শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:০৪ পূর্বাহ্ন

বৈচিত্র্যে সাজানো খাগড়াছড়ি

  • আপডেট সময় শুক্রবার, ৯ আগস্ট, ২০২৪

পাহাড় মানেই অকৃত্রিম, পাহাড় মানেই পরিশুদ্ধ বাতাস। পাহাড় মানেই সবুজের সঙ্গে আলিঙ্গন। ঝরনা ও প্রকৃতিঘেরা খাগড়াছড়ি। এ জেলার নামের সঙ্গে জড়িয়ে আছে আঁকাবাঁকা সড়ক, চেঙ্গী নদী, পাহাড়, ছড়া, ঝরনা, বৌদ্ধবিহারসহ নয়নাভিরাম প্রকৃতি। জেলার অন্যতম আকর্ষণ আলুটিলা পাহাড়ে দাঁড়ালে পুরো শহর দেখা যায়।

বছরের যেকোনো সময় খাগড়াছড়ি ঘুরতে যাওয়া গেলেও এখানে ভ্রমণের সেরা সময় জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারি মাস। তবে ছুটির সময় যেতে চাইলে কমপক্ষে এক সপ্তাহ আগে বাসের টিকিট বুকিং করে নিতে হবে। অনলাইনের মাধ্যমেই টিকিট বুকিং করা যায় এখন।

কীভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে খাগড়াছড়ি যাওয়া যায় শুধু সড়কপথে। দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে ঢাকা হয়ে চট্টগ্রাম গিয়ে তারপর খাগড়াছড়ি যেতে হয়। চট্টগ্রাম পর্যন্ত বাস, ট্রেন বা আকাশপথে যাওয়ার ব্যবস্থা আছে। ঢাকার কলাবাগান, কমলাপুর, মতিঝিল, আরামবাগ, টিটিপাড়াসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে খাগড়াছড়ির বাস ছাড়ে সকাল ও রাতে। ঢাকা থেকে আসার সময় টিকিট বুকিং দিয়ে এলে ফিরতি টিকিট পেতে সহজ হয়।

কোথায় ঘুরবেন
জেলার অন্যতম পর্যটন গন্তব্য আলুটিলা পর্যটনকেন্দ্র। এখানে একটি প্রাকৃতিক গুহা আছে। এ ছাড়া আছে নতুন নির্মিত ঝুলন্ত ব্রিজ, নন্দনকানন পার্ক, কুঞ্জছায়া ভিউ পয়েন্ট, স্বর্ণ তোরণ, অ্যাম্ফিথিয়েটার। অবশ্যই হাতে মশাল বা ফোন লাইট নিয়ে সাবধানে গুহায় প্রবেশ করতে হবে। এখানে প্রবেশের জন্য নিতে হবে জনপ্রতি ৩০ টাকার টিকিট।

বর্ষায় পূর্ণরূপে ফেরে খাগড়াছড়ির ঝরনাগুলো। জেলায় তৈইবাকলাই বা রিসাং ঝরনা, তৈদুছড়া, তৈছামাসহ ছোট-বড় আটটি ঝরনা রয়েছে। রিসাং ঝরনা শহর থেকে বারো কিলোমিটার দূরে মাটিরাঙ্গা উপজেলায় অবস্থিত। শরীরে শিহরণ জাগানো এ ঝরনায় হাঁটার সময় লাঠি সঙ্গে রাখতে হবে। পরতে হবে পিছলে না যায়, এমন স্যান্ডেল বা জুতা। ফেরার পথে পাহাড়ি গ্রামে চোখে পড়বে স্থানীয়দের জীবনযাপন। ঘুরে দেখতে পারেন, ভালো লাগবে।

এ ছাড়া দেখা যাবে জেলা পরিষদ হর্টিকালচার পার্ক, জেলা প্রশাসকের হাতি ফুলকলি সমাধি, হেরিটেজ পার্ক, হাতিমাথা স্বর্গের সিঁড়ি, নিউজিল্যান্ড রোড ও পাহাড়ি কৃষি গবেষণা কেন্দ্র।

খাগড়াছড়ি শহর থেকে বাইশ কিলোমিটার দূরে মহালছড়ি উপজেলার মাইসছড়ি ইউনিয়নের নুনছড়ি এলাকায় পাহাড়ের চূড়ায় রয়েছে প্রাকৃতিক পুকুর মাতাই পুখিরি। মানিকছড়ি মং রাজবাড়ি, পানছড়ি উপজেলার শান্তিপুর অরণ্য কুটির এবং মায়াবিনী লেক। এ ছাড়া এখানে পাহাড়িদের ঐতিহ্যবাহী জুমচাষ দেখা যায়।

কোথায় থাকবেন
এখানে থাকার জন্য শহরে রয়েছে বিভিন্ন মানের হোটেল। হোটেল অনুসারে ভাড়া শুরু হয় ৮০০ টাকা থেকে। এখানে অভিজাত হোটেলের মধ্যে রয়েছে হোটেল গাইরিং, পর্যটন মোটেল, হোটেল ইন প্যারাডাইস, অরণ্য বিলাস ইত্যাদি।

যাতায়াত ব্যবস্থা
খাগড়াছড়ির এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যাওয়ার জন্য পাওয়া যাবে চাঁদের গাড়ি, সিএনজি, মাহিন্দ্রা ও মোটরসাইকেল। এ ছাড়া শহরের কাছাকাছি হলে ব্যাটারিচালিত ইজিবাইকও ভাড়া করতে পারেন। এলাকা অনুসারে একজনের ভাড়া ১০ থেকে ২০ টাকা। আলুটিলা, রিসাং ঝরনা ও জেলা পরিষদ পার্ক পিকআপ ভাড়া ২ হাজার টাকা। তবে সারা দিন ঘুরলে ৪ হাজার টাকা।

কেনাকাটা
জেলা শহরে বেশ কয়েকটি বার্মিজ মার্কেট রয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে জুম লাইন পয়েন্ট, আর্য স্কয়ার বর্মিজ মার্কেট, জেলা পরিষদ পার্ক বার্মিজ মার্কেট ও টাউন হলসংলগ্ন বার্মিজ মার্কেট। এসব দোকানে কেনা যাবে ত্রিপুরা নারীদের তৈরি পোশাক, হস্তশিল্পজাত পণ্য, ব্যাগ, চকলেট, আচার, মাটির চন্দন, বিছানার চাদর, পাহাড়ের ফল, জুমের সাদা, কালো বিন্নি চালসহ বিভিন্ন বার্মিজ পণ্য। দরদাম করে কিনতে হবে।

কোথায় খাবেন, কী খাবেন
এখানে ঘুরতে গিয়ে পাহাড়ি খাবারের স্বাদ নিতে ভুলবেন না। সিস্টেম, বাঁশঝাড়, হেরিটেজ ডাইন, ব্যাম্বু রেস্টুরেন্ট ছাড়াও এখানে স্থানীয় মানুষের ঘরোয়া রেস্টুরেন্ট রয়েছে। সেগুলোতে খাওয়া যাবে ব্যাম্বু চিকেন, বাঁশের কোড়ল, টকপাতার ঝোল, আমিলাগুলা, হলুদ পাতা ও নানান ভর্তা, ছড়ার কাঁকড়া, তেলবিহীন মাছ থেকে শুরু করে অনেক পদের সবজি ও ভাত।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com