মেক্সিকো সিটিতে একটি দ্বীপ রয়েছে। যা কিনা ‘পুতুলের দ্বীপ’ নামে পরিচিত। যেখানে ঘুরতে গেলে মৃত গাছ, ডালপাতা, ঝুলন্ত পুরানো এবং বিকৃত পুতুল দেখতে পাবেন। টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন অনুসারে, একটি অল্প বয়সী মেয়ের আত্মা নাকি এই দ্বীপে রয়েছে। মেয়েটিকে জোচিমিলকোর খালের গভীরে লুকানো একটি ছোট দ্বীপে ডুবিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এর পর থেকেই ছোট মেয়েটির আত্না এই দ্বীপে রয়ে গেছে। পুতুল দ্বীপের একমাত্র স্থায়ী বাসিন্দা ছিলেন ডন জুলিয়ান সান্তানা ব্যারেরা। স্ত্রী এবং পরিবার থাকা সত্ত্বেও তিনি এখানে বসবাস করতেন।
ডন জুলিয়ান দাবি করেন যে, তিনি এই দ্বীপে বসবাসের সময় একটি মেয়ের চিৎকার শুনতে পেয়েছিলেন। তার মতে ‘আমি আমার পুতুল চাই’ বলে মেয়েটি নাকি চিৎকার করতে থাকত। এর পরে, তিনি একটি পুতুল খুঁজে পান। পুতুলটিকে তিনি মেয়েটির আত্নাকে উপহার হিসেবে দিতে চেয়েছিলেন। এ জন্য, পুতুলটিকে তিনি একটি গাছে ঝুলিয়ে রেখেছিলেন। এর পর এক পর্যায়ে পরিস্থিতি আরও ভয়ংকর হয়ে ওঠে। প্রায় প্রতিদিনই দ্বীপের চারপাশে আরও পুতুল ঝুলতে শুরু করে। ডন জুলিয়ান এ সব পুতুল গাছে ঝুলিয়ে রাখতে শুরু করেছিলেন। তিনি বিশ্বাস করেছিলেন যে, এটি নিজেকে অশুভ আত্মা থেকে রক্ষা করবে। তিনি আরও বলেন, বেশিরভাগ পুতুলেরই শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ছিল না। কোনটির হাত-পা নেই, আবার কিছু পুতুলের মাথাও নেই!
ডন জুলিয়ান পুতুলগুলো পরিষ্কার বা ঠিক করার চেষ্টা করেননি। বরং সেগুলি যেমন আছে তেমনই রেখেছিলেন। কিন্তু আশ্চর্যের ব্যাপার হল, সময়ের সাথে সাথে এগুলো পচে যেত। এরপর একটি ভীতিকর পরিবেশ তৈরি করত।
ডন জুলিয়ান এই দ্বীপে প্রায় ৫০ বছর বসবাস করেছিলেন। তিনি ২০০১ সালে মারা যান। এই দ্বীপের পানিতেই তাকে ডুবে থাকতে দেখা গিয়েছিল। মৃত্যুর আগে তিনি সর্বদা বলেছিলেন যে, তিনি ছোট্ট মেয়েটিকে দেখেছেন। এর প্রতিক্রিয়ায়, পর্যটকরা শ্রদ্ধা জানাতে দ্বীপে ভিড় করতে শুরু করে। তারা তাদের নিজস্ব পুতুল নিয়ে আসে। আজও লোকেরা শ্রদ্ধা জানাতে পুতুল ঝুলিয়ে ডন জুলিয়ান এবং ছোট মেয়েটিকে সম্মান জানায়।
সূত্র- টাইমস অব ইন্ডিয়া/ডিসকোভারি ডট কম