চারদিকে শুধু তুলোর মত সাদা আর সাদা যেন আকাশে ভেসে আছি।কাশ্মীরে শুধু মনে হবে যেন এক স্বপ্নপুরিতে এলাম।চারদিকে সাদার ভেলা আর পর্বত পাহাড়,সবুজের দেখা পাওয়া।কাশ্মীরকে বলা হয় পৃথিবীর ভূ-স্বর্গ যা ভারতীয় উপমহাদেশে উত্তর পশ্চিমের একটি অঞ্চল।মোগল সময়ে গ্রীষ্মকালে অবকাশ যাপনের জন্য কাশ্মীরে আকৃষ্ট হয়েছিলো মোগলরা।হিমালয়ান পর্বতমালার দুটি রেঞ্জের মধ্যবর্তী একটি উপত্যকা মূলত কাশ্মীর।
কিভাবে যাবো এ পৃথিবীর ভূ-স্বর্গতে
কাশ্মীর যাওয়ার উপায় দুইভাবে।হয় ঢাকা থেকে কলকাতা হয়ে যেতে হবে নয়ত ঢাকা থেকে সরাসরি কাশ্মীর যেতে হবে।বিমানে ঢাকা থেকে দিল্লি ইন্ধিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হয়ে যাওয়া যায়।এরপর দোমেস্টিক বিমানে জম্মু বা শ্রীনগর যেতে হবে।তবে কেউ যদি কলকাতা হয়ে যেতে চায় তাহলে কলকাতা থেকে সরাসরি শ্রীনগর কোন ফ্লাইট থাকে না।অর্থাৎ, আপনাকে ভেঙ্গে ভেঙ্গে যেতে হবে।তবে ভেঙ্গে গেলে খরচ কম হয় সরাসরি যাওয়ার চেয়ে।তাছাড়া অন্তত এক্মাস আগে থেকে বিমানের টিকেট এবং হোটেল বুক করে রাখা ভালো এবং যে জায়গায় যাচ্ছেন সে জায়গা সম্পর্কে একটা বিস্তারিত আইডিয়া নিয়ে নেওয়া কিন্তু খারাপ নয়।
কাশ্মীর মানে চিকচিক করা তুষার রাজ্য।আর সেখানকার ঐতিহ্য সংস্কৃতি আপনাকে মুগ্ধ করবে বারবার।কাশ্মীর ট্রেনে বা বাসে যাওয়া যায় কলকাতা বা দিল্লি থেকে।কলকাতা থেকে জম্মু ট্রেনে যেতে সময় লাগে ৪৫ ঘন্টা সময় লাগে তবে জম্মু থেকে শ্রীনগর বিমানে যেতে ২৫ মিনিট লাগবে।তবে শীতকালে জম্মু থেকে কাশ্মীর যাওয়ার রাস্তাটা বন্ধ থাকার সম্ভবনা বেশি থাকে আর জওহর টানেল এক্মাত্র যোগাযোগের রাস্তা।তাই যাওয়ার আগে অবশ্যই ভালো করে খোঁজ খবর নিয়ে যাবেন।কাশ্মীরে মার্চ থেকে এপ্রিলে প্রচুর বৃষ্টি হয় ফলে ভূমিধস হয় তাই তখনও এই রাস্তা বন্ধ করে দেয়।
খরচ কি বেশি
সোহাগ, শ্যামলী গ্রিনলাইন এসি বাসে ঢাকা থেকে কলকাতা যেতে খরচ হবে ১৮০০ থেকে ২ হাজার টাকা।তবে পনি যদি খরচ আরও কমাতে চান তাহলে আপনি বাসে করে সীমান্ত পর্যন্ত যেতে পারেন এরপর সীমান্ত পেরিয়ে ভারতের কলকাতার লোকাল বাসে বা ট্রেনে করে যেতে পারেন আপনার গন্তব্যে।তার জন্য আপনাকে শুরুতে সাতক্ষীরার বাসে করে নাভারন মোড় পর্যন্ত যেতে হবে, নাভারন থেকে অটোরিকশাতে করে বেনাপোলে পৌঁছাতে হবে যার খরচ হবে মাত্র ২০ টাকা।এরপর দুই দেশের ইমিগ্রেশন শেষে অটোরিকশাতে করে বনগাঁও রেলস্টেশনে আপনাকে পৌঁছাতে হবে এবং খরচ হবে ২০ রুপি এবং সেখান থেকে কলকাতার ট্রেন থাকে প্রতি ঘন্টাতেই যার খ্রচ হয় ২০ থেকে ৩০ রুপি।
গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
সীমান্ত পেরিয়ে আপনার হাতের টাকাকে রুপিতে বদলে নিন এর জন্য আগে থেকেই মূল্য জেনে নিন।সীমান্ত পেরোতে হবে আপনাকে পায়ে হেঁটে এবং বাংলাদেশ ইমিগ্রেশনে ৫০০ টাকা বিদেশ ভ্রমন ট্যাক্স দিতে হবে।জম্মুর ট্রেন সন্ধ্যার দিকে ছাড়ে যার নাম জম্মু-তাওবি এক্সপ্রেস।ভারতীয় রেলস্টেশনে বিদেশীদের জন্য কোটা থাকে।
গাইড নিবো কিভাবে
সাধারনত গাইড আপনি বাংলাদেশ থেকে ট্যুরিস্ট এজেন্সির মাধ্যমে গাইড নোট পারেন।তবে সবচেয়ে ভালো হয় কাশ্মীরি কোন গাইড নিলে।তারা আপনাকে কাশ্মীরের সঠিক তথ্য দিবে সাথে ভালো জায়গা ঘুরে দেখাতে পারবে।
কাশ্মীরে ঘুরার স্থান
কাশ্মীর ভালো ভাবে ঘুরতে হলে হাতে ৮ থেকে ১০ দিন সময় নিন।কারন আপনার পথে যেতেই ৪ বা ৫ দিন সময় লাগবে।তাই হাতে সময় বেশি দিন নিয়ে যাওয়া ভালো।সেখান কার প্রকৃতির সাথে মিশে যাওয়ার মানুষের জীবনাচারন দেখতে হলে সময় তো একটু বেশি লাগবেই।সাধারনত বিভিন্ন প্যাকেজের মাধ্যমে পর্যটকদের ঘুরানো হয় কাশ্মীরে।আপনি যদি শীতে যান তাহলে প্রস্তুতি ভালো ভাবে নেন কারণ খুব ঠান্ডা আর তুষার তো আছেই।
পেহেলগাম, গুল্মার্গ, সোনোমার্গ, শ্রীনগর এ জায়গা গুলো অবশ্যই ঘুরবেন।মোগল গার্ডেল,হজরতবাল মসজিদ সেখানে ঘুরার মত স্থান যা আপনার মনকে প্রশান্তি দিবে।এছাড়া আছে দুধপত্রী, কোকরনাগ, ডাকসুম, সিনথেনটপ যা চোখ জুরিয়ে দেয়।
কাশ্মীরে যাওয়ার আগে অবশ্যই ছোট করে একটা স্টাডি করে নিন কাশ্মীর সম্পর্কে।সেখান কার আবহাওয়া সম্পর্কে ধারনা নিন।ঘুরতে যাওয়ার আগে এই তথ্য গুলো আপনাকে সব সময় উপকৃত করবে।