মধু পূর্ণিমা । এটি বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব। ঢাকা, চট্টগ্রাম ও তিন পার্বত্য জেলায় দিনটিকে মধু-অর্ঘ হিসেবে পালন করা হয়। দেশের অন্যান্য স্থানের মতো বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মানুষরা রাজধানীতেও গভীর ভক্তি ও উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে মধু পূর্ণিমা উদযাপন করবেন।
বৌদ্ধ পুরান অনুযায়ী, গৌতম বুদ্ধ পারিলেয়া বনে বর্ষাযাপন কালে একটি হাতি প্রতিদিন ফল সংগ্রহ করে বুদ্ধকে দান করত। এ সেবা করা দেখে বনের একটি বানরেরও বুদ্ধকে পূজা করার ইচ্ছা জাগে। ভাদ্র পূর্ণিমাতে সে একটি মৌচাক সংগ্রহ করে বুদ্ধকে দান করে। মৌচাকে মৌমাছির ছানা ও ডিম থাকায় বুদ্ধ প্রথমে মধু পান করেননি। বানর তা বুঝতে পেরে মৌচাকটি নিয়ে ছানা ও ডিম পরিষ্কার করে পুনরায় বুদ্ধকে দান করলে এবার বুদ্ধ মধু পান করেন। মধু পান করতে দেখে বানর খুশিতে, আনন্দে আত্মহারা হয়ে বৃক্ষ শাখা থেকে বৃক্ষশাখায় লাফাতে লাগল। হঠাৎ অসাবধানতাবশত বৃক্ষের শাখা ভেঙে বানর মাটিতে পড়ে গাছের গোড়ায় আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে মারা যায়।
পারিলেয়া বনে হাতির কাছে বুদ্ধের সেবাপ্রাপ্তি ও বানরের মধুদানের কারণে এ দিনটি বৌদ্ধদের কাছে স্মরণীয় ও আনন্দ-উৎসবমুখর পুণ্যময় একটি দিন।
এ দিনের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে ভোরে ত্রিপিটক পাঠ, সমবেত বুদ্ধ বন্দনা, জাতীয়, ধর্মীয় ও স্ব স্ব সংগঠনের পতাকা উত্তোলন, বুদ্ধ পূজা, পঞ্চশীল ও শীল গ্রহণ, ভিক্ষু সংঘের পিণ্ডদান, শীলধারীদের মধ্যাহ্নভোজ গ্রহণ, মধু পূর্ণিমার তাৎপর্য আলোচনা, আলোক সজ্জা, বুদ্ধ কীর্তন, সন্ধ্যাকালীন প্রদীপ পূজা, দেশের শান্তি ও সমৃদ্ধি এবং জীব জগতের মঙ্গল কামনায় সমবেত প্রার্থনা।