রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২:২৬ পূর্বাহ্ন

বিলেতে পড়তে গিয়ে নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে স্পন্সরড ভিসাসহ চাকরি

  • আপডেট সময় সোমবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

যুক্তরাজ্যের কিংস্টন ইউনিভার্সিটিতে স্নাতকোত্তর করতে আসা বাংলাদেশি শিক্ষার্থী সাজ্জাদ নিজ বিশ্ববিদ্যালয়েই ওয়ার্ক ভিসা বা স্পনসরশিপ ভিসাসহ চাকরি পাওয়ার বিরল সৌভাগ্য অর্জন করেছেন। স্নাতকোত্তর পড়াশোনা শেষ করতেই তিনি নিজের বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘ক্যাশ অ্যান্ড ভিসা কমপ্লায়েন্স অ্যাসিস্ট্যান্ট’ হিসেবে কাজের সুযোগ পান। যেখানে তিনি একসময় স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে পড়তে এসেছিলেন, সেখানেই এখন আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের ভিসা পরামর্শক হিসেবে কাজ করছেন।

সাজ্জাদের আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কাজ করার দীর্ঘ অভিজ্ঞতা রয়েছে। কানাডা, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়াসহ বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি এবং ভিসা প্রসেসিংয়ের কাজে যুক্ত থাকার অভিজ্ঞতা তাকে এ সাফল্যের পথে নিয়ে এসেছে। খুলনার একটি স্টুডেন্ট ভিসা প্রসেসিং কোম্পানিতে কাজ করার মধ্য দিয়ে তার এ যাত্রা শুরু হয়।

২০২২ সালের মার্চে গ্র্যাজুয়েশন শেষ করে পোস্ট-স্টাডি ওয়ার্ক ভিসায় পরিবর্তন করার পর সাজ্জাদ বিভিন্ন জায়গায় চাকরির আবেদন শুরু করেন। নিজের বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে পছন্দের একটি কাজের শূন্যপদ দেখে তৎক্ষণাৎ আবেদন করেন। খুব দ্রুত ইন্টারভিউ কল পান এবং ইন্টারভিউর পরদিনই কাজে যোগদানের অফার পেয়ে যান।

সাজ্জাদের লক্ষ্য ছিল যুক্তরাজ্যের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি করা, যেখানে তিনি আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের নিয়ে কাজ করতে পারবেন। সেই লক্ষ্যেই তিনি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে সিভি এবং কাভার লেটার পাঠিয়ে আবেদন করতে থাকেন। তবে শেষ পর্যন্ত নিজের বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজ করার সুযোগ পান, যা ছিল তার জন্য সৌভাগ্যের বিষয়।

সাজ্জাদ মনে করেন, যুক্তরাজ্যে পোস্ট-স্টাডি ওয়ার্ক ভিসার সুবিধা শিক্ষার্থীদের ভালো চাকরির সুযোগ এনে দেয়। ভালো একটি কোম্পানিতে কাজের সুযোগ পেলে ভবিষ্যতে সেখান থেকে পাঁচ বছরের স্কিল্ড ওয়ার্কার ভিসাও পাওয়া যায়, যা যুক্তরাজ্যে সেটেলমেন্ট রুট হিসেবে পরিচিত। তার বর্তমান ইউনিভার্সিটি তাকে পোস্ট-স্টাডি ওয়ার্ক ভিসা শেষ হওয়ার আগেই পাঁচ বছরের জন্য ওয়ার্ক ভিসা প্রদান করেছে।

তিনি জানান, তার পরিচিত বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি শিক্ষার্থী যুক্তরাজ্যের ব্যাংক, ফাইন্যান্সিয়াল কোম্পানি এবং কর্পোরেট সেক্টরে ওয়ার্ক ভিসাসহ কাজ করছেন।

সাজ্জাদ বলেন, বিলেতে আসার পর পড়াশোনা সুন্দরভাবে শেষ করাটা অত্যন্ত জরুরি, কারণ এর মাধ্যমে ভবিষ্যতে ভালো সুযোগ আসে। করোনা মহামারিতে লকডাউনের মধ্যেই তিনি নানা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়ে পড়াশোনা শেষ করেন। তার মতে, বিলেতে সফল হতে হলে পরিশ্রমের কোনো বিকল্প নেই। শর্টকাট পদ্ধতি অবলম্বন না করে নিজের পরিশ্রমে অর্জিত ক্যারিয়ারই মানসিক শান্তি ও অনুপ্রেরণা দেয়।

বর্তমানে নিজের বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজের মাধ্যমে সাজ্জাদ বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের সাহায্য করতে সর্বদা সচেষ্ট থাকেন। তিনি তাদের ভিসা সংক্রান্ত বিভিন্ন পরামর্শ দেন এবং বিলেতে পড়তে আসা বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা করার মাধ্যমে গর্ব অনুভব করেন।

সাজ্জাদের মতে, বিলেতে পড়াশোনা শেষে সঠিকভাবে সিভি ও কাভার লেটার প্রস্তুত করলে ভালো ক্যারিয়ার গড়া সম্ভব। তিনি বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, এলোমেলো চিন্তা না করে ক্যারিয়ার লক্ষ্যে অটল থাকতে হবে। বিলেতে প্রচুর কাজের সুযোগ রয়েছে এবং পরিশ্রম করলে সাফল্য অর্জন করা সম্ভব।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com