সমুদ্রপ্রেমীদের নতুন গন্তব্য মনপুরা দখিনা হাওয়া সৈকত। অপরূপ সৌন্দর্যের এ লীলাভূমি এখন পর্যটকদের নজর কাড়ছে। বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে মনপুরার নিরিবিলি দখিনা হাওয়া সৈকতটি।
মনপুরা সমুদ্র সৈকত নামেও পরিচিত স্থানটি। কক্সবাজার, কুয়াকাটার মতোই দেশি-বিদেশি পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত থাকে ভোলার মনপুরা দখিনা হাওয়া সি-বিচ।

বর্তমানে এ দ্বীপের আয়তন ৩৭৩ বর্গ কিলোমিটার। চারপাশের সবুজ শ্যামল প্রকৃতি, হরিণ, সোনালি ধান আর ম্যানগ্রোভ বনে ঘেরা মনপুরা বরাবরই পর্যটকদের কাছে দর্শনীয় এক স্থান। বর্তমানে সেখানে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে এই বালুকাময় সমুদ্রসৈকতে।
মেঘনাবেষ্টিত দ্বীপ উপজেলার দক্ষিণভাগে বঙ্গোপসাগরের উত্তাল ঢেউয়ে বালু জমে গড়ে উঠেছে এক কিলোমিটার লম্বা সমুদ্রসৈকত। এটি উপজেলার দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়নের সর্বদক্ষিণে রহমানপুর গ্রামে অবস্থিত।

ইতিহাস-ঐতিহ্যে ভরা মনপুরা উপজেলাটিতে আছে অনেক দিঘী। ভোলার আগেই এ দ্বীপটি জেগে উঠেছে, যার বয়স প্রায় দেড় হাজার বছর। মনপুরা সমুদ্র সৈকতে এখন শত শত পর্যটকের আনাগোনা লেগেই থাকে। মাত্র ২ বছর বয়সেই এ সৈকতটি হাজারো পর্যটককে নিজের কাছে টেনেছে।
দিনে দিনে জনপ্রিয় হচ্ছে দুই বছর বয়সী এ সৈকত। সেখানে গেলেই দেখতে পারবেন জেলেদের মাছ ধরার প্রতিযোগিতা। লাল চেউয়া, সাদা চেউয়া, টাইগার চিংড়ি, পোয়া, ভেটকি, তাপসী, চুলের ডাঁটি, লইট্যা। আর ইলিশ তো আছেই।

সাগরের তীর ঘেঁষে বন। সামনে বিশাল জলরাশি। বালিতে ঢাকা পদস্থল। এলাকার কর্তৃপক্ষের অর্থায়নে পর্যটকদের বিশ্রামের জন্য বসানো আছে অসংখ্য ইজি চেয়ার। খরের ছাউনি, চতুর্মুখী জানালার মতো করে কুঁড়েঘরও করা আছে।
দু’জনে বসার মতো গাছের গুঁড়ির চেয়ার। বনের গাছে জালের দোলনা। ঝাউ আর কেওড়াগাছের ছায়ায় এ দোলনায় শুয়ে আরামে ঘুমিয়ে নিতে পারবেন কয়েক ঘণ্টা। রাতে যদি সমুদের তীরে থাকতে চান, তাহলে ট্রাভেল তাঁবুতে নিরাপদেই থাকতে পারেন।

যেভাবে যাবেন
ঢাকার সদরঘাট থেকে লঞ্চে ডেকে ৩৫০ টাকা ও কেবিনে এক হাজার ২০০ টাকায় সরাসরি মনপুরায় যেতে পারেন। এ ছাড়াও বরিশাল থেকে লঞ্চযোগে ভোলার ভেদুরিয়া হয়ে বাসযোগে তজুমুদ্দিন সি ট্রাক ঘাট গিয়ে সেখান থেকে লঞ্চে সন্ধ্যায় মনপুরা পৌঁছাতে পারবেন।
অন্যদিকে ভোলার ভেদুরিয়া থেকে বাসযোগে চরফ্যাশন লঞ্চঘাট। সেখান থেকে লঞ্চ করে সরাসরি মনপুরার জনতাঘাট হয়ে দখিনা হাওয়া সি বিচে যেতে পারেন।
থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা
মনপুরা সৈকতের আশেপাশে থাকার তেমন ব্যবস্থা নেই। তবে উপজেলা শহরে জেলা পরিষদের চারতলা ও দোতলা দু’টি ডাকবাংলো এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের রয়েছে একটি ডাকবাংলো।
এ ছাড়াও ব্যক্তিগত উদ্যোগে গড়ে উঠেছে আধুনিক আবাসিক হোটেল। মনপুরা সদর থেকে অটোরিকশা ও ভাড়ায়চালিত মোটরসাইকেল করে বিচে যাওয়া যায়।