ট ৩১: বছরের এই সময়ে শহর মোটামুটি ফাঁকা হয়ে যায়। স্কুল ছুটি আর মরুভূমির গ্রীষ্মকাল। এ বার দেশে ছুটি কাটানো হল না প্রবাসী মানুষের। খুলে গিয়েছে সব মল। রেস্তরাঁয়ও বিধিনিষেধ মেনেই বেড়েছে লোকের আনাগোনা। ‘সীসা’ আর দুবাই সমার্থক প্রায়। খোলা আকাশের নীচে সীসার গন্ধ একটু ভুলে যাওয়া দুবাইকে মনে করাচ্ছে।
অক্টোবর ২৮: ৯০ লক্ষ মানুষের দেশে প্রায় ১২০ লক্ষ পিসিআর টেস্ট (অনেকের একাধিক বার টেস্ট হয়েছে) করার পরে সংক্রমণের সংখ্যা ১,২৯০০০, মৃতের সংখ্যা ৪৮৫। সারা পৃথিবীর সংক্রমণের সংখ্যার তুলনায় বেশ কম বলা চলে।
জীবনের গতি ফিরে এসেছে আবার। জনহীন রাস্তার দুঃস্বপ্নগুলো এখনও আসে, তবু বাঁচার আলোয় দিন শুরু হয়… আজ তবে এই পর্যন্ত।