রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:১২ অপরাহ্ন

ভারতের বৈচিত্র্যময় দ্বীপ

  • আপডেট সময় শনিবার, ২৫ মার্চ, ২০২৩

হরেক রকমের ভাষা আর বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতির দেশ ভারত। দিল্লিতে সম্রাট নাসিরউদ্দিন মুহাম্মদ হুমায়ূনের সমাধি, আগ্রার তাজমহল, জয়পুরের হাওয়া মহল থেকে বারনাসীর কাশী, উত্তর ভারতের হরিদ্বার ছাড়াও পশ্চিমবঙ্গের সাংস্কৃতিক শহর কলকাতা ও বন্দরনগরী মুম্বাইয়েও রয়েছে উল্লেখযোগ্য দর্শনীয় স্থান। মূল ভূমি ছাড়াও বেশ কয়েকটি মনোমুগ্ধকর দ্বীপ রয়েছে ভারতে। এসব দ্বীপ নিয়েই আজকের আয়োজন-

ব্যারেন দ্বীপ, আন্দামান

দর্শনার্থীদের কাছে ব্যারেন দ্বীপ অ্যাডভেঞ্চারের জন্য বেশ জনপ্রিয়। সাঁতারুদের জন্যও আদর্শ একটি জায়গা। এ দ্বীপে ডলফিন, কচ্ছপ, সামুদ্রিক সাপ ও রিফ মাছ রয়েছে। দ্বীপটি আন্দামান ও নিকোবরের অংশ এবং জাহাজ বা নৌকার মাধ্যমে ভ্রমণ করা যায়।
তবে ২০১৭ সালের ২৩ জানুয়ারি দ্বীপটিতে আগ্নেয়গিরি দেখা দেয়। এ কারণে বর্তমানে দ্বীপটিতে ভ্রমণের ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সরকার নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।

দিউ দ্বীপ, দমন ও দিউ

ভারতের পশ্চিম উপকূলে অবস্থিত দিউ দ্বীপটি ‘ছোট গোয়া’ হিসেবে জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এতে রয়েছে বিশাল সমুদ্রসৈকত। দ্বীপটির পূর্ব দিকে একটি শহর রয়েছে যেখানে রয়েছে পর্তুগিজ আমলের সুরম্য গির্জা ও সুরক্ষিত দুর্গ। ষোড়শ শতাব্দীতে নির্মিত দিউ দুর্গ থেকে দর্শনার্থীরা সমুদ্রসৈকতের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারেন।

দিভার দ্বীপ, গোয়া

মানদো নদীর তীরে অবস্থিত গোয়ার দিভার দ্বীপ ভারতের অন্যতম জনপ্রিয় স্থান। এখানকার ভবনগুলো পর্তুগিজ স্থাপত্যের নিদর্শন হিসেবে ইতিহাস প্রেমীদের কাছে জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এতে ষোড়শ শতাব্দীতে নির্মিত গির্জা ও মন্দির প্রণিধানযোগ্য। এর মধ্যে লেডি অব পিটি ক্যাথলিক গির্জা প্রসিদ্ধ।

কাভভায়ি,কেরালা

কেরালা প্রদেশের উত্তরে পায়ানুর শহরের কাছে কাভভায়ি দ্বীপ রয়েছে। প্রিস্টিন সমুদ্রসৈকতে সূর্যাস্তের সময় অনেক দর্শনার্থী ভ্রমণ করেন। নৌকাযোগে ঘুরে বেড়ানোর সুযোগ রয়েছে।

মাজুলি, আসাম

১৩৬ মাইল বেষ্টিত মাজুলি দ্বীপ ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে অবস্থিত। আসামের উত্তর-পূর্বে অবস্থিত ব্রহ্মপুত্র নদকে ভারতের সবচেয়ে বড় নদ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বন্যা ও নদী ভাঙনের কারণে মাজুলি দ্বীপের আয়তন কমে আসছে। এ দ্বীপের  মাজুলি সাইকেল ক্যাফে থেকে দর্শনার্থীরা সাইকেল ভাড়া করে ঘোরাঘুরি করেন। প্রকৃতি-প্রেমীরা ভেরেকি বিল ও চাকোলি বিলে অতিথি পাখি দেখতে যান। বিশেষ করে সাইবেরিয়ান পাখি এখানে অতিথি হিসেবে আসে। এসব পাখি দেখে দর্শনার্থীরা বিমোহিত হন। আশ্রম, শিক্ষাকেন্দ্র, মন্দিরসহ আরও অনেক দর্শনীয় স্থান রয়েছে। তবে জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দ্বীপটিতে ভ্রমণ না করাই ভালো।

ল্যাখশাদ্বীপ

ল্যাকেডিভ সমুদ্রের তীরে ল্যাখশাদ্বীপ অবস্থিত। ভারতের দক্ষিণাঞ্চলে ল্যাখশাদ্বীপ বেশ জনপ্রিয় স্থান। ১৮৮৫ সালে নির্মিত ব্রিটিশ দুর্গ সবচেয়ে প্রসিদ্ধ স্থান। পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানোর জন্য ভালো একটি জায়গাও বটে।

মুনরো দ্বীপ, কেরালা

ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশ কেরালার জনপ্রিয় স্থান মুনরো দ্বীপ। কোলম শহরের কাছে মনোমুগ্ধকর দ্বীপটি কালো পানির হ্রদ আশটামুদি ও কালাদা নদীর জন্য বিখ্যাত। দ্বীপটি স্থানীয় মালয়ালাম ভাষায় মুনড্রথুরুথু নামেও পরিচিত। বিভিন্ন দেশ থেকে পাখি ও প্রকৃতি প্রেমীরা এখানে ভ্রমণ করেন এবং স্থানীয় পাখি দেখে বিমোহিত হন। দ্বীপটিতে সাইকেলে করে ঘুরে বেড়ানোর ব্যবস্থা রয়েছে। আশটামুদি হ্রদে মাছ ধরারও ব্যবস্থা রয়েছে। কেরালা শহর থেকে রেলযোগে বা ট্যাক্সির মাধ্যমে কোলম শহরে ভ্রমণ করা যায়।

নেট্রানি দ্বীপ, কর্ণাটক

কর্ণাটকের দক্ষিণাঞ্চলে নেট্রানি দ্বীপ রয়েছে। দ্বীপটিতে প্যারোট ফিশ, ট্রিগ্যার ফিশ, বাটারফ্লাই ফিশ, সার্জেওন ফিশ রয়েছে। দর্শনার্থীদের মধ্যে দ্বীপটি বেশ জনপ্রিয়। বর্তমানে ভারতের নৌ-বাহিনী দ্বীপটি ব্যবহার করেন। এখানে মুরুদেশ্বর তীর্থও রয়েছে।

ভারতের দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থিত তামিলনাড়ুর পামবান দ্বীপ। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাছে রামনাথের জন্মস্থান হিসেবে প্রসিদ্ধ। দ্বীপটির সবচেয়ে আকর্ষণীয় স্থান রামনাথস্বামী মন্দির। অ্যাডভেঞ্চার প্রেমী মানুষের কাছে দ্বীপটি বেশি জনপ্রিয়। সব ধরনের বিনোদনের ব্যবস্থা রয়েছে এখানে।

পিকুয়েনো দ্বীপ, গোয়া

পিকুয়েনো দ্বীপের উল্লেখযোগ্য স্থান বাইনা সমুদ্রসৈকত। দক্ষিণ গোয়ার মর্মুগাও অঞ্চলে অবস্থিত এটি। দ্বীপটিতে স্নর্কলিং ও ডাইভিং করার ব্যবস্থা রয়েছে।

পুভার, কেরালা

প্রকৃতি প্রেমীরা কেরালার পুভারেও বেশ ভ্রমণ করেন। কেরালার থিরুভানানথাপুরাম শহরের কাছে অবস্থিত সবচেয়ে ছোট দ্বীপ এটি। দ্বীপটিতে নানা প্রজাতির পাখি দেখা যায়। থাকার ব্যবস্থা হিসেবে পুভার রিসোর্ট উল্লেখযোগ্য। সমুদ্রসৈকত, কালোপানির হ্রদ ও আরব সাগরের কাছাকাছি এ দ্বীপের অবস্থান।

সেন্ট ম্যারির দ্বীপ, কর্ণাটক

কর্ণাটকের দক্ষিণাঞ্চলে ম্যাপল দুর্গের কাছে সেন্ট ম্যারি দ্বীপ রয়েছে। পঞ্চদশ শতাব্দীর শেষভাগে পর্তুগিজ নাবিক ভাস্কো দা গামা দ্বীপটিতে এসে নামেন। পরবর্তীতে ভারতে আধিপত্য বিস্তার করেন। পর্তুগীজদের স্থাপত্যের প্রচুর নিদর্শন রয়েছে এখানে। জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যভাগ পর্যন্ত এখানে ভ্রমণ না করাই ভালো।

স্বরাজ দ্বীপ, আন্দামান

আন্দামানের সবচেয়ে বড় দ্বীপ স্বরাজ। রাজধানী হিসেবেও স্বীকৃত। সিল্কি সমুদ্রসৈকতে সব বয়সের দর্শনার্থীকেই ভ্রমণ করতে দেখা যায়। এর অদূরে এলিফ্যান্ট সমুদ্রসৈকত রয়েছে। স্বরাজ দ্বীপ বিশ্বে ব্যাপক জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থান।

সূত্র: সিএনএন

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com